বাংলাহান্ট, পশ্চিম মেদিনীপুর:- বাজার মন্দা হওয়ায় শালবনীতে আপাতত স্টিলের কারখানা তৈরির পথে হাঁটছে না জিন্দাল গোষ্ঠী। বরং, কিছু কর্মসংস্থানের লক্ষ্য নিয়ে আগামী দিনে তারা প্রস্তাবিত জমিতেই রঙের কারখানার তৈরির উদ্যোগ নিতে চলেছে। তবে, নতুন কারখানায় কত টাকা তারা বিনিয়োগ করবে, কিংবা এই কারখানা তৈরি হলে কতজনের চাকরি হবে, সেবিষয়ে সংস্থার কর্মকর্তারা এখনই কিছু বলতে চাইছেন না।
এমনিতেই প্রস্তাবিত জমিতে কয়েক বছর ধরে সিমেন্ট কারখানা রয়েছে। সেখানে নিয়মিত উৎপাদন হচ্ছে। সেখানে উৎপাদন বৃদ্ধিরও পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি প্রস্তাবিত জমি তারা যে ফেলে রাখতে চাইছে না, তার বার্তা দিতেই তারা এবার রঙের কারখানা তৈরির দিকে এগচ্ছে।
সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৭ সালে শালবনীর প্রায় সাড়ে চার হাজার একর জমি নিয়ে জিন্দাল গোষ্ঠী বিনিয়োগ করার কথা ঘোষণা করেছিল। সেই সময় বলা হয়েছিল, শালবনীর ওই জমিতে মেগা স্টিলের কারখানা তৈরি করা হবে। আর এই কারখানার জন্য তারা প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। তৎকালীন বাম সরকার এই শিল্প সংস্থার বিনিয়োগের উদ্যোগকে নিজেদের কৃতিত্ব হিসেবে ফলাও করে প্রচার করেছিল। সংস্থার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কনভয়ের পাশে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ ঘটেছিল। যা নিয়ে গোটা রাজ্য রাজনীতি তোলাপাড় হয়ে গিয়েছিল। ওই ঘটনার পর শালবনীর অধিগৃহীত ওই জমিতে স্টিল কারখানার প্রজেক্ট কিছুদিনের জন্য ঠান্ডাঘরে চলে যায়। পরবর্তীকালে সংস্থার পক্ষ থেকে স্টিল কারখানা তৈরির বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়। স্টিলের উৎপাদনের জন্য আকরিক লোহার প্রয়োজন।
সংস্থার কর্মকর্তারা আশা করেছিলেন, ওড়িশা থেকে আকরিক লোহার চাহিদামতো জোগান পাওয়া যাবে। কিন্তু, তা নিয়ে টালবাহনা শুরু হয়। ফলে, সংস্থা স্টিল কারখানা তৈরির উদ্যোগ থেকে পিছিয়ে যায়। বেশ কয়েক বছর পর ২০১৩ সালে সংস্থার পক্ষ থেকে সেখানে সিমেন্ট কারখানা তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ২০১৭ সালে কারখানাটি সম্পূর্ণ উৎপাদন শুরু করে।
কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, সিমেন্ট কারখানায় হাজার খানেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। সেখানে বছরে ২.৪ মিলিয়ন টন সিমেন্ট উৎপাদন হয়। কর্মকর্তাদের দাবি, বাজারে তাদের উৎপাদিত সিমেন্টের ভালো চাহিদা রয়েছে। ফলে, আগামী দিনে তারা সিমেন্ট উৎপাদন বাড়িয়ে দ্বিগুণ করার পথে হাঁটছে।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী দিনে এই কারখানা থেকে তারা বছরে ৫ মিলিয়ন টন সিমেন্ট উৎপাদন করবে। ইতিমধ্যেই উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। উৎপাদন দ্বিগুণ করা হলে তাতেও কর্মসংস্থান হবে বলে সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।