বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যে অস্বাভাবিক হারে ভোটার বৃদ্ধি অর্থাৎ অবৈধ ভোটারদের ভোটার তালিকা থেকে সরাতে ২৬-এর নির্বাচনের আগে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে এসআইআর প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে চলছে চরম দ্বন্দ্ব। এর মধ্যে আবার বুধবার রাজ্য বিজেপি শমীক ভট্টাচার্য (Samik Bhattacharya) এক বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। বর্তমানে এই নিয়ে সরগরম রাজ্যের রাজনীতি।
রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে কি অভিযোগ করেছেন শমীক (Samik Bhattacharya)?
রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য (Samik Bhattacharya) পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস পরিকল্পিতভাবে বিভাজনের রাজনীতি চালাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর দাবি, গত দুই দশকে রাজ্যের বহু নির্বাচনী কেন্দ্রে ভোটার বৃদ্ধির হার অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। উদাহরণ হিসেবে শমীক ভট্টাচার্য (Samik Bhattacharya) তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারের কথা তুললেন। কেন্দ্রীয় তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, “২০০২ সালে এই কেন্দ্রে ভোটার ছিল ১০ লক্ষ ৪৪ হাজার। আজ তা প্রায় ১৯ লক্ষে পৌঁছেছে। বৃদ্ধির হার প্রায় ৮ শতাংশ।”
বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য (Samik Bhattacharya) আরও দাবি জানিয়ে বলেন, “২০০২ সালে ডায়মন্ড হারবারে হিন্দু ভোটার ছিলেন প্রায় ৭ লক্ষ। এখন প্রায় ১১ লক্ষ। অন্যদিকে মুসলিম ভোটার ৩ লক্ষ ৪০ হাজার থেকে বেড়ে ৮ লক্ষে পৌঁছেছে।” শমীকের বক্তব্য, ডায়মন্ড হারবার ও জয়নগর দুই কেন্দ্রেই সংখ্যালঘু ভোটার বৃদ্ধির হার ১২৮ শতাংশ, যা সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক। তাঁর অভিযোগ, এর পেছনে স্পষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে এবং তৃণমূল কংগ্রেস পরিকল্পিতভাবে জনসংখ্যার ভারসাম্য বদলে দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, “আমি বিভাজনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস ঠিক সেটাই করছে। কলকাতা ও আশপাশের বিধানসভাগুলিতে জনসংখ্যার গঠনে পরিবর্তন ঘটছে। সীমান্তবর্তী প্রায় সব বিধানসভাতেই একই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।”
‘ডিটেক্ট অ্যান্ড ডিলিট’-এর বার্তা শমীকের
এই প্রসঙ্গে রাজ্যের চলতি এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়া নিয়েও সরাসরি বার্তা দিয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য (Samik Bhattacharya)। তিনি বলেন, “আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। সেটা হল ‘ডিটেক্ট অ্যান্ড ডিলিট’ (Detect and Delete)। অর্থাৎ যারা দেশভাগের সময় এই দেশে থেকে গেছেন, তাঁদের সঙ্গে বিজেপির কোনও বিরোধ নেই। কিন্তু যারা ধর্মান্ধ রাজনীতি টেনে আনছে, তারাই সভ্যতার ক্যানসার।” শমীক অভিযোগের সুরে বলেন, রাজ্যের সরকার পরিকল্পিতভাবে ধর্মীয় মেরুকরণ ঘটাচ্ছে। শমীকের দাবি “মানুষ এখন সিএএ (CAA) চাইছে, এসআইআর (SIR) চাইছে। কংগ্রেস যা করতে পারেনি, বিজেপি সেটাই করেছে।”

আরও পড়ুনঃ BLO-দের ‘রাজনৈতিক রং’ নিয়ে বিস্ফোরক শুভেন্দু, কমিশনের হস্তক্ষেপ দাবি বিরোধী দলনেতার
রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আরও মন্তব্য করেন শমীক ভট্টাচার্য (Samik Bhattacharya)। তিনি বলেন, “দেশের বাকি বারোটি রাজ্যে এসআইআর হচ্ছে, কিন্তু কোথাও উত্তেজনা নেই। শুধু বাংলায় হচ্ছে। কারণ এখানে তৃণমূল ভয়ের রাজনীতি চালাচ্ছে।” শমীকের এই মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তবে শাসকদলের পক্ষ থেকে বিজেপি সভাপতি মন্তব্যের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বলে খবর সূত্রের।













