বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নতুন বছরের শুরু থেকেই সন্দেশখালি কাণ্ড (Sandeshkhali Incident) নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। ইডির ওপর হামলা থেকে শুরু করে মহিলাদের রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ, সবকিছুই দেখেছে রাজ্যবাসী। বৃহস্পতিবার যেমন সন্দেশখালি নিয়ে জনস্বার্থ মামলার (Sandeshkhali Case) শুনানি ছিল কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court)। এই ঘটনায় দায়ের ৫টি মামলা একত্রে শোনেন প্রধান বিচারপতি টি শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ।
এদিন ইডির আইনজীবী আবেদন করেন, শেখ শাহজাহানের (Sheikh Shahjahan) বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সকল FIR ও চার্জশিটের কপি দেওয়া হোক। আদালত তার প্রেক্ষিতে জানান, রাজ্যের তরফ থেকে জানানো হয়েছে ৪০টিরও বেশি FIR দায়ের হয়েছে। তবে এখনই সেগুলি ইডির হাতে তুলে দেওয়া যাবে না। আগামী শুনানির দিন তা আদালতে জমা করতে হবে। আদালত খতিয়ে দেখার পর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
আর একজন জনস্বার্থ মামলাকারীর আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল জানান, বহু মহিলা লেখাপড়া জানেন না। তাঁরা কীভাবে সাক্ষী দেবেন? তাঁদের থেকেও অভিযোগ এসেছে, তাঁদের মধ্যে অনেককে হাই কোর্টে নিয়ে এসেছেন বলেও জানান তিনি। প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘…অনেক অভিযোগ এসেছে। তবে রাজ্যের দাবি কিছু হয়নি। হলফনামায় সেই সকল তথ্য আমি তুলে ধরেছি। নিরাপত্তা প্রদান না করলে তাঁদের হুমকি দেওয়া হবে’।
আরও পড়ুনঃ ভোটের মুখে ফের অ্যাকশনে ED! রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে এবার বড় পদক্ষেপ কেন্দ্রীয় এজেন্সির
মামলার সাক্ষীদের নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি তোলেন আরও এক মামলাকারীর আইনজীবী। তিনি দাবি করেন, নিরাপত্তা না থাকায় কোনও মহিলা আদালতে সাক্ষী দিতে এগিয়ে আসেননি। মামলাকারীদের কথা শোনার পর অন্যতম অভিযুক্ত শাহজাহানের আইনজীবীর উদ্দেশে কড়া সুরে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘আপনি একজন অভিযুক্তের হয়ে সওয়াল করছেন। আগে নিজের চারদিকের ছায়া থেকে মুক্ত হন। তারপর অন্য কারোর অভিযোগ নিয়ে কথা বলবেন। হলফনামার একটা অভিযোগও সত্যি হলে সেটা লজ্জার’।
এখানেই না থেমে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সরকার বলেন এখানকার মহিলারা সুরক্ষিত। হলফনামার একটা অভিযোগ যদি সত্যি হয় তাহলে সেই কথা মিথ্যে প্রমাণিত হয়ে যাবে’। এদিকে রাজ্যের হয়ে সওয়াল করে অ্যাডভোকেট জেনারেল সিবিআইকে নিশানা করেন। এজি বলেন, ‘সন্দেশখালিতে কিছু হয়নি আমি এটা বলছি না। কিন্তু কী হয়েছে সেটাই দেখার বিষয়। প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল এত কথা বলছেন, উনি কি সাধারণ মানুষ হিসেবে বলছেন নাকি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি হিসেবে?’
এখানেই না থেমে এজি আরও বলেন, ‘শাহজাহান যদি এতটাই হিংস্র একজন মানুষ হন, তাগলে ইডি তল্লাশিতে গেলে এত মানুষ কেন বেরিয়ে আসল? এটার জন্য হয়তো বাইরে আমায় সমালোচনার মুখে পড়তে হবে। তবে এটা মানতে হবে সিবিআই তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে’।