বাংলা হান্ট ডেস্ক : বিগত প্রায় ৫০ দিনেরও বেশি সময় ধরে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে সন্দেশখালি। শাসক-বিরোধী তরজায় মুখর রাজ্য রাজনীতি। আর এবার সন্দেশখালিকে দ্বিতীয় নন্দীগ্রামের সাথে তুলনা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পূর্বে এই একই মন্তব্য শোনা গেছিল দিলীপ ঘোষের মুখেও। যদিও শাসকদল এইসব তত্ব মানতে নারাজ। গোটা রাজ্য এই ঘটনার নিন্দায় সরব হলেও শাসক শিবির বলছে, ভোটের মুখে তৃণমূলকে কলুষিত করার জন্য বিজেপিই নাকি ইন্ধন জোগাচ্ছে।
শেখ শাহজাহান ফেরার হতেই মাঠে নেমেছে সন্দেশখালির মহিলারা। এলাকার মানুষদের জমি, ভেড়ি দখলের পাশাপাশি হিন্দু মহিলাদের উপর হওয়া অত্যাচারকে ঘিরে অশান্ত সন্দেশখালি। বিগত ৫১ দিন ধরে বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে সন্দেশখালি। প্রশ্ন উঠছে পুলিশের ভূমিকার উপরেও। সাঁড়াশি চাপের মুখে পড়ে ডিজি রাজীব কুমারও স্বীকার করেছেন যে, ‘ভুল হয়েছে’।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানকে ইচ্ছা করেই গ্রেফতার করছেনা রাজ্য পুলিশ। অথচ গ্রেফতার করা হচ্ছে গ্রামের অত্যাচারিত মানুষদের। সবে মিলিয়ে নন্দীগ্রামের স্মৃতিকেই ফের একবার চাঙ্গা করছে। আর শনিবার দিল্লি যাওয়ার পথে সেই কথাটাকেই আরেকবার মনে করিয়ে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
এইদিন তিনি বলেন, ‘সন্দেশখালিতে বশ্যতার বিরোধী সংগ্রাম চলছে। নন্দীগ্রাম শুরু হয়েছিল জমি অধিগ্রহণ দিয়ে। এটা শুরু হয়েছে মেয়েদের উপর অত্যাচার দিয়ে। তার সঙ্গে জমি অধিগ্রহণ তো রয়েছেই। তবে যেটা নন্দীগ্রামে ছিল না সেটা এখানে রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারে আসার পরে ২০১৩ সাল থেকে কেউ ভোট দিতে পারেননি।’ যদিও তিনিই প্রথম নন, এর আগে দিলীপ ঘোষের গলাতেও শোনা গেছিল একই সুর।
আরও পড়ুন : শাহজাহানকে হিন্দু বানানোর প্রচেষ্টা? ‘ফেরার’ নেতার হলফনামা পেশ করে চাঞ্চল্যকর দাবি ইডির
দিনকয়েক আগেই তিনি বলেন, “নন্দীগ্রাম একটা গেম চেঞ্জার ছিল। এটা দেখেও বহু মানুষ প্রতিবাদের ভাষা খুঁজে পাবেন। নন্দীগ্রামের মতো পরিস্থিতি অনেক জায়গায় তৈরি হবে। সাধারণ মানুষ নিজের হাতে ঝাণ্ডা তুলে প্রতিবাদের ভাষা খুঁজে নিচ্ছেন। তারা এখন কোনও রাজনৈতিক দলকেই খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না। মানুষকে নিজের রাস্তা নিজেই খুঁজে নিতে হচ্ছে।”
আরও পড়ুন : এক সপ্তাহে তিন দফায় বঙ্গ সফরে নরেন্দ্র মোদী, কোথায় কোথায় সভা? জানাল বিজেপি
তৃণমূল যদিও এই দাবি স্বীকার করতে নারাজ। শাসক শিবিরের দাবি, এই গোটা বিষয়টাতে ইন্ধন জোগাচ্ছে গেরুয়া শিবির। ভোটের মুখে তৃণমূল কংগ্রেসকে কোনঠাষা করতে শুভেন্দুরাই এই ষড়যন্ত্র করছে বলে দাবি করেছে শাসকদলের নেতা মন্ত্রীরা। যদিও রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলের মতে, দুই ঘটনার প্রেক্ষাপট একটু হলেও ভিন্ন। নন্দীগ্রাম ছিল শাসকদল বনাম গ্রামবাসীর লড়াই এবং সন্দেশখালি হল শাসকদলের স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় মানুষের লড়াই।