বাংলাহান্ট ডেস্ক : শুশুনিয়া পাহাড়ের কোলে অবস্থিত ভরতপুর গ্রামে অবস্থান করেন পটুয়া শিল্পীরা। এই পটুয়া শিল্পীরা আজও বাঁচিয়ে রেখেছেন বাঁকুড়ার (Bankura) প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী লোকশিল্পকে। ধীরে ধীরে এই শিল্পীরা অভাব, দারিদ্রতার জন্য হারাতে বসেছিলেন নিজেদের ঐতিহ্যের কাজকে। এমন সময় তাদের পাশে এসে দাঁড়ালেন শুশুনিয়ারই ভূমিকন্যা সংহিতা মিত্র।
জানা গিয়েছে, ১৯৮৩ সালের ১২ই জানুয়ারি শুশুনিয়ায় সংহিতার জন্ম। তাঁর বাবা কৃষ্ণদুলাল চট্টোপাধ্যায় একাধারে শিক্ষক, লোককবি ও লোকসাহিত্যিক। সংহিতা বাঁকুড়া সম্মিলনী কলেজ থেকে ২০০৩ সালে বাণিজ্য বিভাগে স্নাতক হন। যাদবপুর এন.আই.আই.টি থেকে ডিজিটাল ভিজুয়াল গ্রাফিকস ডিজাইন ও ওয়েব ডেভেলপমেন্ট নিয়ে স্কলারশিপ-সহ পড়াশোনা করেন তিনি।
এরপর কলকাতায় মাল্টিন্যাশানাল সফটওয়্যার সংস্থায় সিনিয়ার ওয়েব এন্ড গ্রাফিক্স ডিজাইনার ও টিম লিডার হিসাবে কাজ করেন ২০০৫ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত। বর্তমানে সংহিতা বাঁকুড়ার স্থায়ী বাসিন্দা। সেখানে তিনি কাজ করছেন লোকশিল্প, হস্তশিল্প ও লোকশিল্পীদের নিয়ে। তিনি লড়াই করছেন লুপ্তপ্রায় পট শিল্পকে নতুন ভাবে বাঁচিয়ে তোলার জন্য। সংহিতা লড়াই করছেন দুঃস্থ পট শিল্পীদের স্বার্থে।
নতুন নতুন পট শিল্পর কাজ সামনে আনা, শিশু ও মহিলাদের এই কাজের সাথে সংযুক্ত করা, পটুয়াদের বিভিন্ন মেলায় স্টল করার মতো একাধিক উদ্যোগ তিনি নিয়েছেন। এছাড়াও সংহিতা দুবার পট শিল্পীদের নিয়ে গিয়েছেন গুরুসদয় মিউজিয়াম এবং বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্য়ালয়ের ওয়ার্কশপে। এই কাজ মোটেও সহজ ছিল না সংহিতার জন্য। অনেক বাধা অতিক্রম করে তিনি আজ এই জায়গায় এসেছেন।
সংহিতার হাত ধরে যেন এক নতুন দিগন্ত খুলে গিয়েছে গ্রামের আটপৌরে মেয়ে বউদের। নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন তারা। ঘরের পাশাপাশি রাজ্যে তথা দেশের নানান প্রান্তে তাদের এই শিল্প কর্মের (Art) ছবি ছড়িয়ে যাচ্ছে। তার প্রচেষ্টায় পুরুষদের পাশাপাশি আজ মহিলারাও যুক্ত হয়েছেন পটশিল্পে। সময় ও পরিশ্রমের সাথে এসেছে সাফল্য। তবে আরো অনেক দূর যেতে হবে বলে মনে করেন সংহিতা।