বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলায় নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় সদ্য নাম জুড়েছে হুগলী তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুবনেতা শান্তনু বন্দোপাধ্যায়ের (Santanu Banerjee)। টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগে ইডির হাতে গ্রেফতার হন তিনি। তারপর থেকেই নেতার একের পর এক বিপুল পরিমান সম্পত্তির হদিশ তদন্তকারীদের হাতে। চলছে তদন্ত। এরই মাঝে এবার শান্তনুর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে সরব বলাগড়ের এক বাসিন্দা।
নিয়োগ কেলেঙ্কারির অন্যতম অভিযুক্ত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে জমি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ সাগর বন্দ্যোপাধ্যায় নামে সেই বাসিন্দার। সাগরবাবুর অভিযোগ, ১৯ লক্ষ টাকায় জমি বিক্রির চুক্তি হওয়া সত্ত্বেও মাত্র ১০ লক্ষ টাকায় জমিটি দিতে বাধ্য হন তিনি। শান্তনুকে গ্রেফতারের পর থেকেই দিন দিন তার নিত্যনতুন সম্পত্তির খোঁজ পাচ্ছে ইডি। যা দেখে হতবাক সকলে। তার দুর্নীততে জড়িত সম্পত্তির কিনারা করতে শনিবার সকালে ব্যান্ডেলে একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি (ED)।
সূত্রের খবর, এদিন সকালে ব্যান্ডেলের বালিমোড়ের কাছে একটি বাড়ি সহ বলাগড় এবং ব্যান্ডেল চার্চের কাছে কিছু জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। শান্তনুর অন্যান্য সম্পত্তির সঙ্গে বলাগড়ের রিসর্ট এবং গেস্ট হাউসেও তল্লাশি চালান ইডি আধিকারিকেরা। বলাগড়ের ওই গেস্ট হাউসের পাশেই থাকেন সাগরবাবু। তিনি জানান, প্রথমে ওই গেস্ট হাউস শান্তনুর ছিল না। প্রদীপ দে নামক এক জনৈক ব্যক্তি সাগরের থেকে জমি কিনে গেস্ট হাউসটি তৈরি করে। পরবর্তীতে প্রদীপের কাছ থেকে জমি-সহ গেস্ট হাউসটি কেনেন প্রাক্তন তৃণমূল নেতা শান্তনু।
এরপরই শান্তনু গেস্ট হাউস লাগোয়া জমি পেতে মরিয়া হয়েছে ওঠে। এরপরেই সেখানের আড়াই বিঘা জমি বিক্রি করার জন্য শান্তনু সাগরবাবুকে ক্রমাগত হুমকি দেন বলে অভিযোগ। প্রাক্তন তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “শান্তনুর সাঙ্গপাঙ্গরা আমায় গেস্ট হাউসের ভিতর গিয়ে মাত্র ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে সই করতে বলল। তারা মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে বলে, সই না করলে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেব। কোনও বাবা টের পাবে না।”
সাগরের সংযোজন, ‘‘২০ লক্ষ টাকার চুক্তিতে এই জায়গা অন্য আর এক জনকে বিক্রি করব ভেবেছিলাম। সেই ক্রেতা অগ্রিম ৫ লক্ষ টাকাও দিয়েছিল। কিন্তু শান্তনু বলল, ‘জমি আমাকেই দিতে হবে। বাধ্য হয়ে আগের চুক্তি ভেঙে শান্তনুকেই জমি দিলাম। প্রাণ টুকুর ভয়ে পুলিশকেউ কিছু জানাইনি।”
এরপর আক্ষেপ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “কার কাছে অভিযোগ জানাব, কাকে বলব? ওদের হাতেই সব কিছু। যদি মেরে ফেলে? তাই কাউকে কিছু বলতে পারিনি।” শেষে প্রশাসনের পর আস্থা রেখে সাগর বলেন, “আশা রাখি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ব্যবস্থা নেবেন। তাকে আমি আমার জমিটা ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানাব।”