বাংলাহান্ট ডেস্ক: গত বছর বিধানসভা নির্বাচনে টলিউড ও টেলি তারকাদের রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার ধুম পড়েছিল। তৃণমূল (Trinamool Congress), বিজেপি (Bharatiya Janata Party) দুই দলই তারকা যোগ বাড়াতে উঠেপড়ে লেগেছিল। সে সময়ে অভিযোগ উঠেছিল, বিজেপি নাকি টাকা দিয়ে তারকা কিনছে। এতদিন পর ফের সেই অভিযোগকেই উস্কানি দিলেন তৃণমূলের তারকা সদস্য সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় (Sayantika Banerjee)।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন সায়ন্তিকা। বাঁকুড়া বিধানসভায় প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু জিততে পারেননি। এতদিন পর সায়ন্তিকা দাবি করলেন, তাঁকে নাকি টাকা অফার করা হয়েছিল বিজেপির তরফে। কিন্তু তিনি লোভের ফাঁদে পা না দিয়ে সংযত থেকেছেন।
বুধবার বাঁকুড়ার ২ নম্বর ব্লকে তৃণমূলের বিজয়া সম্মীলনীতে যোগ দিয়েছিলেন সায়ন্তিকা। সেখানছি তিনি দাবি করেন, বিজেপি তাঁকে ‘প্রচুর টাকা’ অফার করেছিল। করোনার সময়ে দু বছর কোনো রোজগার ছিল না তাঁর। শুটিং বন্ধ ছিল। এদিকে বাড়িতে বয়স্ক বাবা মা। আরো অনেকের মতো সায়ন্তিকারও সংসার চলছিল না। তখনি আসে বিজেপির প্রস্তাব। প্রচুর টাকার বদলে যোগ দিতে হবে দলে।
সায়ন্তিকা বলেন, ‘আজকে আমি ওদের টাকা নিয়ে নেব। আমার সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু তারপর? রাতে বাড়ি ফিরে আয়নায় নিজের মুখ দেখতে হবে। তখন মিথ্যে কথাটা বলতে পারব তো যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উন্নয়ন করেননি?’ তাই নিজেকে ‘সংযত’ করেছিলেন সায়ন্তিকা। নিজেকে বুঝিয়েছিলেন, ওই টাকার দরকার নেই। আরেকটু কষ্ট করবেন। লকডাউন উঠলে আবার রোজগার করবেন।
সংবাদ মাধ্যমের কাছেও একই কথা বলেছেন সায়ন্তিকা। বিজেপির টাকার প্রস্তাবে তিনিও হ্যাঁ বলে ফেলতে পারতেন। কিন্তু নিজেকে সংযত করেছিলেন বিবেকের কথা ভেবে। এর আগে নাম করে শুভেন্দু অধিকারীকে ‘মীরজাফর’ কটাক্ষ শানিয়েছিলেন সায়ন্তিকা। এদিন ফের তিনি বলেন, ২০২১ এ যারা ‘বেইমানি’ করেছেন, তিনি তাঁদের মতো মীরজাফর নন। তৃণমূল এখন আর দুধ কলা দিয়ে কালসাপ পোষে না। এখন কালসাপ দেখলেই বিষদাঁত ভেঙে চুবড়িতে ঢুকিয়ে ফেলে দিয়ে আসা হবে।
সায়ন্তিকার অভিযোগের পালটা দিয়েছেন বাঁকুড়ার নির্বাচিত বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা। তিনি স্পষ্ট বলেন, বিজেপি দেশ চালায়। কোনো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নয়। সায়ন্তিকা অভিনয়ে দক্ষ হতে পারেন কিন্তু রাজনীতিতে ওই ধরণের তারকাদের জন্য বিজেপি কোনো টাকা দেয় না। বিধানসভা নির্বাচনেই বাঁকুড়ার মানুষ যোগ্য জবাব দিয়েছেন সায়ন্তিকাকে।
শমীক ভট্টাচার্যও কটাক্ষ শানিয়েছেন, টাকা দিয়ে দলে টানার সংষ্কৃতি অন্তত বিজেপির নেই। আদর্শ দেখেই বিজেপিতে আসে সবাই। আর যারা স্বার্থ দেখে তারা আবার ফিরেও যায়। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, টাকার লেনদেন কোন দলে হয় তা তো কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনাতেই বোঝা গিয়েছে।