বাংলা হান্ট ডেস্ক : ফের এক নতুন দুর্নীতির অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) শাসক দলের বিরুদ্ধে। কৃষি ঋণের টাকায় দুর্নীতির খবর প্রকাশ্যল এল তৃণমূল নেতা (TMC Leader) ও সমবায় সমিতির ম্যানেজারের বিরুদ্ধে। জেলাশাসকের নির্দেশের পর কেটে গেছে প্রায় ৫ মাস। তারপরও তদন্তে আসেননি সমবায় আধিকারিকরা। কতদিনে সমস্যার সমাধান হবে তা জানেন না কেউই। এরই মধ্যে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ফেরাতে ইডি (ED) অথবা সিআইডি (CID) তদন্তের দাবি তুলেছেন তৃণমূল প্রধান। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা তথা সমবায় সমিতির ম্যানেজার সংবাদমাধ্যমকে দেখেই পালিয়ে গেলেন।
জানা যাচ্ছে, পরিচালন কমিটি না থাকার সুবাদে ২০১৭ – ১৮ অর্থবর্ষে খানাকুলের চিংড়া সমবায় সমিতি থেকে কিষান ক্রেডিট কার্ডের ঋণ হিসাবে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা তোলা হয়। নিয়মবহির্ভূতভাবে ওই এলাকার প্রভাবশালী তৃণমূল নেতাদের পাশাপাশি সমবায়ের এলাকার বাইরেও বিভিন্ন তৃণমূল নেতাকে পাইয়ে দেন সমবায় সমিতির ম্যানেজার প্রভুনাথ পোড়েল। ঘটনার জেরেই আর্থিক তছরুপের সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান কার্তিক ইসরের নেতৃত্বে এলাকার কৃষকরা পিটিশন দাখিল করেন। বিষয়টি নিয়ে গত ডিসেম্বরে তদন্তের নির্দেশ দেন হুগলির জেলাশাসক।
কিন্তু এরপরেও সেই অর্থে কোনও তদন্তই হয়নি বলে অভিযোগ। গত বৃহস্পতিবার রাজ্য সমবায় দফতরের অধিকারিকরা চিংড়ায় অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে আসার কথা ছিল। সেইমতো স্থানীয় কৃষক থেকে শুরু করে খানাকুল পুলিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু অবশেষে সমবায় আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছননি। এরই মধ্যে অভিযোগ ওঠে সমবায় দুর্নীতিতে খানাকুল-সহ জেলা ও রাজ্যের বেশ কিছু প্রশাসনিক ব্যক্তিত্ব ও ব্যাঙ্কের একাংশের কর্মীরা যুক্ত রয়েছেন।। এদিন তদন্তকারীদের না আসায় সেই অভিযোগ আবারও তুলতে শুরু করেন এলাকাবাসীরা। এমনকি সমবায় মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাও করছেন বলে জানা যাচ্ছে।
সমস্ত বিষয়টিতে সমবায়ের ম্যানেজার শুধু নয় আরও অনেক প্রভাবশালী যুক্ত বলে দাবি স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান কার্তিক ইসর। অবশ্য কার্তিক ইসরের বিরুদ্ধেও লোনের নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। যদিও প্রধান লোন নিলেও পরিষদের কথা জানিয়েছেন। প্রধানের অভিযোগ সমবায় সমিতি থেকে কৃষি ঋণের টাকা নিয়েছে প্রভাবশালী খানাকুল বিধানসভার পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী মুন্সী নজিবুল করিম।
ওই প্রধানের দাবি, দরকারে ইডি অথবা সিআইডি স্বচ্ছ ভাবে তদন্ত হোক। তদন্তের দাবি নিয়ে প্রয়োজনে কোর্টের দারস্থ হবেন। প্রশ্ন উঠেছে, দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও, জেলাশাসকের নির্দেশের পরেও কেন তদন্তে এত গড়িমসি চলছে? এখানেও কি কোনও প্রভাবশালী রয়েছেন দুর্নীতির পিছনে? তাদের ঈশারাতেই কি তদন্ত ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে?