বাংলাহান্ট ডেস্ক : পড়াশোনার পাশাপাশি প্রত্যেকটি ছাত্রছাত্রী বেশ কিছু সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে যায়। ছোটবেলা থেকে অভিভাবক ও শিক্ষক/ শিক্ষিকার সেই দায়িত্ববোধ সৃষ্টি করেন একটি পড়ুয়ার মনে। মহিষাদলের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পড়ুয়াদের মনে সেই দায়িত্ববোধ কি পরিমান বিস্তার করেছে তার প্রমাণ এবার পাওয়া গেল। নিজেদের টিফিনের খরচা বাঁচিয়ে তারা ঘর তৈরি করে দিল এক বৃদ্ধ দুস্থ দম্পতির।
রং মিস্ত্রির জোগারদার নীলমণি হাইত ও দুর্বলা হাইত-এর বাস মহিষাদলের মধ্যহিংলিতে ঝুপড়িতে।স্কুল পড়ুয়াদের দৌলতে তারা পেলেন নতুন পাকা বাড়ি ।তাদের এই মহৎ উদ্যোগে সাথ দিলেন স্কুলের শিক্ষক/ শিক্ষিকারাও।মধ্যহিংলি খাল পাড়ে অবস্থিত এই ইংরেজি মাধ্যম স্কুলটি। এই খালপাড়ে বসবাস করেন আরো বহু মানুষ। এরই মধ্যে একটি ঝুপড়িতে বসবাস করেন একসময় কাজ মিস্ত্রির কাজের জোগাড় কর্মরত নীলমণি। ষাটের উপর বয়স এখন তার। শরীর দুর্বল। তাই আর কাজ করতে যেতে পারেন না। স্ত্রীকে নিয়ে কালো পলিথিনে ঢাকা একটি ঝুপড়ি করে বসবাস করতেন তিনি। তীব্র অভাবে কোনমতে দিন গুজরান হয় তাদের।এই বয়সে এসে পাকা বাড়ি ও শৌচালয় পেয়ে স্বভাবতই খুব খুশি হাইত দম্পতি।
স্কুলের পড়ুয়াদের এমন মানবিকতায় খুশি স্কুল কর্তৃপক্ষ।স্কুলের চেয়ারম্যান অধ্যাপক হরিপদ মাইতি জানিয়েছেন, “নীলমণির ঝুপড়ি ছিল স্কুলের পাশেই। স্কুলের ছেলেমেয়েরা তাদের টিফিন খরচ বাচিয়ে ৫০ হাজার টাকা মতো জোগাড় করেছে। স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারাও পড়ুয়াদের এই মহান উদ্যোগে শামিল হয়েছিল। স্কুলও এই ছাত্র-ছাত্রীদের সাহায্য করেছে।”
স্কুলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাড়িটি বানাতে মোট এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এক স্কুল পড়ুয়ার বক্তব্য, “ক্লাস থেকে রোজ নীলমণি দাদুর ঝুপড়ি নজরে পড়তো। তখনই আমরা ঠিক করি সবাই চাঁদা তুলে ওর বাড়ি বানিয়ে দেবো। আমাদের উদ্যোগের কথা শুনে শিক্ষকেরাও এগিয়ে আসেন।”