বাংলাহান্ট ডেস্ক: আজাদ হিন্দ ফৌজের সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী বিদ্যাধর রাইয়ের দেহাবসান হল। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটার সময় ঘোসি তহসিলের বেলা সুলতানপুর গ্রামে তাঁর দেহাবসান হয়। নেতাজির আজাদ হিন্দ ফৌজের সেকেন্ড লেফটেন্যান্টের পদে ছিলেন তিনি। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।
১৯৪০ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন রোজগারের আশায় বেলা সুলতানপুর গ্রাম থেকে সিঙ্গাপুর আসেন বিদ্যাধর। এখানে নেতাজির বিখ্যাত স্লোগান ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব’ শুনে তিনি এতটাই প্রভাবিত হয়েছিলেন যে আজাদ হিন্দ ফৌজে ট্রাক চালকের পদে নিয়োজিত হয়ে যান। ইংরেজি ও জাপানি ভাষায় দক্ষতা থাকার দরুন পরে তাঁকে দোভাষীর পদে নিয়োগ করা হয়।
১৯৪২ থেকে ১৯৪৫-এর মধ্যে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংগ্রাম করতে করতে নাগাল্যান্ড ও আসামের মধ্যে দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে আজাদ হিন্দ ফৌজ। চিন্ডবীন নদী পার করার সময় ব্রিটিশ জাহাজের থেকে বোম ফেলা শুরু হয়। প্রায় ৩৫০ জন সৈনিক শহিদ হন। কিছু মানুষ সেই সময় নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রাণ বাঁচাতেও সক্ষম হন। তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন আজাদ হিন্দ ফৌজের তৎকালীন সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট বিদ্যাধর রাই। নদী পেরিয়ে অপর পারে পৌঁছতেই ব্রিটিশ সেনারা তাঁদের গ্রেফতার করেন। আন্দামান ও নিকোবরের সেলুলার জেলে পাঠানো হয় তাঁদের।
ভাগ্যের এমনই পরিহাস, ১৯৪৭ সালে যখন গোটা দেশ স্বাধীনতার স্বাদ উপভোগ করছে তখন এই মানুষগুলো দিন কাটাচ্ছেন সেলুলার জেলে। পরে লাল কেল্লায় বিচার বসে তাঁদের। ঢিলোন সেহগাল ও শাহনাওয়াজের বিরুদ্ধে চলা মোকদ্দমার শুনানির পর তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়। মঙ্গলবার এই বীর দেশপ্রেমিকের দেহাবসানের পর তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল নামে।