বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ৩৯ বছরের রেকর্ড ভেঙে প্রবল বর্ষণে কার্যত বিপর্যস্ত কলকাতা (Kolkata)। সোমবার রাতে হওয়া বৃষ্টিতে কোথাও হাঁটু তো কোথাও কোমর সমান জল জমে গিয়েছে কলকাতায়। উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতা, সর্বত্র এক ছবিই ফুটে উঠেছে। জমা জলে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে উৎসবের মুখে প্রাণ হারিয়েছেন ১০ জন। এই ঘটনায় প্রশাসন ও সিইএসসি একে অপরের দিকে দায় ঠেলেছে।
কলকাতার (Kolkata) কোন কোন এলাকা এখনও জলমগ্ন?
বুধবার সকালেও কলকাতার (Kolkata) পরিস্থিতি শোচনীয়। বিধাননগর ও সল্টলেকের বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও হাঁটু জলে ডুবে রয়েছে। পাম্প চালিয়ে জল নামানোর চেষ্টা হলেও এখনও জল নামেনি পুরোপুরি। আইটি হাবের কর্মীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। উত্তর কলকাতার শিয়ালদা, মুক্তারামবাবু স্ট্রিট, বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, স্ট্র্যান্ড রোড, কলেজ স্ট্রিট, কাশীপুর, সিঁথি, বেলগাছিয়া, সুকিয়া স্ট্রিট, আমহার্স্ট স্ট্রিট ও ঠনঠনিয়ায় এখনও জলমগ্ন।
এছাড়া দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়াহাট, বালিগঞ্জ, ঢাকুরিয়া, গোলপার্ক, মোমিনপুর, যোধপুর পার্ক, মিন্টো পার্ক, ক্যামাক স্ট্রিট, রডন স্ট্রিট, শেক্সপিয়ার সরণি, পার্ক স্ট্রিট, পার্ক সার্কাস, নিউ আলিপুর, জোকা, সরশুনা, মেটিয়াবুরুজ সহ একাধিক এলাকায়ও এখনও জল জমে আছে। এছাড়া কসবা, লেনিন সরণি, বিধান সরণি, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, মহাত্মা গান্ধী রোড, সর্বত্রই একই ছবি।
জল জমার কারণে যান চলাচল প্রায় অচল। অফিস যাওয়ার সময় গাড়ির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাচ্ছে রাস্তায়। দু’চাকার যান জলে ফেঁসে আটকে পড়ছে। গণপরিবহণের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। বাস, ট্যাক্সি ও অটোর অভাবে ক্ষোভে ফুঁসছে শহরবাসী। অ্যাপ ক্যাব ও বাইকের ভাড়া আকাশছোঁয়া। মেট্রো রেল পরিষেবাও মঙ্গলবার দীর্ঘক্ষণ ব্যাহত হয়। এখন বুধবার পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হবে কি না, সেদিকে তাকিয়ে যাত্রীরা।
আরও পড়ুনঃ “রক্ষণাবেক্ষণের দায় আমাদের নয়”, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত্যুর ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ খারিজ করল CESC
শহরের (Kolkata) নীচু এলাকায় এখনও বহু বাড়ির একতলা জলমগ্ন। গ্যারাজে দাঁড়ানো গাড়ির চাকাও জলে ডুবে রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, “ছোটবেলা থেকে এমন বৃষ্টি দেখিনি।” তিনি দাবি করেছেন, পুরসভা ও রাজ্য সরকার একসঙ্গে কাজ করছে এবং ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। তবে বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, মাত্র ৬ ঘণ্টার বৃষ্টিতে প্রশাসনের অচলাবস্থা প্রকাশ্যে চলে এসেছে। ইতিমধ্যে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, পুজোর মুখে ফের নিম্নচাপের আশঙ্কা রয়েছে। সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য পুরসভা প্রস্তুত বলেও আশ্বাস দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।