বাংলাহান্ট ডেস্ক: দিল্লি থেকে মুম্বই আসা এক তরুণ। দু চোখে স্বপ্ন নিয়ে, বড় নায়ক হবেন। শুরুতে কোনো রকমে দিন গুজরান করে, উদয়াস্ত খেটে শেষমেষ বড় ব্রেক বলিউডে। সেই ছেলেই আজ শাহরুখ খান (Shahrukh Khan)। দিল্লির ছেলেটা আজ গোটা বিশ্বে জনপ্রিয় কিং খান নামে। গাড়ি, বাড়ি, টাকা পয়সা, যশ খ্যাতি সব হয়েছে। কিন্তু আক্ষেপ একটাই, বাবা মা দেখে যেতে পারলেন না কিছুই।
শাহরুখের বাবা মীর তাজ মহম্মদ খান এবং মা লতিফ ফাতিমা দুজনেই যখন মারা যান তখন তাঁর বয়স অনেক কম। এখন নিয়ম করে দিল্লিতে বাবা মায়ের সমাধিস্থলে গিয়ে মাথা ঠেকালেও জীবিতাবস্থায় বাবা মাকে কষ্ট দিয়েছিলেন শাহরুখ, একথা নিজেই স্বীকার করেছেন তিনি।
২০১৪ সালে অনুপম খেরের শো ‘কুছ ভি হো সকতা হ্যায়’তে এসেছিলেন শাহরুখ। সেখানেই তিনি জানিয়েছিলেন, ১৯৮১ তে গলার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন তাঁর বাবা। শাহরুখের কাছে বাবার শেষ স্মৃতি, তাঁকে আইসক্রিম খেতে দেখা। কারণ বাবার মরদেহের দিকে তিনি তাকাতে পারেননি।
সেই মৃত্যুশোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতে ১৯৯১ তে চলে যান তাঁর মা। হঠাৎ করেই ডায়াবিটিস ধরা পড়ে তাঁর। মাকে বাঁচিয়ে রাখতে সমস্ত শক্তি দিয়ে চেষ্টা করেছিলেন শাহরুখ। হাসপাতালের পার্কিংয়ের জায়গায় প্রার্থনা করেছিলেন। মা ছিলেন হাসপাতালের আইসিইউতে। শাহরুখ শোতে জানিয়েছিলেন, কেউ তাঁকে বলেছিলেন যে সারাক্ষণ প্রার্থনা করে যেতে। তাতে আল্লাহ তাঁর প্রার্থনা শুনতেই ব্যস্ত থাকবেন। কিছু করার সময় পাবেন না।
শাহরুখ বলেছিলেন, তিনি প্রার্থনা করেই যাচ্ছিলেন। তখনি চিকিৎসক এসে বলেন এখন আইসিইউতে ঢুকতে পারবেন তিনি। অর্থাৎ তখন তাঁর মায়ের শেষ সময় চলছিল। শোতে তিনি বলেছিলেন, তাঁর একটা ধারণা আছে তে মানুষ সন্তুষ্ট হলেই এই জগৎ ছেড়ে যেতে রাজি হয়। তাই মাকে যাতে ছেড়ে না দিতে হয় তাই তিনি এমন কিছু করেছিলেন যা তাঁর করা উচিত ছিল না।
মৃত্যুশয্যায় শায়িত মাকে সমানে কষ্ট দিয়ে গিয়েছিলেন শাহরুখ, যাতে তিনি সন্তুষ্ট না হন। তিনি বলেছিলেন, মা ছেড়ে চলে গেলে পড়াশোনা করবেন না, নিজের বোনকে দেখবেন না, কোনো কাজ করবেন না। কিন্তু যার যাওয়ার সে তো যাবেই। শাহরুখ বলেন, সম্ভবত তাঁর মা বুঝতে পেরেছিলেন তাঁর মিথ্যেগুলো। সবটা বুঝেই সন্তুষ্ট হয়ে চিরতরে চোখ বুজেছিলেন তিনি। কিন্তু সেদিনকার ওই শিশুসুলভ কাজগুলোর কথা মনে করে এখন মন ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে শাহরুখের।