বাংলাহান্ট ডেস্ক: হিন্দু ধর্মের জাতিবর্ণ প্রথা নিয়ে মন্তব্য করায় রোষের মুখে পড়লেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (Rashtriya Swayamsevak Sangh) প্রধান মোহন ভাগবত (Mohan Bhagwat)। ইতিমধ্যেই ‘রামচরিতমানস’ (Ramcharitmanas) নিয়ে বিতর্ক চলছে। তার উপর জাতিবর্ণ প্রথা নিয়ে মুখ খুলে বিপাকে পড়লেন ভাগবত। একইসঙ্গে শঙ্করাচার্য স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতীও (Shankaracharya Swami Avimukteshwaranand Saraswati) মোহন ভাগবতের করা মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুললেন।
রবিবার মুম্বইতে একটি অনুষ্ঠানে আরএসএস প্রধান বলেন, “ভগবান সব সময় বলেছেন তাঁর কাছে সবাই সমান। জাতি-বর্ণ নির্বিশেষে ভগবানের কাছে সকলেই সমান। কিন্তু পণ্ডিতরা নিজেদের মতো করে এই প্রথা এনেছেন। এটি ঘোরতর অন্যায়।” তিনি আরও বলেন, “হিন্দু ধর্ম মেনে চলেই ভারত উন্নতি করতে পারবে। পৃথিবীর উন্নতি করার ক্ষমতা আছে ভারতের। হিন্দু মুসলিম সকলেই সমান।”
ভাগবতের এই মন্তব্যের ফলেই নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এর জবাবে স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ প্রশ্ন তুলেছেন, বর্ণ প্রথার (Caste System) ব্যাপারে কোন হিন্দু শাস্ত্র দেখে এমন কথা বলেছেন ভাগবত? রায়পুরে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে শঙ্করাচার্য বলেন, গীতায় ভগবান স্বয়ং বর্ণ সৃষ্টির কথা বলেছেন। কিন্তু মোহন ভাগবত সেটি মানে না। তাঁর মতে ভগবান এমন কিছুই বলেননি।
শঙ্করাচার্যকে মোহন ভাগবতের মন্তব্যের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “তাঁর অনেক বড় সামাজিক জীবন। যখন বলেছেন, নিশ্চই কিছু ভেবে বলেছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আমরা জানিনা উনি কেন এত বড় কথা বললেন। না জেনে আমাদের মন্তব্য করা উচিত নয়।” তিনি আরও বলেন, “উনি যা বলেন, ভেবেচিন্তেই বলেন। উনি একজন বড় মানুষ। এমন কেউ নন যে কিছু বলে দিলেন আর আমরা কটাক্ষ করলাম। কিন্তু আমি জানিনা উনি কোন শাস্ত্রে পেলেন যে বর্ণ পণ্ডিতদের দ্বারা সৃষ্ট।”
শুধু তাই নয়, হিন্দু রাষ্ট্রের দাবিকেও কটাক্ষ করেছেন শঙ্করাচার্য। তিনি বলেছেন, হিন্দু রাষ্ট্রের (Hindu Rashtra) দাবি আসলে একটি ধাপ্পাবাজি। যাঁরা হিন্দু রাষ্ট্রের দাবি তুলছেন, তাঁদের কাছে একটি প্রশ্ন করেছেন তিনি। শঙ্করাচার্যের মতে, হিন্দু রাষ্ট্রের দাবিদাররা কোনও পরিকল্পনা দেখাতেই পারবেন না। হিন্দু রাষ্ট্র হলে রাজনৈতিক ব্যবস্থার কেমন পরিবর্তন আসবে, সেই প্রশ্ন করেন তিনি। তাই পরিকল্পনা ছাড়া এমন কথা বলতে বারণ করেছেন তিনি।