বাংলা হান্ট ডেস্কঃ অস্বস্তি বাড়ছিল বহুদিন ধরেই। বিশেষ করে আরজিকর কাণ্ডে মুখ খোলার পর থেকেই শাসক দলের (Trinamool Congresss) রোষের মুখে পড়তে শুরু করেছিলেন দলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ তথা প্রাক্তন মুখপাত্র ডাঃ শান্তনু সেন (Shantanu Sen)। তৃণমূলের চিকিৎসক নেতা হিসাবেই পরিচিত তিনি। যদিও ইদানিং অভিষেকপন্থী নেতা হিসাবে বেশি পরিচিতি পেতে শুরু করেছিলেন শান্তনু। এহেন দাপুটে নেতাকেই আজ সাসপেন্ড করল তৃণমূল কংগ্রেস।
শান্তনুকে সেনকে ছাঁটাই তৃণমূলের (Trinamool Congresss)
শুরু থেকেই তৃণমূলের (Trinamool Congresss) অন্যতম বিশ্বস্ত সৈনিক তিনি। দলের খারাপ সময়েও হাত ছাড়েননি। আগস্ট মাসে আরজিকরের তরুণী চিকিৎসকের নির্মম ধর্ষণ-হত্যাকান্ডে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন শান্তনু। স্বতস্ফূর্ত আন্দোলন করার পাশাপাশি মুখ খুলেছিলেন আরজিকরের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। সেটাই বোধ হয় কাল হয়ে দাঁড়াল তাঁর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক জীবনে।
আর জি কর কাণ্ডে তাঁর প্রতিবাদকে ভালো চোখে দেখেনি তৃণমূল (Trinamool Congresss)। যার ফলস্বরূপ একের পর এক কোপ এসে পড়তে শুরু করে তাঁর ওপর। দীর্ঘদিন যে হাসপাতালের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন, সেই আর জি করের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে আগেই। এরপর দলের মুখপত্রের পদ থেকেও বাদ পড়েন শান্তনু সেন। আর এবার সরাসরি তাঁকে সাসপেন্ড করল দল।
আচমকা দলের এই সিদ্ধান্ত জানার পরই কার্যত ভ্যাবাচাকা শান্তনু। ক্ষোভ উগরে সংবাদমাধ্যমে তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর বিরুদ্ধে দলকে ভুল বোঝানো হয়েছে। আর জি কর কাণ্ডের পর সন্দীপ-বিরোধিতা করেছিলেন বলেই কি এই কোপ পড়ল তাঁর ওপর? প্রশ্ন তাঁরও। অন্যদিকে আজই তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে ভাঙড়ের আরাবুল ইসলাম-কেও। আজ তৃণমূলের দুই দাপুটে নেতাকে সাসপেন্ড করার করার কথা ঘোষণা করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি।
আরও পড়ুন: শিক্ষায় বিরাট সাফল্য! এক নম্বরে বাংলা, সব রাজ্যকে ছাপিয়ে দুর্দান্ত রেকর্ড পশ্চিমবঙ্গের
অভিযোগ দলবিরোধী কাজ করার জন্যই নাকি তাঁদের সাসপেন্ডকরা হয়েছে। আপাতত এমনটাই জানিয়েছেন সুব্রত বক্সি। তিনি জানিয়েছেন এরা দলের বিরুদ্ধে গিয়ে শৃঙ্খলা ভঙ্গের পাশাপাশি এমন কিছু কাজ করেছিলেন যা দলের ভাবমূর্তির পক্ষে ক্ষতিকর। এই কারণেই দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি তাঁদের সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রসঙ্গত আরাবুল ইসলামকে আগেও ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করেছিল দল। পরে আবার তাঁকে দলে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। গত পঞ্চায়েত ভোটে আরাবুল জয়ী হয়ে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যও হন। যদিও জামিনে মুক্তির পর থেকে সম্প্রতি ক্যানিং পশ্চিমের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লার সাথে তাঁর চাপা দ্বন্দ্ব চলছিল। এরইমধ্যে নতুন বছরের প্রথম দিন পতাকা উত্তোলনকে কেন্দ্র আরাবুল ইসলাম এবং শওকত মোল্লার গোষ্ঠী কোন্দলে কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে ভাঙড়। পুলিশের সামনেই ‘গুন্ডামি’ চালাতে দেখা যায়। বিষয়টিকে মোটেও ভালো চোখে দেখেনি দল। তাই এবার আরও একবার আরাবুলকে সাসপেন্ড করল তৃণমূল।