“এত দ্রুত ক্ষমা নয়”, ট্রাম্প সুর নরম করতেই ভারতের শুল্ক “অপমানের” জবাব দিলেন শশী থারুর

Published on:

Published on:

Shashi Tharoor responds to India's tariff insult.

বাংলাহান্ট ডেস্ক: ট্রাম্পের শুল্কনীতি নিয়ে যোগ্য জবাব দিলেন শশী থারুর (Shashi Tharoor) । নয়াদিল্লি–ওয়াশিংটন সম্পর্ক ঘিরে তৈরি হওয়া সাম্প্রতিক টানাপোড়েনের প্রেক্ষিতে সরাসরি প্রতিক্রিয়া দিলেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। রাশিয়ার(Russia) কাছ থেকে অপরিশোধিত তেল কেনা নিয়ে আমেরিকার (America) অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে তিনি জানান, ভারতের কোনও ভুল হয়নি, বরং যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ববর্তী প্রশাসনই ভারতকে (India) রুশ তেল কিনতে অনুরোধ করেছিল। থারুর স্পষ্ট করে বলেন, “আমাদের ক্ষমা চাওয়ার কোনও কারণ নেই। এ বিষয়ে ভারত অত্যন্ত পরিপক্বতার সঙ্গে আচরণ করেছে।”

যোগ্য জবাব শশী থারুরের (Shashi Tharoor)

থারুর (Shashi Tharoor) জানান, আমেরিকার আগের সরকার — জো বাইডেন প্রশাসনই ভারতকে অনুরোধ করেছিল রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনতে, যাতে বিশ্ববাজারে তেলের দাম স্থিতিশীল থাকে। তাঁর কথায়, “ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য এবং তেল কেনা আগের আমেরিকান প্রশাসনের আশীর্বাদ পেয়েছিল। বৈশ্বিক তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমাদের বলা হয়েছিল কিছু রুশ তেল কিনতে।”

আরও পড়ুন:-‘অপমান’ করে মন্তব্য মমতার? অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্তাদের মামলায় কি নির্দেশ দিল হাইকোর্ট

এদিকে, মার্কিন বাণিজ্য সচিবের সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়েও প্রতিক্রিয়া জানান থারুর (Shashi Tharoor)। সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক শুক্রবার ব্লুমবার্গকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দাবি করেছিলেন, এক-দু’মাসের মধ্যে ভারত আলোচনার টেবিলে ফিরে আসবে এবং ‘ক্ষমা চাইবে’। থারুর এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে জানান, ভারতকে আলাদা করে দায়ী করা হচ্ছে অযৌক্তিকভাবে।

থারুর (Shashi Tharoor) যুক্তি দেন, শুধু ভারত নয়, আরও বহু দেশ রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা করছে। “চিন আমাদের থেকে অনেক বেশি রুশ তেল ও গ্যাস কিনছে। তুরস্কও আমাদের থেকে বেশি রুশ জ্বালানি নেয়। ইউরোপ তেল-গ্যাস না কিনলেও রাশিয়ার নানা পণ্য আমদানি করছে, ফলে তারাও রাশিয়ার ভান্ডারে আমাদের তুলনায় বেশি অর্থ ঢালছে।”

Shashi Tharoor responds to India's tariff insult.

আরও পড়ুন:-রাশিয়াকে শায়েস্তা করতে ফের নতুন পরিকল্পনা ট্রাম্পের! প্রভাবিত হবে ভারতও? মিলল বিশেষ ইঙ্গিত

দুই দেশের সম্পর্ক কিছুটা স্বস্তির দিকে এগোচ্ছে বলেই মনে করা হচ্ছে। শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘গ্রেট প্রাইম মিনিস্টার’ বলে প্রশংসা করেন এবং ভারত–মার্কিন সম্পর্ককে “একটি সাময়িক বিঘ্নের মধ্য দিয়ে যাওয়া” বলে মন্তব্য করেন। তাঁর এই মন্তব্য দুই দেশের মধ্যে সেতুবন্ধনের সম্ভাবনা তৈরি করেছে। তবে থারুর (Shashi Tharoor) সতর্ক করে বলেন, এই প্রশংসা সত্ত্বেও অতীত এত সহজে ভোলা সম্ভব নয়। তাঁর মতে, “৫০ শতাংশ শুল্ক এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ও তাঁর সহযোগীদের তরফে আসা অপমান আমরা হেলায় উড়িয়ে দিতে পারি না। দুই দেশের সরকার ও কূটনীতিকদের অনেক মেরামতির কাজ করতে হবে।” তিনি আরও যোগ করেন, ট্রাম্পের ব্যক্তিত্ব “খুবই চঞ্চল ও পরিবর্তনশীল”, ফলে এত দ্রুত “ভুলে যাওয়া এবং ক্ষমা করা সম্ভব নয়।”

ভারত–মার্কিন সম্পর্ক ঘিরে তৈরি এই অস্থিরতার মধ্যেই থারুরের (Shashi Tharoor) মন্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। একদিকে মার্কিন প্রশাসনের হুঁশিয়ারি, অন্যদিকে ভারতকে ‘বিশ্বস্ত অংশীদার’ হিসেবে তুলে ধরার কূটনৈতিক প্রয়াস—এই দুইয়ের মাঝেই চলছে দুই দেশের সম্পর্কের সূক্ষ্ম ভারসাম্য রক্ষার প্রচেষ্টা।