বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের (NGT) নির্দেশে এবার কলকাতার সমস্ত ঘাটকে ‘নো-প্লাস্টিক জোন’ ঘোষণা করা হয়েছে। উদ্যোগটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি পোর্ট (Shyama Prasad Mookerjee Port), যা পূর্বে কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট নামে পরিচিত ছিল।
প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে উদ্বেগ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি পোর্ট (Shyama Prasad Mookerjee Port)
পোর্ট (Shyama Prasad Mookerjee Port) কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই একাধিক ঘাটে নোটিস বোর্ড লাগিয়েছে, যেখানে মানুষকে অনুরোধ করা হয়েছে নদীর ধারে বা ঘাটে কোনওভাবেই প্লাস্টিক না ফেলতে। পোর্টের ডেপুটি চেয়ারম্যান সম্রাট রাহি জানিয়েছেন, “প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে সবারই উদ্বেগ রয়েছে। তাই ঘাটে নোটিস বসানো হয়েছে, যাতে সাধারণ মানুষ সচেতন হন।”
শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি পোর্টের (Shyama Prasad Mookerjee Port) হাতে বর্তমানে একটি বড় ঘাট উন্নয়ন ও নদীতীর সৌন্দর্যায়ন প্রকল্প রয়েছে। প্রথম দফায় ৭টি ঘাট সংস্কারের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে, যথা- মায়ের ঘাট, সুরিনাম ঘাট, নিমতলা ঘাট, ছত্তেলাল কি ঘাট, দইঘাট, কুমোরটুলি ঘাট এবং চাঁপাতলা ঘাট। কুমোরটুলি থেকে চাঁপাতলা পর্যন্ত নদীর ধারে আলাদা করে সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছে। শুধু সংস্কার নয়, এই প্রকল্পের আওতায় পুনর্বাসন ও নিরাপত্তা জোরদার করার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। ডেপুটি চেয়ারম্যান সম্রাট রাহি বলেন, “জোড়াবাগান ঘাটের এক কিলোমিটার দীর্ঘ নদীতীর সুরক্ষা প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এটি নদীতীরকে নতুন জীবন দেবে এবং রিভারফ্রন্টকে আরও সুন্দর করে তুলবে।”
শুধু পোর্ট (Shyama Prasad Mookerjee Port) নয়, এই প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে কলকাতা মিউনিসিপাল কর্পোরেশন (Kolkata Municipal Corporation), কলকাতা পুলিশ এবং একাধিক রাজ্য সংস্থা। এমনকি কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (CSR) কর্মসূচির আওতায় বেশ কয়েকটি বড় কর্পোরেট সংস্থাও দায়িত্ব নিয়েছে। এই উদ্যোগে আদানি পোর্টস অ্যান্ড এসইজেড লিমিটেড কুমোরটুলি থেকে চাঁপাতলা পর্যন্ত নদীতীর সৌন্দর্যায়ন করবে। গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড মায়ের ঘাট ও সুরিনাম ঘাটের উন্নয়নের দায়িত্বে। পিএস গ্রুপ পুনর্গঠন করবে নিমতলা বিসর্জন ঘাট। তাজ হোটেলস পরিচালনাকারী আইএইচসিএল গ্রুপ ছোটেলাল কি ঘাটের দায়িত্ব নিয়েছে, আর টিএনএস লগি পার্ক প্রাইভেট লিমিটেড কাজ করবে দইঘাটে। প্রত্যেক সংস্থার সঙ্গে ইতিমধ্যেই সমঝোতা স্মারক (MoU) সই হয়েছে।
এই মুহূর্তে কলকাতার বেশ কয়েকটি ঘাটের পরিস্থিতি করুণ। ভাঙা সিঁড়ি, পর্যাপ্ত আলো না থাকা, পানীয় জলের অভাব, শৌচাগার ও চেঞ্জিং রুমের ব্যবস্থা না থাকা, সাজসজ্জার জিনিসপত্র ম্লান হয়ে যাওয়া, সব মিলিয়ে বহু দর্শনার্থী বারবার অভিযোগ জানিয়েছেন। দুর্গাপুজো, কালীপুজো এবং ছটপুজোর সময় ঘাটে মানুষের ভিড় বাড়ে। সেই সময়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সুরক্ষার দায়িত্ব কেএমসি-র, আর আইনশৃঙ্খলা ও যান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকে কলকাতা পুলিশ।
আরও পড়ুনঃ পুজো উদ্বোধনের ব্যস্ত সূচি, শহরের কোন কোন পুজো মণ্ডপ উদ্বোধন করছেন মুখ্যমন্ত্রী?
এই নতুন উদ্যোগে প্লাস্টিক নিষিদ্ধকরণের পাশাপাশি ঘাটগুলির উন্নয়ন ও নদীতীরকে নতুন রূপ দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে কর্তৃপক্ষ (Shyama Prasad Mookerjee Port)। ফলে শহরবাসী ও ভ্রমণকারীদের জন্য ভবিষ্যতে আরও সুরক্ষিত ও সুন্দর হয়ে উঠতে চলেছে কলকাতার ঘাট।