ক্রিকেটার না হতে পেরে মুদির দোকান খুলেছিলেন বাবা, এখন ভারতের হয়ে বিশ্বকাপে খেলবেন ছেলে

বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দল সামনের বছর এশিয়া কাপ এবং অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলবে। এ জন্য স্কোয়াডও ঘোষণা করা হয়ে গিয়েছে। দলে জায়গা পেয়েছেন গাজিয়াবাদের সিদ্ধার্থ যাদবও। তার কথা আলাদা করে বলার অবশ্যই একটি কারণ আছে। সিদ্ধার্থের বাবা শ্রবণ যাদবের গাজিয়াবাদে একটি মুদির দোকান চালান। সেভাবেই তিনি নিজের ছেলের ভবিষ্যতের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে গিয়েছেন। ছেলের দলে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই তার দোকানে যেন অকাল বসন্ত। তার দোকানে আসা পরিচিত ক্রেতারা তাদের পরিবারকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। ছোটবেলায় নিজেও ক্রিকেটার হতে চেয়েছিলেন শ্রবণ। ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ তার ছেলে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে।

শ্রবণ জানান, সিদ্ধার্থ যখন ছোট ছিল, তখন তার স্বপ্ন ছিল যে তার ছেলে বড় হয়ে একদিন ক্রিকেট খেলবে। তার ছেলে যখন প্রথমবার ক্রিকেট ব্যাট ধরেছিল তখন সহজাত ভাবেই সে বাঁ হাতে ব্যাট ধরে দাঁড়িয়ে ছিল। এটা দেখে সিদ্ধার্থের মা বলেছিলেন ছেলেকে কেমন যেন উল্টো লাগছে। কিন্তু শ্রবণ বলেছিলেন এটিই হবে তার অবস্থান এবং তারপর থেকেই সিদ্ধার্থ একজন বাঁহাতি ব্যাটার হয়ে ওঠে।

৮ বছর বয়সে সিদ্ধার্থের সত্যিকারের ক্রিকেট শিক্ষা শুরু হয়েছিল। সিদ্ধার্থ তার বাবার স্বপ্ন পূরণের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন। প্রতিদিন বিকেলে শ্রবণ তার ছেলেকে কাছের মাঠে নিয়ে যেত এবং সিদ্ধার্থকে ব্যাটের গ্রিপ শেখাতেন। শ্রবণ জানিয়েছেন যে তিনি সিদ্ধার্থকে ওই বয়সেই নিশ্চিতভাবে ৩ ঘন্টা ধরে অনুশীলনটি করাতেন। দুপুর ২টোয় দোকান বন্ধ করে তারপর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মাঠে থাকতেন। এরপর সন্ধ্যায় সে দোকানে ফিরে আসতেন।

রাত সাড়ে ১০টায় সিদ্ধার্থকে খাবার খাইয়ে তারপর ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া হতো। সবকিছুর পরে শ্রবণ এতটাই ক্লান্ত হয়ে পড়তেন যে তার হুঁশ থাকতো না। সিদ্ধার্থের পরিবারের সবাই তাকে সমর্থন করেনি। তার ঠাকুমা চাইতেন যে তার নাতি পড়ালেখায় মনোনিবেশ করুক। শ্রবণ জানান, তিনি মনে করেন এটা জুয়া খেলার মতো। যদি সব কিছু ঠিকঠাক না হতো তাহলে জীবনটা নষ্ট হয়ে যেতে পারতো সিদ্ধার্থর। সিদ্ধার্থের মতে, তার বাবার একটাই স্বপ্ন ছিল, যা পূরণ করার সুযোগ সে পেয়েছে এবং তাকে সেই স্বপ্ন পূরণ করতে হবে।

Avatar
Reetabrata Deb

সম্পর্কিত খবর