বাংলা হান্ট ডেস্ক : ফের চর্চায় অধিকারী পরিবার। তাঁরা ঠিক কোন দলে রয়েছেন তা জানেন না কেউই। এই প্রশ্নটাই এখন উঠে আসছে কাঁথির অধিকারী পরিবারের কর্তা শিশির অধিকারী (Sisir Adhikari) ও তাঁর পুত্র দিব্যেন্দুকে অধিকারীকে ঘিরে (Dibyendu Adhikari)। এবার নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) সঙ্গে কথাবার্তা বলতে দেখা গেল শিশিরবাবুকে। আর তার পরই শুরু হল তীব্র জল্পনা।
তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) সঙ্গে জন্মলগ্ন থেকে রয়েছেন সাংসদ শিশিরবাবু। কাঁথি দক্ষিণ ও এগরা থেকে বিধায়ক ছিলেন দীর্ঘদিন। কিন্তু ২০২০ সালে পুত্র শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দিতেই পালটে যায় সমস্ত হিসাব। শুভেন্দুর দেখাদেখি ধরে বিজেপিতে যান তাঁর ভাই সৌমেন্দুও।
সেই সময় মোদি-হাওয়ায় রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের একাধিক নেতা-মন্ত্রী ‘দলে থেকে কাজ করতে পারছি না’ বলে গেরুয়া আবির মাখতে শুরু করেন। কয়েকজন আবার বিশেষ বিমানে দিল্লিও উড়ে যান। পরে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল বিপুল আসন পেয়ে জয়লাভ করতেই তারা আবার তৃণমূলে ফিরে আসেন।
কিন্তু, শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলে ফিরে আসেননি, উলটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একের পর এক তীব্র আক্রমণ শানিয়ে গিয়েছেন। আপাতত তিনিই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। নিরন্তর তাঁর আক্রমণের মুখে পড়ে শাসক দল। তবে বিরোধী দলনেতার বাবা শিশিরবাবু ও ভাই দিব্যেন্দু খাতা কলমে তৃণমূলের সাংসদ। কিন্তু তাদের অবস্থান নিয়ে বার বার প্রশ্ন উঠেছে।
তবে, দিব্যেন্দু অধিকারী বলেছেন, তিনি তৃণমূলেই আছেন। কিন্তু দলীয় সূত্রে খবর, অধিকারী পরিবারের এই দুই সাংসদের সঙ্গে কার্যত কোনও সম্পর্কই নেই তৃণমূলের সঙ্গে। উল্টে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বাংলার বিধানসভায় ভোট না দিয়ে দিল্লি গিয়ে ভোট দিয়েছেন এই পিতা-পুত্র দুই সাংসদ। সেইসময় তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘উনি শারীরিক ও মানসিকভাবে বিজেপির সঙ্গেই আছেন’।
এবার নতুন সংসদ উদ্বোধন নিয়েও বিতর্কে শিশিরবাবু্রা। কংগ্রেস, তৃণমূল সহ একাধিক দল আগেই জানিয়ে দিয়েছিল, তারা অনুষ্ঠান বয়কট করবে। গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ, বিরোধীদের পরিসর না দেওয়া, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে ব্রাত্য রাখা-সহ একাধিক ইস্যুতে বিজেপিকে কার্যত তুলোধোনা করেছিলেন মমতা। কিন্তু দেখা গেল, তৃণমূলের টিকিটে জেতা সাংসদ শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু অধিকারী দু’জনেই রয়েছেন নবনির্মিত সংসদ ভবনের লোকসভার আসনে। ভাষণের পর প্রধানমন্ত্রী নেমে আসেন সেখানে। একের পর এক শাসক ও অনুসারী দলের সাংসদরা প্রধানমন্ত্রীকে অভিবাদনও জানান।