বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শীতলকুচিতে ভোট-পরবর্তী হিংসায় মারা যাওয়া বিজেপি সমর্থক নাকি তিনি? ঘুম থেকে উঠে এমনই অবাক-করা খবর পেয়ে রীতিমতো আঁতকে উঠেছিলেন অভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। পেশায় ইন্ডিয়া টুডের সাংবাদিক অভ্র। সে সময় শীতলকুচি থেকে তার অবস্থান প্রায় ১৩০০ কিলোমিটার দূরে। কিছুটা দেরি করে ঘুম থেকে উঠেই শতাধিক মিসড কল দেখে চমকে ওঠেন তিনি। আর তারপরেই বন্ধুর মুখ থেকে শুনতে পান নিজের মৃত্যুর খবর। পশ্চিমবঙ্গের শীতলকুচিতে যে দু’জন বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে, তাঁদেরই একজন মানিক মৈত্র নাকি তিনিই! এমনটাই দাবি বিজেপির। তড়িঘড়ি ভিডিও দেখতে গিয়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ে যান অভ্র।
নিজের এই বিরম্বনার কথার টুইটারে লিখে জানিয়েছেন তিনি। ঘটনাটি হল বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপির পক্ষ থেকে একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়। ৫ মিনিট ২৮ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে বিজেপির দাবি ভোট-পরবর্তী হিংসায় পশ্চিমবঙ্গের শীতলকুচিতে খুন হয়েছেন তাঁদের দুই কর্মী। বিজেপি আগেই দাবি করেছিল ন জন বিজেপি কর্মীর মৃত্যুর কথা। সেই নয়জনের তালিকাতেই ছিল শীতলকুচির দুই কর্মী মিন্টু বর্মন এবং মানিক মৈত্রর নাম। কিন্তু এই মানিকের ছবি নিয়েই তৈরি হয় বিতর্ক। কারণ যে ছবিটি ব্যবহার করা হয় তার সাংবাদিক অভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যিনি থাকেন দিল্লিতে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা, পশ্চিমবঙ্গে এসে যে সাংবাদিক সম্মেলনে অংশ নেন সেখানেও চালানো হয়েছিল এই ভিডিও।
গোটা ঘটনায় স্তম্বিত অভ্র তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন বিজেপি আইটি সেলকে। নিজের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে তিনি লেখেন, ‘‘আমি অভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। শীতলকুচি থেকে ১,৩০০ কিমি দূরে সুস্থ অবস্থাতেই রয়েছি। যদিও বিজেপি আইটি সেলের দাবি, আমি নাকি মানিক মৈত্র এবং শীতকুচিতে আমার মৃত্যু হয়েছে! দয়া করে এই ধরনের ভুয়ো খবরে বিশ্বাস করবেন না। উদ্বিগ্ন হবেন না। আবারও বলছি আমি এখনও জীবিত রয়েছি।’’
I am Abhro Banerjee, living and hale and hearty and around 1,300 km away from Sitalkuchi. BJP IT Cell is now claiming I am Manik Moitra and died in Sitalkuchi. Please don't believe these fake posts and please don't worry. I repeat: I am (still) alivehttps://t.co/y4jKsfx8tI pic.twitter.com/P2cXJFP5KO
— Abhro Banerjee (@AbhroBanerjee1) May 6, 2021
অভ্রের অভিযোগের পর অবশ্য পুরো ভিডিওটি মুছে দিয়েছে বিজেপি। এমনকি এখনও পর্যন্ত মানিক মৈত্রর আসল ছবিটিও প্রকাশ করতে পারেনি গেরুয়া শিবির। প্রসঙ্গত রবিবার ভোটের ফল প্রকাশের পর বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসীন হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর থেকেই রাজ্যের নানা প্রান্তে লেগে রয়েছে ছোটখাটো গন্ডগোল। বিজেপি এবং তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় শুরু হয়েছে নানান ঝামেলা। বিজেপির দাবি এই রাজনৈতিক সংঘর্ষের বলি প্রায় ১৪ জন এবং এই মুহূর্তে ঘর ছাড়া প্রায় এক লক্ষ কর্মী। খুন ছাড়াও মহিলা কর্মীদের উপর হামলা ঘরবাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ তোলা হয়েছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। যদিও সরকারিভাবে এখনো পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যুর কথাই স্বীকার করা হয়েছে।