বাংলা হান্ট ডেস্ক: সফল মানুষের জীবনকাহিনি প্রেরণা জোগায় সবাইকেই। পাশাপাশি, এই লড়াকু জীবনযুদ্ধের ঘটনাগুলি রসদ জোগায় তাদেরও যারা সফল হওয়ার জন্যে প্রতি পদে পদে যুদ্ধ করছেন। বর্তমান প্রতিবেদনের কাহিনিটিও তাঁদের বেশ অনুপ্রাণিত করবে।
এই কাহিনি মুম্বাইয়ের বান্দ্রার কাছে দরগা গালি বস্তি থেকে শুরু হয়। যার প্রধান চরিত্রটি হল একজন নারী। তাঁর নাম শাহিনা আত্তারওয়ালা। বর্তমানে মাইক্রোসফটের শীর্ষ পদে থাকা সফল শাহিনার জীবনের লড়াই মোটেও সহজ ছিলনা। বরং তা ছিল অত্যন্ত কণ্টকাকীর্ণ। টুইটারে তাঁর এই বিজয় সফরের কথা তিনি নিজেই জানিয়েছেন।
সম্প্রতি জনপ্রিয় Netflix সিরিজ “Bad Boy Billionaires” দেখার পর শাহিনার নিজস্ব গল্প মনে পড়ে যায়। তিনি টুইটারে লেখেন, “এই সিরিজটি বোম্বের বস্তির ছবি তুলেছে। যেখানে আমি ২০১৫ সালে জীবিকা নির্বাহ করার আগে বড় হয়েছি। ছবিতে দেখা বাড়িগুলোর মধ্যে একটি আমাদের। এখানে ভালো টয়লেট দেখতে পাবেন, যা আগে ছিল না।”
সাধারণ একজন ফেরিওয়ালার ঘরে জন্ম নেওয়া শাহিনা জানিয়েছেন, “২০২১ সালে আমাদের পরিবার একটি অ্যাপার্টমেন্টে চলে গিয়েছিল। যেখানে আমরা বাড়ি থেকে আকাশ, ভালো ভাবে সূর্যের আলো দেখতে পাচ্ছিলাম। পাশাপাশি চারপাশটা ছিল পাখি আর সবুজে ঘেরা। বাবা ফেরিওয়ালা হওয়ায় রাস্তায় না ঘুমানো পর্যন্ত এমন জীবনের স্বপ্ন আমরা কমই দেখতে পারি। ভাগ্য অত্যন্ত কঠোর। পরিশ্রম এবং যুদ্ধ জীবনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
তিনি আরও লিখেছেন, “বস্তিতে বসবাস করা অত্যন্ত কঠিন ছিল। সেখানে আমাকে কঠোর জীবনযাপন, লিঙ্গ বৈষম্য এবং যৌন হয়রানির মুখোমুখিও হতে হয়েছিল। তবে, এটি আমার জন্য নতুন কিছু শেখার এবং নিজের জন্য একটি ভিন্ন জীবন তৈরি করার কৌতূহল জাগায়।”
কম্পিউটারের প্রতি শাহিনার বরাবরই বিশেষ অনুরাগ দেখা যায়। এই কারণে, তাঁর বাবা তাঁকে একটি প্রাইভেট ক্লাসে ভর্তি করেন। সেখানে তিনি প্রোগ্রামিং শিখেছিলেন। পরে তিনি প্রোগ্রামিং ছেড়ে ডিজাইনিংয়ের ক্ষেত্রে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
একটি সাক্ষাৎকারে শাহিনা বলেছিলেন, “আমি প্রোগ্রামিং ছেড়ে দিয়েছি এবং ডিজাইনে কেরিয়ার গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কারণ ডিজাইন আমাকে বিশ্বাস করতে সাহায্য করেছে যে, এতে যা সম্ভাবনা রয়েছে এবং জিনিস যেভাবে পরিবর্তিত হতে পারে সেখানে প্রযুক্তি তাদের পরিবর্তনের হাতিয়ার।”
মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসএসসি, এইচএসসি এবং বি.কম করেছেন শাহিনা । এর পাশাপাশি, স্নাতক হওয়ার সময় তিনি অনেক ক্ষেত্রে তথ্য অর্জন করেছিলেন। এ ছাড়া শাহিনা NIIT থেকে ভিজ্যুয়াল কমিউনিকেশন অ্যান্ড ডিজাইনে ডিপ্লোমা করেন। তবে, এত কিছুর পরেও, শাহিনার দৃঢ় সংকল্পই তাঁর আসল শক্তিতে পরিণত হয়েছিল। যা তাকে বর্তমানে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিয়েছে।