বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সংবিধানের (Constitution) প্রস্তাবনা থেকে ‘সমাজতন্ত্র’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দ দু’টি সরানো হবে কি না, তা নিয়ে সম্প্রতি নানা মহলে জোর চর্চা চলছিল। তবে এ বিষয়ে এবার স্পষ্ট বার্তা দিল কেন্দ্র। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই দুটি শব্দ বাদ দেওয়ার উদ্দেশ্যে সরকার এখনও পর্যন্ত কোনওরকম সাংবিধানিক বা আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেনি। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে এই তথ্য দিয়েছেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুন মেঘওয়াল। তাঁর কথায়, সংবিধানের প্রস্তাবনায় থাকা ‘সমাজতন্ত্র’ এবং ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দ দুটি নিয়ে কোনও পদক্ষেপ এখনও পর্যন্ত করা হয়নি।
সংবিধান (Constitution) থেকে ‘সমাজতন্ত্র’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দ দুটি বাদ দেওয়ার সম্ভাবনা
উল্লেখ্য, কিছুদিন ধরেই সংবিধানের (Constitution) প্রস্তাবনা থেকে ‘সমাজতন্ত্র’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দ দুটি বাদ দেওয়ার সম্ভাবনা ঘিরে রাজনৈতিক মহলে জোর বিতর্ক চলছে। বিরোধীদের অভিযোগ, কেন্দ্র এই শব্দদুটি অপসারণের পথে হাঁটতে চাইছে। এই প্রেক্ষিতেই রাজ্যসভার সাংসদ রামজিলাল সুমন জানতে চান, সরকার আদৌ প্রস্তাবনা বদলের কথা ভাবছে কি না। সেই প্রশ্নের জবাবেই কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুন মেঘওয়াল স্পষ্ট জানান, সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে ওই শব্দ দুটি বাদ দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা বা ইচ্ছা সরকারের নেই।
সঙ্গে তিনি এটাও বলেন, প্রস্তাবনায় কোনও পরিবর্তন আনতে গেলে তা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনার প্রয়োজন, এবং সর্বসম্মতির ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আপাতত এমন কোনও বিষয় সরকারের বিবেচনাধীন নয় বলেই জানিয়েছেন মেঘওয়াল।
প্রসঙ্গত, যখন সংবিধান (Constitution) রচিত হয়, তখন ‘সমাজতন্ত্র’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দ দুটি মূল প্রস্তাবনায় ছিল না। ১৯৭৬ সালে ৪২তম সংশোধনের মাধ্যমে এই শব্দ দুটি সংযুক্ত করা হয়। পরবর্তীকালে এই সংশোধনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন দায়ের হয়, যা ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে খারিজ করে দেয় দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সেইসঙ্গে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ— ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর অবিচ্ছেদ্য অংশ।
আরও পড়ুনঃ পুরনো মুখ সরছে, তৃণমূলে সাংগঠনিক রদবদলের ইঙ্গিত! জল্পনা তুঙ্গে
উল্লেখযোগ্যভাবে, কিছুদিন আগেই প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় সংবিধানে (Constitution) এই দুই শব্দের যুক্ত থাকার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা-সহ বিজেপির একাধিক নেতা সংবিধান থেকে এই শব্দগুলি বাদ দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেন। এই সমস্ত মন্তব্যের জেরে বিতর্ক আরও দানা বাঁধে।