বাংলা হান্ট ডেস্ক : প্রতিটি বাবা-মা তার সন্তানদের সমান হারে ভালোবাসেন। যদিও মা তার ভালোবাসাটা যেভাবে ফুটিয়ে তুলেন, বাবা কিন্তু তেমনিভাবে পারেন না। বাবারা বেশিরভাগই রাগি এবং চুপ করে থাকা প্রকৃতির মানুষ হয়ে থাকেন। কিন্তু তাদের মনে থাকা সন্তানের এবং পরিবারের প্রতি ভালোবাসাটা কখনও কারও সামনে ফুটে উঠতে দেন না।
আমাদের বাবারা ছোটো থেকেই নিজের ইচ্ছেগুলিকে দমিয়ে আমাদের স্বপ্ন এবং ইচ্ছেগুলোকে পূরণ করেছেন। বাবারা আমাদের সুখের মধ্যেই হয়তো নিজেদের সুখটাও খুঁজে পেতেন। এমন কত কত ঘটনায় না আমরা দেখেছি। কিন্তু এবারে ঘটলো পুরো উল্টো এক খানা কান্ড। যা পড়লে ও দেখলে হয়তো আপনিও অবাক হবেন।
বর্ধমান (Bardhaman) জেলার কাটোয়া (Katwa) শহরে রাজুয়া (Rajua) গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ আশরাফ মাওলা এবং তার ছেলে মনজুর মওলা। ছেলে তার বাবাকে চার চাকার একটি গাড়ি উপহার দিলেন। কিন্তু সেটি তার নিজের হাতে বানানো, কারও সাহায্য ছাড়াই তিনি এটি বানিয়েছেন। হ্যাঁ ঠিকিই শুনছেন। তিনি তার ৭২ বছর বয়সী বাবাকে যাতায়াতের সুবিধার জন্য একটি চার চাকার গাড়ি (Electric Vehicle) তৈরি করে দিয়েছেন।
এক সাক্ষাৎকারে মনজুর জানান, ‘রাজুয়া থেকে কাটোয়ার দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। তার বাবাকে এখনও কোনও না কোনও প্রয়োজনে সাইকেল নিয়ে বা বাইক নিয়ে যেতে হয়। প্রতিদিনই কিছু না কিছু দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকে। সেই দুশ্চিন্তা যাতে বেশি না হয় তাই আমি বাবার জন্য নিজে হাতে ব্যাটারি জিপ (Battery Jip) তৈরি করে দিয়েছি। আর এই গাড়িটির নাম রাখা হয়েছে কিং (King)’।
মনজুর নিজে পেশাদার ইঞ্জিনিয়ার (Engineer) কিন্তু নন। তাও তিনি অবাস্তবকে বাস্তব করে দেখিয়েছেন। প্রথম দিকে গাড়িটি তৈরির সময় অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। কিন্তু তাও তিনি নিজের পরিশ্রমে তার বাবার জন্য এই গাড়িটি তৈরি করেন। তিনি গাড়িটির মধ্যে ইঞ্জিন হিসেবে ব্যবহার করেছেন টোটো গাড়ির ব্যাটারি (Toto Car Battery)। আর এর বডিটি তৈরি করেছেন স্থানীয় এক কারখানা থেকে। তাছাড়া বাকি সমস্ত কাজ তিনি নিজের হাতে সেরেছেন।
এই গাড়িটির মধ্যে চারটি হেড লাইট (Head Light) আছে, সামনে ড্রাইভার সমেত দুটি সিট (Two Seats) এবং পিছনে দুটি সিট রয়েছে। যদিও এই গাড়িটি চালানোর অনুমতি এখনও সরকারি দফতর থেকে আসেনি। এই গাড়িটি তৈরি করতে খরচ পড়েছে প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা।