বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সম্প্রতি তৃণমূল কাউন্সিলরকে (TMC councilor) হুমকি দেওয়া এবং হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল দলেরই এক নেতার বিরুদ্ধে। রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার কাউন্সিলর পাপিয়া হালদার দলেরই যুবনেতা প্রতীক দে-র বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন। যা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই রীতিমতো শোরগোল। আর এই আবহেই এবার পালটা ব্যক্তিগত আক্রমণের পথে হেঁটে তৃণমূল প্রতীক কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন ওই যুবনেতা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনায় (South 24 Parganas) জেলায় রাজপুর সোনারপুর পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলরের অভিযোগ ছিল, বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই নানা ভাবে তাকে বিরক্ত করে চলেছেন ওই যুব তৃণমূল নেতা। প্রতীক দে নামে ওই যুবনেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, কাটমানিও অভিযোগ তুলেছিলেন পাপিয়া। আর এবার পাল্টা কাউন্সিলরকে আক্রমণ করে তৃণমূল নেতার দাবি, কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন পাপিয়া। শুধু তাই নয়, ওই পুলিশের পদের প্রভাব খাটিয়ে ওয়ার্ড থেকে লাখ টাকা তোলাবাজির চেষ্টাও করেন পাপিয়া। এমনটাই অভিযোগ প্রতীকের।
জানা গিয়েছে, প্রথমে দক্ষিণ ২৪ পরগনার লক্ষ্মীকান্তপুরে বসবাস করতেন পাপিয়া ও তার পরিবার। তার বাবা কলকাতা পুলিশের কর্মী ছিলেন। পরে তারা রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে চলে আসেন। ২০১৬ সালে তৃণমূল থেকে সেই ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর হন প্রতীক। সেই সময় পাপিয়ার বাড়ির সামনে পুরসভার ড্রেন তদারকির কাজে গিয়েই নাকি দু’জনের প্রথম সাক্ষাৎ।
আরও পড়ুন: ‘বেস্ট কেপ্ট ডিস্ট্রিক্ট অফ ভোট লুট মডেল’! অভিষেকের ডায়মন্ড হারবারকে নয়া তকমা শুভেন্দুর
প্রতীকের সঙ্গে বন্ধুত্বকে কাজে লাগিয়ে রাজনীতিতে যোগাযোগ দেন পাপিয়া। পুরভোটে লড়ে জয়লাভ করেন। বহু অনুষ্ঠান, দলীয় কর্মসূচীতেও দুজনকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছে বলে জানা যায়। প্রতীকের দাবি, পুজোর পর থেকেই তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে। অন্যদিকে পাপিয়ার অভিযোগ, ‘‘২০২০ সালে করোনা পরবর্তী সময় থেকে প্রতীক দে নামে যুব তৃণমূলের ওই নেতা প্রতীক দে ও আরও কয়েক জন তৃণমূল নেতা দুর্নীতিগ্রস্থ কাজের সঙ্গে যুক্ত। নিজেদের অসাধু কাজের জন্য তাদের শিখণ্ডি হিসাবে তারা আমার নাম ব্যবহার করা শুরু করেন। আমার নাম করে টাকা তোলা,খাসজমি দখল থেকে শুরু করে বিভিন্ন অসাধু কাজ চলতে থাকে।’’
তার কথায়,’ হঠাৎ একদিন প্রতীক আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। আমি তা প্রত্যাখ্যান করি তবে তারপর থেকেই নানা ভাবে আমাকে বিরক্ত করতে শুরু করেন ওই তৃণমূল নেতা। অপদস্থ করার সীমা ছাড়িয়ে যায়। গভীর রাতে মত্ত অবস্থায় লোকজন নিয়ে বাড়িতে পর্যন্ত ঢুকে গালাগালি এবং খারাপ ব্যবহার করা।’
এখানেই শেষ নয়, পাপিয়ার আরও অভিযোগ, তার কাছ থেকে প্ৰতি মাসে ৫০ হাজার টাকা করে ভাগ দেওয়ার প্রস্তাব দেয় প্রতীক। তার কাছে সেই ঘটনার প্রমাণ আছে বলেও দাবি করেছেন কাউন্সিলর। তার কথায় যেখানে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী নারী ক্ষমতায়নের উপর জোর দিচ্ছেন, তখন প্রতীকের মতো নেতারা মহিলাদের অপদস্থ করে চলেছে। এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
অন্যদিকে, প্রতীকের দাবি,’ কথা দিয়েও কথা রাখেনি পাপিয়া। উনি কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। পুজোর সময় দেশের বাড়ি যাওয়ার নাম করে তার সঙ্গে দেখাও করেন পাপিয়া। এরপর থেকেই নাকি দু’জনে একসাথে ঘুরতে যান। সেই আধিকারিক নাকি পাপিয়ার বাড়িতে দীর্ঘ সময় কাটান। ‘ প্রতীক বলেন,’ দামি গাড়ি চড়ছেন, উইক এন্ডে পার্টি করছেন। ওয়ার্ডের কাজে ওনার মন নেই। আমাকে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেও অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে বলে আমার বিরুদ্ধে এখন মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন কাউন্সিলর।’’