নাগরিকত্ব না পেয়ে কীভাবে ভোটার তালিকায় নাম? জন্মদিনেই আদালতের নোটিস পেলেন সোনিয়া গান্ধী

Published on:

Published on:

Follow

বাংলাহান্ট ডেস্ক: জন্মদিনের দিনই বিরাট দুঃসংবাদের সম্মুখীন কংগ্রেসের সংসদীয় দলনেত্রী সোনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi)। বহু বছর ধরে চলতে থাকা নাগরিকত্ব ও ভোটার তালিকা–সংক্রান্ত বিতর্ক ফের নতুন মোড় নিল। দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টের তরফে আইনি নোটিস পাঠানো হল সোনিয়া গান্ধীকে। আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, ১৯৮০ সালের ভোটার তালিকায় সোনিয়ার নাম কীভাবে যুক্ত হয়েছিল, এবং তখন তাঁর নাগরিকত্বের অবস্থা ঠিক কী ছিল?—এই প্রশ্নের জবাব তাঁকে দিতে হবে। নাগরিকত্ব সংক্রান্ত অবস্থান ও ব্যাখ্যা জানতে চেয়ে সোনিয়ার পাশাপাশি দিল্লি পুলিশকেও নোটিস পাঠানো হয়েছে।

নাগরিকত্ব সংক্রান্ত মামলায় ফের আইনি বিপাকে সোনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi)

বিতর্কের মূল সূত্র ১৯৮০ সালের একটি ভোটার তালিকা। বিজেপি আইটি সেল প্রধান অমিত মালব্য কিছুদিন আগে তাঁর ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে সেই তালিকার একটি ছবি প্রকাশ করেন। সেখানে দেখা যায়, ১৯৮০ সালে দিল্লির এক বুথের ভোটার তালিকায় সোনিয়া গান্ধীর (Sonia Gandhi) নাম রয়েছে। মালব্য দাবি করেন, নাগরিকত্ব না থাকা সত্ত্বেও তালিকায় সোনিয়ার নাম যুক্ত করা হয়েছিল। তাঁর আরও অভিযোগ, ১৯৮২ সালে জনগণের প্রতিবাদের মুখে সেই নাম বাদ দেওয়া হলেও ১৯৮৩ সালের জানুয়ারি মাসে ফের নাম তোলার প্রক্রিয়া হয়, যা তিনি ‘অবৈধ’ বলে উল্লেখ করেন। মালব্যের বক্তব্য অনুযায়ী, সোনিয়া ১৯৮৩ সালের এপ্রিল মাসে ভারতের নাগরিকত্ব লাভ করেন, অথচ তার আগেই বিভিন্ন সংশোধিত তালিকায় তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

আরও পড়ুন:দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েই হলেন CEO! তৈরি করেছেন নিজের ব্র্যান্ডও, নজির গড়লেন কেরালার এই মহিলা

এই অভিযোগের ভিত্তিতে আগেই দিল্লির এক ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়েরের আবেদন করা হয়েছিল। তবে সেই আদালত আর্জি খারিজ করে জানায়, নির্বাচন কমিশনের অধিকারভুক্ত বিষয়ে বিচার বিভাগীয় হস্তক্ষেপ করা যায় না। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপত্তি তুলে রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে যান আইনজীবী বিকাশ ত্রিপাঠী। তাঁর দাবি, ১৯৮২ সালে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার পর ১৯৮৩ সালে যে তালিকায় সোনিয়ার (Sonia Gandhi) নাম ফের দেখা যায়, তা জাল নথির মাধ্যমে করা হয়েছিল। তাঁর অভিযোগ, নাগরিকত্ব সংক্রান্ত নথি ও ভোটার তালিকা সংশোধনের ক্ষেত্রে কোনও না কোনওভাবে জালিয়াতি করা হয়েছে, এবং এ নিয়ে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মামলা দায়েরের অনুমতি দেওয়া উচিত।

রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনা করে সোনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi) ও দিল্লি পুলিশকে নোটিস পাঠিয়েছে। আদালত জানতে চেয়েছে, ওই সময় কোন নথির ভিত্তিতে তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল, এবং সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়ায় কোনও অসঙ্গতি বা বেআইনি কার্যকলাপ ছিল কি না। এখন আদালতের পরবর্তী শুনানিতে সোনিয়ার ব্যাখ্যা ও দিল্লি পুলিশের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কংগ্রেস শিবির অবশ্য অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছে, যদিও মামলার অগ্রগতি পরিস্থিতিকে নতুন দিক দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

Sonia Gandhi receives court notice on her birthday.

 

আরও পড়ুন:জীবিত মানুষকে মৃত দেখানো হচ্ছে? SIR ইস্যুতে তুমুল ক্ষোভ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন…

ঘটনাচক্রে যেদিন নোটিস পাঠানো হল, সেদিনই সোনিয়া গান্ধীর (Sonia Gandhi) জন্মদিন। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ শাসকদলের বিভিন্ন শীর্ষনেতা তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। দেশের নানা প্রান্তে কংগ্রেস নেতারাও তাঁর জন্মদিন পালন করেছেন। তবে শুভেচ্ছায় ভরা দিনেই আইনি বিতর্কের নতুন চাপ সোনিয়ার রাজনৈতিক যাত্রায় ছায়া ফেলেছে বলেই পর্যবেক্ষকদের মত।