বাংলাহান্ট ডেস্ক: আশঙ্কাই সত্যি হল। বড়সড় বিপাকে পড়লেন অভিনেতা সোনু সূদ (sonu sood)। গত তিনদিন ধরে তাঁর অফিস ও বাড়িতে লাগাতার আয়কর দফতরের তল্লাশি দেখে সহজেই অনুমান করা গিয়েছিল বড় বিপদে ফাঁসতে চলেছেন সোনু। প্রথমে সাধারন সার্ভের দোহাই দিলেও পরে আয়কর দফতরের আধিকারিকরা বিষ্ফোরক অভিযোগ আনেন অভিনেতার বিরুদ্ধে।
করোনা কালে গত এক বছর ধরে নাগাড়ে মানুষের সাহায্য করে চলেছেন সোনু সূদ। গোটা দেশ যখন গৃহবন্দি হয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা চাক্ষুষ করছিল তখন সোনুই পথে নেমেছিলেন তাদের সাহায্যের জন্য। কোনো রকম রাজনৈতিক সাহায্য ছাড়াই লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়িতে সুরক্ষিত পৌঁছে দিয়েছিলেন। চিকিৎসার জন্য সাহায্য হোক বা চাষের জন্য ট্রাক্টর যেই সাহায্য চেয়েছেন কাউকে ফেরাননি সোনু। তাঁর বিরুদ্ধেই কিনা ২০ কোটি টাকা কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ আনল আয়কর দফতর!
গত বুধবার হঠাৎ করেই সোনুর মুম্বইয়ের অফিসে এসে উপস্থিত হন আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। শুরু হয় খানাতল্লাশি। অফিস ছাড়াও সোনুর সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন আরো ছয়টি জায়গাতেও চলেছে আয়কর দফতরের নজরদারি। তবে এদিন আয়কর দফতরের তরফে জানানো হয়েছিল এটা কোনো রেইড নয়। দফতরের তরফে শুধু সার্ভে করা হচ্ছে।
কিন্তু ২০ ঘন্টা কেটে গেলেও থামার নাম নেয়নি সেই ‘সার্ভে’। সোনুর অফিস সহ আরো ছয় জায়গায় তল্লাশি চালানোর পর বৃহস্পতিবার অভিনেতার মুম্বইয়ের বাড়িতেও হানা দেয় আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। জানা গিয়েছিল, মূলত একটি লখনউয়ের আবাসন সংস্থার সঙ্গে করা সোনুর একটি চুক্তির ব্যাপারেই এত তল্লাশি।
এরপরেই শুক্রবার অভিযোগ ওঠে ২০ কোটি টাকা কর ফাঁকি দিয়েছেন সোনু। বিদেশি সংস্থার থেকে ২.১ কোটি টাকা আর্থিক অনুদান গ্রহণ করেছে অভিনেতার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এতে বিদেশি অনুদান সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘিত হয়েছে বলে অভিযোগ আয়কর দফতরের তরফে।
সদ্যই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে দেখা করে বৈঠক করেন সোনু। এরপরই যৌথ ভাবে সাংবাদিক বৈঠক করে সোনু এবং কেজরিওয়াল ঘোষনা করেন দিল্লি সরকারের প্রস্তাবিত ‘ভারত কে মেন্টর’ কর্মসূচীতে কাজ করবেন অভিনেতা। তাঁকে পড়ুয়াদের মেন্টরশিপ প্রোগ্রামের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিয়োজিত করা হয়েছে।
এরপরেই আচমকা আয়কর দফতরের হানা। দুটোর মধ্যে সংযোগ সূত্র রয়েছে বলেই সন্দেহ অনেকের। অতীতে একাধিক বার সোনুর রাজনীতিতে যোগদানের কথা উঠলেও প্রতিবারই উড়িয়ে দিয়েছেন অভিনেতা। শেষমেষ কেজরিওয়ালের সঙ্গে তাঁর বৈঠক নিয়ে অনেকেই মনে করছেন আম আদমি পার্টিতেই যোগ দিতে চলেছেন সোনু। তাই আচমকা এই আয়কর হানাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলেই মনে করছেন অনেকে। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি।