‘ট্রেনে দুটো টয়লেটের মাঝের জায়গায় শুতেন সোনু, পরিযায়ী শ্রমিকদের কষ্ট উনি বোঝেন’

বাংলাহান্ট ডেস্ক: পরিযায়ী শ্রমিকদের (migrant workers) নিজ রাজ‍্যে ফেরানোর জন‍্য উদ‍্যোগী হয়েছেন বলি অভিনেতা সোনু সূদ (sonu sood)। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন‍্য নিজের খরচায় বাস ভাড়া করে তাদের নিজেদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব‍্যবস্থা করেছেন তিনি। সবটাই সরকারের অনুমতি নিয়েই তিনি করেছেন বলেও জানা গিয়েছে। একথা সকলেই জানেন। কিন্তু এই মহান কাজের প্রেরণা কোথা থেকে পেলেন সোনু? ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের কষ্টই বা এত গভীর ভাবে কিকরে বুঝতে পারলেন তিনি? আসলে সবটাই সোনুর বাবা মায়ের শিক্ষা ও তাঁর ব‍্যক্তিত্বর নিদর্শন।
ট্রেনের দুই টয়লেটের মাঝে শুতেন সোনু
একটা সময় খুবই কষ্ট করে কেরিয়ার তৈরি করেছেন সোনু। তাঁর বাবা মা আজ জীবিত নেই। অভিনেতার দিদির বক্তব‍্য, সম্ভবত নিজের অভিজ্ঞতা দিয়েই শ্রমিকদের কষ্ট বুঝতে পারেন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে সোনুর দিদি জানান, নাগপুরৈ যখন সোনু ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তেন তখন ট্রেনের কোচের দুটি টয়লেটের মাঝের জায়গায় শুয়ে বাড়ি ফিরতেন। বাবা টাকা পাঠালেও তিনি যতটা সম্ভব বাঁচিয়ে রাখতেন। বাবার পরিশ্রমের উপার্জনের কদর করতেন তিনি। যখন মুম্বইতে মডেলিংয়ের কেরিয়ার তৈরি করছিলেন সোনু তখন এমন ঘরে থাকতেন যেখানে শুয়ে পাশ ফেরার মতো জায়গা ছিল না।

images 2020 06 04T133529.606
পরিবারকে জানতে দেননি
ট্রেনে কিভাবে ফেরেন তা কখনোই পরিবারকে জানতে দেননি সোনু। কিন্তু যখন তাঁর প্রথম ছবি মুক্তি পায় তখন তিনি বাড়িতে জানান, আজ ট্রেনের সিটে বসে বাড়ি ফিরেছেন। এরপরেই তিনি জানান কিভাবে এতদিন ট্রেনে কাগজের ওপর বসে ফিরেছেন তিনি।
বাবা মায়ের আদর্শ বজায় রাখছেন সোনু
সোনুর দিদি জানান, বাবা মায়ের খুবই অনুরক্ত ছিলেন সোনু। এখনো তিনি যা যা করছেন সবই তাঁদের গর্বিত করার জন‍্যই। বাবা মা যা শিখিয়েছেন তাই এখন নিজের জীবনে প্রয়োগ করছেন সোনু। তাঁর দিদি আরও জানান, তাঁদের মা কলেজে ইংরেজি পড়াতেন। তাঁর কাছে যে দরিদ্র ছাত্ররা পড়তেন তাদের থেকে কখনো বেতন নিতেন না তিনি।

images 2020 06 04T133506.375
অন‍্যের কষ্ট দেখতে পারেন না
সোনুর দিদি জানান, তাঁদের বাবার দোকানৈর কর্মচারীদেরও সাহায‍্য করতেন সোনু। তাদের চিকিৎসার খরচ ও অন‍্যান‍্য দরকারে সাহায‍্য করতেন তিনি।
চুপচাপ বসে থাকতে পারতেন না
সোনু সূদ বলেন, “আমি পরিযায়ী শ্রমিকদের কষ্ট দেখতে পারছিলাম না। আমার মা আমাকে যা শিখিয়েছে তারপর চুপচাপ বসে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি বহুবার ট্রেনে রিজার্ভেশন ছাড়াই এসেছি। যখন আমি রাস্তায় পরিযায়ী শ্রমিকদের দেখলাম ওদের সঙ্গে নিজের মিল খুঁজে পাচ্ছিলাম।”
১৮০০০ শ্রমিককে বাড়ি পাঠিয়েছেন
সোনু জানান, এখনও পর্যন্ত ১৮০০০ শ্রমিককে বাড়ি পাঠিয়েছেন তিনি। প্রথমে ৩৫০ জনকে বাসে কর্ণাটক পাঠান তিনি। তারপর থেকে আর থামেননি। মুম্বইয়ের জুহুতে তাঁর হোটেলটি চিকিৎসাকর্মী ও নার্সদের বিশ্রাম নেওয়ার জন‍্য খুলে দিয়েছেন সোনু।
‘সোনু সূদ শ্রীবাস্তব’ সবসময় মনে রাখবেন
সোনুকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল কিসে সবথেকে বেশি খুশি হয়েছেন তিনি। উত্তরে অভিনেতা জানান, এক মহিলা পরিযায়ী শ্রমিক নিজের সদ‍্যোজাত সন্তানের নাম রাখেন তাঁর নামে। এই বিষয়টা তাঁর মনকে ছুঁয়ে গিয়েছে।

Avatar
Niranjana Nag

সম্পর্কিত খবর