বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধান। ব্যক্তিগত সম্পর্কের জেরে পারস্পরিক রসায়নে ধরে ফাটল। এরপরেই তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) ছেড়ে বিজেপিতে (BJP) যোগদান করেন একদা কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovan Chatterjee)। সঙ্গী তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দোপাধ্যায় (Baisakhi Banerjee)। তবে মাত্র কিছু সময়ের মধ্যেই কাটে মোহ। পুনরায় একবার তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরতে চেয়ে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছেও যান তারা আর এবার দুর্নীতি প্রসঙ্গে মমতার পাশে দাঁড়িয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।
গতকাল একটি অনুষ্ঠানে শোভন এবং বৈশাখীর বাড়িতে পৌঁছে যান তৃণমূল নেতা মদন মিত্র। নাচ-গান এবং আড্ডায় জমে ওঠে আসর। এরপরে দুর্নীতি থেকে শুরু করে অন্যান্য একাধিক প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে দেখা যায় তাদের। পরবর্তীতে উঠে আসে দুর্নীতি প্রসঙ্গ।
সাম্প্রতিক সময়ে এসএসসি থেকে শুরু করে প্রাথমিক টেট, কয়লা পাচার থেকে গরু পাচার সহ একাধিক মামলায় জেরবার তৃণমূল কংগ্রেস। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডল রয়েছেন হেফাজতে। আবার অপরদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে একের পর এক কটাক্ষ ছুড়ে দিয়ে চলেছে বিরোধী দলগুলি। সেই প্রসঙ্গে অবশেষে মুখ খুললেন শোভন।
তিনি বলেন, “মাস স্কেলে আমরা শুনছি। তবে আমার মনে হয়, তদন্ত যতক্ষণ না শেষ হচ্ছে ততক্ষণ আমাদের অপেক্ষা করা প্রয়োজন। সবাই বর্তমানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়ী করছেন। আসলে মানুষ মাথা দিয়ে রাজনীতি করে। আর দিদি করে বুক দিয়ে। আমি আগে তাঁকে এই প্রসঙ্গে বলতাম। অন্যেরা ফিতে দিয়ে ৫৬ ইঞ্চি মাপে। কিন্তু মমতার হৃদয়ের পরিধি অনেক ব্যাপ্ত। তাই আমি সকলকে বলতে চাই, তোমরা এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকো যার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে কুয়োয় পড়তে হবে।”
পরবর্তীতে মদনকে পাশে নিয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আজকে যাদের নামে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে, তার জন্য তারাই একমাত্র দায়ী। আমি আর মদনদা মিলে এত বছর ধরে রাজনীতি করে চলেছি। আমরা এর প্রতি বদ্ধপরিকর। আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছি। তাদের সকল সুবিধা দিই। তবে আমার আশা, পরবর্তী সময় দল এই কঠিন সময় থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে।”
শোভনের সুরে সুর মিলিয়ে মদন বলেন, “যে যা খুশি করবে, দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়বে আর সব সামলাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এটা অনুচিত। ওঁনার প্রতি অন্যায় করা হয়ে চলেছে। এছাড়া শোভন এর আগে বলেছে, ও আর বৈশাখী লিভ ইন করছে। এ ক্ষেত্রে কারোর কোন কথা বলা ঠিক নয়। আমরা বাঙালিরা আসলে অন্যের ব্যাপারে বড্ড মাথা গলাই। পার্থদার জন্য আমার খারাপ লাগছে। ও যদি নিজের ব্যাপারে মাথা ঘামাতো, তাহলে পস্তাতে হত না।”