সবাই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে শুধুমাত্র শ্রীলেখা দিদি বাদে!

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আজ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে হুগলীর সাহাগঞ্জে তৃণমূলে যোগ দেন কাঞ্চন মল্লিক, রাজ চক্রবর্তী, সায়নী ঘোষ, জুন মালিয়া, মানালি দে সহ আরো অনেকে। এদের মধ্যে অন্যতম হলেন অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। কারণ একসময় তিনি বামপন্থী বলেই পরিচিত ছিলেন। তবে রাস্তায় নেমে কোনওদিনও রাজনীতি করেননি তিনি। কিন্তু রাজ্য রাজনীতিতে মাঝেসাঝে মাথা ঘামাতে দেখা গিয়েছিল ওনাকে।

একসময় ভূতের ভবিষ্যৎ সিনেমা আটকে দেওয়ার প্রতিবাদে সায়নীকে অরাজনৈতিক ভাবে পথে নেমে প্রতিবাদ জানাতে দেখা গিয়েছিল। সেই সময় তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তুলোধোনাও করেছিলেন। তবে সায়নী ঘোষ প্রচারে আসেন কিছুদিন আগে থেকে। সম্প্রতি তিনি বাংলার একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমের টক শোয়ে যোগ দিয়ে বলেছিলেন, ‘বাইকে করে চেঁচিয়ে জয় শ্রী রাম বলা বাংলার সংস্কৃতি না।” তিনি এই মন্তব্য করে বিজেপির নিশানায় চলে আসেন।

এরপর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় কর্মী-সমর্থক এবং ছোটবড় নেতারা ওনাকে নিয়ে মন্তব্য করা শুরু করে দেন। এমনকি অনেক সোশ্যাল মিডিয়ায় ওনাকে হুমকিও দেওয়া হয়। তবে দমবার পাত্রী নন সায়নী। তিনি নিজের মন্তব্য নিয়ে ক্ষমা চাননি আর বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। এমনকি বিজেপির বরিষ্ঠ নেতা তথা ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায়ের সঙ্গে সমানে সমানে বাগযুদ্ধও করে গিয়েছেন।

এরপর সায়নীর পাশে দাঁড়ান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সায়নীর পাশে দাঁড়িয়ে বিজেপিকে হুঁশিয়ারিও দেন। মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়ানোর পর সায়নী ঘোষকে তৃণমূল নেতা মদন মিত্রর সঙ্গে একটি অরাজনৈতিক মঞ্চেও দেখা যায়। সেখানে সায়নী মদন মিত্রের প্রশংসাও করেন। এবং সায়নী এও বলেন যে, মদন মিত্র হল বাংলার ক্রাশ। আর আজ বাংলার ক্রাশ মদন মিত্রের দলে যোগ দেন সায়নী ঘোষ।

সায়নী ঘোষ তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর বাংলা চলচ্চিত্র জগতের আরেকজন খ্যাতনামা অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র সায়নীকে নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেন। তিনি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট করে লেখেন, ‘Not expected Sayani, tuio sold, khelte neme geli? Very sad”। শ্রীলেখা নিজের পোস্টের মাধ্যমে এটাই বোঝাতে চেয়েছেন যে, সায়নী বিক্রি হয়ে গিয়েছে।

বলে রাখি, কিছুদিন আগে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন বিজেপির নেতা অনির্বাণ গঙ্গোপাধ‍্যায়। বিজেপির নেতা সেদিন অমিত শাহের উপর লেখা একটি বই বুম্বাদাকে উপহারও দিয়েছিলেন। এরপর থেকেই গুঞ্জন শুরু হয় যে, প্রসেনজিৎ বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। যদিও চারিদিকে হইচই রব ওঠার পর বুম্বাদা নিজেই খোলসা করেন যে, তিনি কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দিচ্ছেন না।

তবে বুম্বাদার খোলসা করার পরেও কমেনি শ্রীলেখা মিত্রর ক্ষোভ। তিনি একটি পোস্ট করে লেখেন, ‘ ‘আমার নিন্দুকেরা যারা আমায় ভুল বা মিথ‍্যেবাদী প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন আশা করি খানিকটা উত্তর পেলেন।’ সঙ্গে হ‍্যাশট‍্যাগ দিয়ে লিখেছেন ‘সবই মায়া’। এখানেই শেষ না। আরো একটি স্ট‍্যাটাস দিয়ে অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘সেল সেল সেল সেলেব দের সেল লেগেছে’।

প্রসঙ্গত, শ্রীলেখা মিত্রর মতে সমস্ত সেলিব্রেটিরাই বিক্রি হয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু শ্রীলেখা মিত্র বিক্রি হননি। তিনি বামপন্থী ছিলেন, আছেন আর থাকবেন। আর কোনও তারকা যদি বাম-কংগ্রেস ছাড়া অন্য কোনও দলে যোগ দেন, তাহলে তিনি সরাসরি তাঁর বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে বিক্রি হওয়ার অভিযোগ করে দেবেন। উনি একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও সায়নী, যশ, হিরণ অথবা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের মতো সেলেবরা কোনও দলের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন না।


Koushik Dutta

সম্পর্কিত খবর