বাংলাহান্ট ডেস্ক: গত বারো দিনে টলিপাড়ার উপর দিয়ে যেন ঝড় বয়ে গিয়েছে। মাত্র এই কদিনের মধ্যেই তিন তিনটি মৃত্যুর খবর এসেছে। পল্লবী দে (Pallabi Dey), বিদিশা দে মজুমদার (Bidisha Dey Majumder), মঞ্জুষা নিয়োগী নামগুলো আর অপরিচিত নয় কারোর কাছে। প্রত্যেকের বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয়েছে ঝুলন্ত মৃতদেহ। হঠাৎ করে তরুণী মডেল অভিনেত্রীদের এমন প্রবণতার কারণ কী? মতামত রাখলেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র (Sreelekha Mitra)।
টলিউডের অন্যতম অভিজ্ঞ অভিনেত্রীদের মধ্যে একজন তিনি। অনেক উত্থান পতনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন। মানুষ কম দেখেননি। শ্রীলেখার মতে, তরুণ অভিনেতা অভিনেত্রীরা সোশ্যাল মিডিয়ার ইঁদুর দৌড়ে আটকে পড়ছেন, হাতে কাঁচা পয়সা পেয়ে যাচ্ছেন, উপরন্তু রয়েছে সম্পর্কের টানাপোড়েন। সব মিলিয়ে জীবন শেষ করে দেওয়ার পথে হাঁটছেন তরুণ অভিনেতা অভিনেত্রীরা।
দ্য ওয়ালের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে শ্রীলেখা বলেন, এখন জনপ্রিয়তার মাপকাঠি তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়া। কার কত ফলোয়ার, কে বেশি লাইক, ভিউ পেলেন তা নিয়ে চলতে থাকে রেষারেষি। এই দৌড়ে টিকে থাকতে না পারলেই ঘিরে ধরে অবসাদ। পাশাপাশি বিনোদন দুনিয়ার অনেকেই মফস্বল থেকে কর্মসূত্রে আসেন শহরে। এখানকার ভিন্ন জীবনযাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলছেন অনেকে।
পল্লবীর মৃত্যুর পর অভিযোগের আঙুল উঠেছে তাঁর লিভ ইন সঙ্গী সাগ্নিক চক্রবর্তীর দিকে। অনেকে দাবি করেছেন, সাগ্নিকের একাধিক অতীত সম্পর্কের কথা জেনেশুনেও পিছিয়ে আসেননি পল্লবী। আবার বিদিশার মৃত্যুর পর তাঁর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী দাবি করেছেন, তিনিও পাঁচ মাস ধরে অনুভব বেরার সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন।
নিজের মুখেই বিদিশা স্বীকার করেছিলেন, মা বাবার থেকেও অনুভবকে বেশি ভালবাসতেন তিনি। অথচ অনূভবের দাবি, তিনি শারীরিক সম্পর্ক করলেও কখনো ভালবাসেননি বিদিশাকে। অর্থাৎ সেই আবার সম্পর্কের টানাপোড়েন।
এই প্রসঙ্গে শ্রীলেখ বলেন, লিভ ইন করা বিজ্ঞান সম্মত। কিন্তু অনেকেই সম্পর্ক হ্যান্ডল করার জন্য মানসিক ভাবে পরিণত নন। সেই সঙ্গে সমাজের মুখ বেঁকানো তো আছেই। সম্পর্ক ভাঙলে ছেলে মেয়ে উভয়ের দিকেই আঙুল ওঠে। কেচ্ছা তৈরি হয়। চাপ সামলাতে পারেন না অনেকেই।
এছাড়াও উঠতি অভিনেত্রীদের এই পরিণতির জন্য টাকার যোগানকেও দায়ী করছেন শ্রীলেখা। তাঁর বক্তব্য, এই অভিনেত্রী মডেলরা হঠাৎ করেই বিপুল পরিমাণ টাকা পেয়ে যাচ্ছেন হাতে। বিলাসবহুল জীবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছেন। তারপর যখন টাকার যোগানটা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তখন জীবনটাই শেষ করে দিচ্ছেন। এই পরিস্থিতি যাতে না হয় তার জন্য শুটিং ইউনিটে মনস্তাত্বিক মূল্যায়ণের ব্যবস্থা রাখা উচিত বলে পরামর্শ শ্রীলেখার।