চিনের সঙ্গে বন্ধুত্বের খেসারত! পাকিস্তানে সংকটের মধ্যে শ্রীলঙ্কাতে বিদ্যুতের দাম নিয়ে হাহাকার

বাংলাহান্ট ডেস্ক: চিনের (China) পাল্লায় যেই পড়েছে, সেই কাঙাল হয়েছে। এটা আমরা বলছি না। তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তান (Pakistan) ও শ্রীলঙ্কা (Sri Lanka) চিনের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেছিল। শি জিনপিংয়ের (Xi Jinping) দেশের থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়েছিল দু’দেশই। কিন্তু দেখা গিয়েছে, সেই ঋণ শোধ করা তো দূর, আজ দু’দেশেরই কাঙাল অবস্থা। চূড়ান্ত একটি অর্থনৈতিক সঙ্কটের মাঝে দাঁড়িয়ে রয়েছে পাকিস্তান। একইসঙ্গে শ্রীলঙ্কাতেও গৃহযুদ্ধ লেগে গিয়েছিল। সেখানেও একই পরিস্থিতি দেখা গিয়েছে।

পাকিস্তানের মতোই অবস্থা থেকে গত বছর শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি পুরোপুরিভাবে ভেঙে পড়ে। সেখানে লেগে যায় একটি গৃহযুদ্ধ। সেই থেকে এখনও অবস্থার উন্নতি হয়নি সেখানে। শ্রীলঙ্কাও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (IMF) থেকে ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু পাকিস্তানের মতোই তাদেরকেও বারবার ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে অর্থনীতিকে বাঁচাতে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ানো হয়েছে সেখানে।

pakistan economic crisis

IMF-এর সাহায্য পেতে বিদ্যুতের দাম ২৭৫ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকার। এর আগে একইভাবে পাকিস্তানেও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ানো হয়েছিল। মুদ্রা তহবিলের থেকে বেল আউট প্যাকেজ পেতেই এই পদক্ষেপ করেছে শ্রীলঙ্কা সরকার। গত বছর শ্রীলঙ্কার ৩ কোটিরও বেশি মানুষ খাবার ও জ্বালানির অভাবে ভুগেছেন। মাসের পর মাস দিনের অধিকাংশ সময় ধরে বিদ্যুৎ থাকত না সেখানে।

শ্রীলঙ্কা সরকার তাদের ৪৬ বিলিয়ন ডলারের ঋণ শোধ করতে পারেনি। এবার তারা IMF-এর একটি বেল আউট প্যাকেজ নেওয়ার চেষ্টা করছে। না হলে তাদের অর্থনীতিতে পুরোপুরি ধস নামবে। ইতিমধ্যে শ্রীলঙ্কার রাজকোষও খালি হয়ে গিয়েছে। সে দেশে সাধারণ গৃহস্থদের ন্যূনতম প্রতি ঘণ্টায় কিলোওয়াট প্রতি ৩০ টাকা করে দিতে হচ্ছে। সরকারের তরফে জানানো হচ্ছে, দাম বাড়ানোর ফলে দৈনিক আড়াই ঘণ্টার লোডশেডিং থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

sri lanka crisis

উল্লেখ্য, চিন যখনই কোনও দেশের ‘পাশে’ দাঁড়িয়েছে, সেই দেশই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। যেমন গত বছর অবধি তাদের থেকে ৫১ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। প্রধানমন্ত্রী মহেন্দ্র রাজাপক্ষ (Mahendra Rajapaksha) থাকার সময়েই এই ঋণ নিয়েছিল প্রতিবেশী দেশটি। শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপের দিকে গেলেও তারা এই অর্থ দিয়ে বন্দর, বিমান বন্দর ও বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি করে গিয়েছে। 

অন্যদিকে, পাকিস্তান ৩০ শতাংশ বিদেশি ঋণ চিনের থেকে নিয়েছে। এর বদলে চিন পাকিস্তানের জমি ব্যবহার করছে। চিনের একাধিক প্রকল্প পাকিস্তানে তৈরি হচ্ছে। এর থেকে পরিষ্কার যে চিনের থেকে এত বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে ভুল খাতে খরচ করেছে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। তারপর দু’টি দেশই অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়েছে। অবস্থা এমনই, এখন অন্যান্য দেশের কাছে হাত পেতেও মিলছে না সাহায্য।

Avatar
Subhraroop

সম্পর্কিত খবর