বাংলা হান্ট ডেস্কঃ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে পড়ছে। এক মাসের মধ্যে এই নিয়ে দ্বিতীয় বারের জন্য গোটা দেশ জুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হলো। গতকাল মধ্যরাত (৭ এপ্রিল) থেকেই দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে।জরুরি অবস্থা চলাকালীন দেশ জুড়ে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে এবং সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা আন্দোলনকে শিথিল করার জন্য সেনাবাহিনী এবং পুলিশ প্রশাসনকে সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।
সম্প্রতি, শ্রীলঙ্কা চরম অর্থনৈতিক সংকটে ডুবে রয়েছে। তেল, রান্নার গ্যাস সহ একাধিক প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম হু-হু করে বেড়ে চলেছে দেশে। এই কারণেই বর্তমানে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে দেশের জনগণ। সম্প্রতি, দেশে গোটা মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করলেও প্রেসিডেন্ট হিসেবে রাজাপক্ষে তাঁর নিজের পদ আঁকড়ে পড়ে রয়েছেন। বর্তমানে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ দেখিয়ে চলেছেন। এর আগেও দেশের অসংখ্য জনগণ একত্রিত হয়ে রাজাপক্ষের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এরপরই গত এপ্রিল মাসের ১ তারিখ থেকে গোটা দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। প্রায় দুই সপ্তাহ ব্যাপী সেই জরুরি অবস্থার চলার পর তা প্রত্যাহার করে নেয় সরকার। তবে তাতেও মানুষের ক্ষোভ থামানো যায়নি।
কিছুদিন যেতে না যেতেই বেশ কয়েকজন পড়ুয়া মিলে সংসদে গিয়ে আন্দোলন করতে থাকে। সেই আন্দোলনের তীব্রতা এতটাই ছিল যে শেষ পর্যন্ত সেখানে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস এবং জলকামানের ব্যবহার পর্যন্ত করতে হয়। আর দেশের জনগণের এহেন কর্ম কাণ্ডের জেরেই শেষ পর্যন্ত শুক্রবার মধ্যরাত থেকে পুনরায় একবার গোটা দেশ জুড়ে জারি হলো জরুরি অবস্থা। এই প্রসঙ্গে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র এ দিন জানান, “দেশের আইন শৃঙ্খলা বর্তমানে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। ফলে সেই পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং এছাড়াও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখার জন্যই বর্তমানে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হতে চলেছে।”
প্রসঙ্গত, ১ লা এপ্রিল থেকে প্রায় দুই সপ্তাহ ব্যাপী চলা জরুরি অবস্থায় শ্রীলঙ্কায় কয়েক হাজার আন্দোলনকারীদের মিলে রাষ্ট্রপতি দপ্তরের সামনে আন্দোলন করতে দেখা যায়। শেষ পর্যন্ত তাদের ঠেকাতে কয়েক হাজার পুলিশ কর্মীকে কঠোর ব্যবস্থা নিতেও দেখা যায়। তবে দ্বিতীয় বার জরুরি অবস্থায মাঝে দেশের পরিস্থিতির আদৌ কোনো রকম উন্নতি হয় কিনা, সে দিকে তাকিয়ে সকলে।