বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার একটি চাঞ্চল্যকর বিষয় সামনে এসেছে। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, ভারতের (India) চিরশত্রু চিন (China) এখন শ্রীলঙ্কায় (Sri Lanka) “স্ট্র্যাটেজিক সিপোর্ট” (Strategic Seaport) তৈরি করতে চলেছে। এমতাবস্থায়, সমুদ্রে চিনের তৈরি করা এই বিমানবন্দর ভারতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী দিনেশ গুণাবর্ধনে নিজেই চিনের এই “স্ট্র্যাটেজিক সিপোর্ট” নির্মাণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গুণাবর্ধনে বলেন, কলম্বো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং হাম্বানটোটা বন্দরকে “বিকাশ করার ক্ষেত্রে সহায়তা” করেছে বেজিং। এদিকে, শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী বুধবার জানিয়েছেন যে চিন বেজিংয়ে আলোচনার পর দ্বীপরাষ্ট্রটির কৌশলগত গভীর সমুদ্র বন্দর এবং রাজধানীর বিমানবন্দরের উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “চিন আমাদের সবচেয়ে বড় দ্বিপাক্ষিক ঋণদাতা।” মূলত, ওই দেশ শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক ঋণ থেকে ২.৯ বিলিয়ন ডলার IMF বেলআউট বজায় রাখতে সহায়তা করবে। তবে ঋণ পুনর্গঠনের বিষয়ে বেজিংয়ের অবস্থান জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি। কিন্তু শ্রীলঙ্কার আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে, চিন তার ঋণ কমাতে অনিচ্ছুক ছিল। কিন্তু এখন মেয়াদ বাড়াতে এবং সুদের হার সামঞ্জস্য করতে পারে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে ২০২২ সালে, শ্রীলঙ্কার প্রয়োজনীয় আমদানির অর্থায়নের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার অভাব ছিল এবং তার ৪৬ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক ঋণের ওপর সামগ্রিক ডিফল্ট ঘোষণা করে।
ভারতের সাহায্যের কথা ভুলে গেল শ্রীলঙ্কা: উল্লেখ্য যে ২০২২ সালে, শ্রীলঙ্কার ভেঙে পড়া অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে, তৎকালীন রাষ্ট্রপতি গোটাবায়া রাজাপাকসেকে কয়েক মাস বিক্ষোভের কারণে রাষ্ট্রপতি ভবন ছাড়তে হয়েছিল। এরপরে, ভারত IMF থেকে বেলআউট প্যাকেজ পেতে এবং বিদেশি সহায্য প্রদানের ক্ষেত্রে এগিয়ে ছিল। ভারত এখনও পর্যন্ত শ্রীলঙ্কাকে ৪ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার সাহায্য করলেও শ্রীলঙ্কা চিনের গুণগান গাইছে। গুণাবর্ধনের কার্যালয় জানিয়েছে চিনা প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, চিন “শ্রীলঙ্কার ঋণ পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় ক্রমাগত সহায়তা করবে এবং শ্রীলঙ্কাকে তার অর্থনীতির উন্নয়নে সহায়তা করবে”।
আরও পড়ুন: চালানের নামে মোবাইলে এসেছে মেসেজ? ভুলেও দেবেন না ফাইন! নাহলেই হবে বড় বিপদ
শ্রীলঙ্কা ৯৯ বছরের জন্য চিনকে হাম্বানটোটা বন্দর হস্তান্তর করেছে: এদিকে, দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার পর শ্রীলঙ্কায় জাপানি অর্থ সাহায্যে হওয়া কলম্বো বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ বন্ধ হয়ে যায়। জানিয়ে রাখি যে, ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কা বেজিংয়ের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগ বাড়িয়ে ১.১২ বিলিয়ন ডলারে ৯৯ বছরের লিজে একটি চিনা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানির কাছে হাম্বানটোটার দক্ষিণ সমুদ্র বন্দর হস্তান্তর করে।
আরও পড়ুন: “জোর কা ঝটকা….”, CSK-র কাছে হারের পর আরও একটি বড় ধাক্কা পেলেন শুভমান
এমতাবস্থায়, দ্বীপের দক্ষিণ উপকূলে হাম্বানটোটায় চিন পা রাখায় ভারত ও আমেরিকা উভয়ই উদ্বিগ্ন। বিষয়টি ভারত মহাসাগরে তাদের নৌশক্তি বাড়াতে পারে। যদিও শ্রীলঙ্কা জোর দিয়ে বলেছে যে তার বন্দরগুলি কোনো সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হবে না। এদিকে, নয়াদিল্লি হাম্বানটোটায় চিনা গবেষণা জাহাজগুলিকে ডাকার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে। ওই জাহাজগুলি গুপ্তচরবৃত্তির জন্য ব্যবহার হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।