বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। এর মধ্যে আবার শেষ হতে চলেছে বিতর্কিত শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ। এই পরিস্থিতিতে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আরও আট মাস সময় চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে স্কুল শিক্ষা পর্ষদ (SSC)।
কী বলেছে পর্ষদ (SSC)?
পর্ষদের বক্তব্য, নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। মেয়াদ না বাড়ালে বহু স্কুলে শিক্ষক সংকট তৈরি হতে পারে। সেই কারণেই শীর্ষ আদালতে এই আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। পর্ষদের তরফে আরও জানানো হয়েছে যে, কলকাতা হাইকোর্টে এসএসসি (SSC) নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক মামলা চলছে। সেই সব মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। এই আইনি জট কাটিয়ে উঠতেই সময় প্রয়োজন বলে দাবি পর্ষদের।
হাইকোর্টের বড় নির্দেশ
এর মধ্যেই শুক্রবার এসএসসি (SSC) নিয়োগ মামলায় গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অমৃতা সিনহা জানান, ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ নিতে হবে। যাঁদের বয়স পেরিয়ে যাওয়ার কারণে এতদিন ইন্টারভিউতে ডাকা হয়নি, তাঁদেরও ইন্টারভিউ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে আপাতত এই নির্দেশ শুধুমাত্র মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
ইন্টারভিউ নিয়ে আদালতের কড়া শর্ত
আদালত নির্দেশ দিয়েছে, ইন্টারভিউ শেষ হওয়ার পর সেই নম্বর মুখবন্ধ খামে আদালতে জমা দিতে হবে এসএসসি-কে (SSC)। পাশাপাশি ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া ভিডিওগ্রাফি করা হবে কি না, সে বিষয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাতে বলা হয়েছে কমিশনকে।
শুনানিতে মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানান, সংশ্লিষ্ট চাকরিপ্রার্থীরা ফর্ম পূরণ করেছিলেন, লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন এবং নথি যাচাইও হয়েছিল। কিন্তু পরে তাঁদের জানানো হয়, বয়সসীমা পেরিয়ে যাওয়ার কারণে ইন্টারভিউ নেওয়া হবে না। তাঁদের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী যোগ্য প্রার্থীদের বয়সজনিত ছাড় পাওয়ার কথা। কিন্তু এসএসসি (SSC) সেই ছাড় দেয়নি বলেই অভিযোগ তোলা হয়।
পর্ষদের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী জানান, সুপ্রিম কোর্টের শেষ পর্যবেক্ষণের পর আরও কিছু জটিল বিষয় সামনে এসেছে। সেগুলির সমাধান এখনও হয়নি। স্কুলগুলোর যাতে ক্ষতি না হয়, সেই কারণেই পর্ষদ সময় চেয়ে আবেদন করেছে। তবে অন্য পক্ষের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্তের অভিযোগ, এসএসসি (SSC) চাইলে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে পারত। তিনি দাবি জানিয়ে বলেন, ইচ্ছাকৃতভাবেই মেয়াদ বাড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ টিকিটের টাকা ফেরত থেকে গ্রেপ্তার, মেসি কাণ্ডে মমতাকে কাঠগড়ায় তুলে ৩ দফা দাবিতে সরব শুভেন্দু
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট এসএসসি-র (SSC) ২০১৬ সালের পুরো প্যানেল বাতিল করে দেয়। এর ফলে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী চাকরি হারান। সেই রায়ের পর শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে স্কুল সার্ভিস কমিশন। নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশের লিখিত পরীক্ষার ফল ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে। তবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে এখনও সময় লাগবে বলেই মনে করছে পর্ষদ।












