‘জোচ্চর, তোমাদের ফাঁসিতে চড়ানো উচিত’, হাইকোর্টের রায়ের পরই ঝাঁঝিয়ে উঠলেন অভিজিৎ

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এসএসসির নিয়োগ দুর্নীতি মামলার (SSC Recruitment Corruption case) মোট ২৫৭৫৩ চাকরিপ্রার্থীর নিয়োগ বাতিল করল কলকাতা হাইকোর্টের ( Calcutta High Court ) বিচারপতি বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি সব্বার রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ। আর এই ঐতিহাসিক রায়ের পরই সংবাদমাধ্যমের সামনে এই রায়কে পূর্ণ সমর্থন জানালেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Former Justice Abhijit Ganguly)।

‘জোচ্চর, তোমাদের ফাঁসিতে চড়ানো উচিত’- সোমবার SSC-র রায়ের পর টাকা দিয়ে চাকরি প্রাপকদের উদ্দেশে ঠিক এমন মন্তব্য করে ঝাঁঝিয়ে উঠলেন বর্তমানে তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ‘দুর্নীতি’ করে চাকরি পাওয়াদের উদ্দেশে অভিজিৎ বলেন, ‘জোচ্চর, তোমাদের ফাঁসিতে চড়ানো উচিত। আবার উচ্চারণ করছি, জোচ্চর, তোমাদের ফাঁসিতে চড়ানো উচিত।’

একই সাথে যোগ্য প্রার্থীদের জন্য ভগবানের কাছে প্রার্থনা করবেন বলে জানিয়েছেন অভিজিৎ। এই বিষয়ে প্রাক্তন বিচারপতি বলেন, ‘যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা সেই ২০১৬ সাল থেকে অপেক্ষায় রয়েছেন। আট বছর হয়ে গিয়েছে। তাদেরকে দ্রুত চাকরির জন্য প্রার্থনা করব।’ এমনকি যোগ্যদের জন্য মন্দিরে পুজো দেবেন বলেও জানিয়েছেন গঙ্গোপাধ্যায়।

প্রসঙ্গত, এই এসএসসি মামলায় সবার প্রথম অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। আর এতদিন পর হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চও সেই নির্দেশই বহাল রেখেছে। এদিন আদালতের নির্দেশ, এসএসসি সংক্রান্ত সমস্ত মামলার তদন্ত করবে সিবিআই। CBI তদন্ত করবে। যাকে প্রয়োজন তাকেই হেফাজতে নিতে পারবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। বেআইনিভাবে সুপার নিউমারারি পোস্ট করে চাকরি পাওয়াদের হেফাজতে নিতে পারবে সিবিআই।’

‘মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কোনো চাকরি বৈধ হওয়া উচিৎ নয়’। এসএসসি মামলার রায়ে এদিন স্পষ্ট করে জানাল কলকাতা হাইকোর্ট। এসএসসি মামলায় ২০১৬ সালের প্যানেলের সকলের চাকরি বাতিল করেছে আদালত। যারা মেয়াদ উত্তীর্ণ পদে চাকরি পেয়েছেন আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে ১২% সুদ সহ বেতন ফেরতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

abhijit sf

আরও পড়ুন: গোপনে BJP-র সঙ্গে মাখামাখি? ফুঁসে উঠলেন মমতা, দলের কোন কোন নেতাদের সতর্ক করলেন?

পাশাপাশি ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, প্যানেল বাতিলের পর এসএসসি এবার নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করবে। সমস্ত তথ্য যাচাই, উদ্ধার হওয়া ওএমআর শিটের কপি দেখে নতুন প্রকাশিত প্যানেলে যাদের যাদের নাম থাকবে তারা ফের পাবেন চাকরি। যাদের নাম থাকবে না তারা চাকরি পাবেন না।

এদিনের রায়ের পর প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ বলেন, ‘ডিভিশন বেঞ্চ আরও কঠোর হয়েছে। আমি যতটা কঠোরতা আমি দেখাতে পারিনি, তার থেকেও বেশি কঠোর হয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।’ প্রসঙ্গত, এর আগে এই মামলার শুনানি করেছিলেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রাক্তন জাস্টিসের দেওয়া বিভিন্ন রায় নিয়ে রাজ্য সরকার তরফে আপত্তি জানানো হয়েছে। পরে ঘটনাচক্রে বিচারপতির এজলাস থেকে মামলা সরানো হয়।

সর্বোচ্চ আদালত মামলাগুলি অন্য কোনও এজলাসে পাঠানোর জন্য কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর থেকেই প্রধান বিচারপতির নির্দেশে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি চলছিল। সুপ্রিম কোর্ট ছয় মাসের মধ্যে বিশেষ বেঞ্চকে ছ’মাসের মধ্যে শুনানি শেষ করতে বলেছিল। সেই মতো গত ডিসেম্বর মাস থেকে মামলাগুলির শুনানি শুরু হয় বিচারপতি দেবাংশু বসাকের বিশেষ বেঞ্চে। আজ সেই মামলাতেই চূড়ান্ত রায়দান করল হাইকোর্ট।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর