বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছর এপ্রিল মাসে দুর্নীতির জেরে (SSC Recruitment Scam) এসএসসি ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল করে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। সেই সময় এক ধাক্কায় চাকরি যায় প্রায় ২৬০০০ জনের। পরে সুপ্রিম কোর্টও একই রায় দেয়। সেই সময় থেকেই অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করার দাবি জানিয়ে আসছেন ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকা সহ অশিক্ষক কর্মীরা। তবে লাভের লাভ কিছুই হয়নি। তবে বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালত যা নির্দেশ দিল তাতে বড়সড় চাপে স্কুল সার্ভিস কমিশন ও রাজ্য সরকার।
এসএসসি ইস্যুতে বিস্ফোরক বিকাশরঞ্জন | SSC Recruitment Scam
আগামী ৭ দিনের মধ্যে অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে, এসএসসি-কে এমনই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পর কিছুটা হলেও স্বস্তিতে যোগ্য প্রার্থীরা। তবে এরই মধ্যে বড়সড় দাবি করে বসলেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তার দাবি, কমিশন যে এই তালিকা পাবলিশ করবে না।
এদিন টিভি ৯ বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিকাশবাবু বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট আগেই এই কথা বলেছিল। তবে তৃণমূল সরকার তা করবে না। সুপ্রিম কোর্ট সাত দিন সময় দিয়েছে। তবে আমি আপনাদের বলতে পারি ওরা এখনও সততার সঙ্গে সেই তালিকা পাবলিশড করবে না।”
বিকাশবাবুর কথায়, ” ওরা জানে যাঁদের থেকে টাকা নিয়েছে তাঁদের নাম বেরিয়ে এলে বিপদ। তাই কোনও কাজই ওরা সততার সঙ্গে করবে না।” আগামী ৭ এবং ১৪ সেপ্টেম্বর নতুন প্রক্রিয়ার পরীক্ষা হতে চলেছে। এই পরীক্ষা স্থগিত করার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ।
আদালতে মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীদের দাবি ছিল, এখনও অনেক অযোগ্যকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। এই নিয়েই কমিশনের কাছে অযোগ্যদের তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি কুমারের মন্তব্য, যদি অভিযোগকারীর আইনজীবী প্রমাণ করতে পারেন যে, ফের ‘অযোগ্য’ প্রার্থীদের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে তাহলে আপনাদের কড়া সমালোচনার মুখোমুখি হতে হবে।
বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতের বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার ডিভিশন বেঞ্চের গুচ্ছ গুচ্ছ প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য ও কমিশন। কমিশন ও রাজ্য সরকারকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার বলেন, এক জন দাগি প্রার্থীও যদিও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে তাহলে তার ফল ভুগতে হবে এসএসসি-কে। যদিও ওই দু-দিনের পরীক্ষা সূচি নিয়ে কোনও হস্তক্ষেপ করেনি শীর্ষ আদালত।
এসএসসির উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, ‘অযোগ্য’ প্রার্থীদের তালিকা আপনাদের কাছে রয়েছে। আপনারা যদি ওই প্রার্থীদের ছাড় দেন, তাহলে তার ফল ভুগতে হবে। ‘অযোগ্য’ প্রার্থীদের জন্য কেন কমিশন হাইকোর্টে গেল? প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। বলেন, “কোনও যুক্তিই এর জন্য যথেষ্ট নয়, যদি না কিছু মন্ত্রী চান যে, ওই প্রার্থীরা থাকুন।”
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্কের আবহেই চিনে জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মোদী! সামনে এল দিনক্ষণ
“নির্বাচন প্রক্রিয়া কলঙ্কিত হয়েছিল, কারণ কিছু মন্ত্রী চেয়েছিলেন তাঁদের প্রার্থীরা থাকুক। ত্রুটিপূর্ণ বাছাই প্রক্রিয়ার জন্য জন্য বোর্ড, SSC এবং রাজ্য সরকার তিন জনই সমান দায়ী।” কড়া পর্যবেক্ষণ শীর্ষ আদালতের। বিচারপতি বলেন, আপনাদের জন্যই যোগ্যরা চাকরি হারিয়েছেন। তাঁদের জীবন নষ্ট হয়েছে। রাস্তায় নামতে বাধ্য। আপনারা নিজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছেন আর আমাদের দোষারোপ করা হচ্ছে? ঠিক হচ্ছে এটা? হুঁশিয়ারি দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলে আদালত কিন্তু কমিশনের কাজের ওপর কড়া নজর রাখছে। নির্দেশ নিয়ে কারচুপি করা হচ্ছে দেখলেই সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করবে।