বাংলাহান্ট ডেস্ক: নিয়োগ দুর্নীতি (SSC Recruitment Scam) নিয়ে সিবিআই ও আদালতের কোপে পড়েছে রাজ্যের শিক্ষা দফতর। এই মামলায় গ্রেফতার হচ্ছেন একের পর এক দোর্দন্ডপ্রতাপ ব্যক্তি। ইতিমধ্যেই নবম ও দশম শ্রেণীর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চার্জশিট পেশ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেখানেও রয়েছে একাধিক নাম। তবে এতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম নেই।
সিবিআই-এর পেশ করা চার্জশিটে রয়েছে এসএসসি প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা, এসএসসি প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য, এসএসসি অ্যাডহক কমিটির প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, এসএসসি প্রোগ্রাম অফিসার সমরজিৎ আচার্য এবং এসএসসি প্রাক্তন সহকারী সচিব অশোক কুমার সাহার নাম। পাশাপাশি চার্জশিটে বেশ কিছু তাৎপর্যপূর্ণ তথ্যও রয়েছে বলে খবর।
সূত্রের খবর, করোনা পরিস্থিতিতে গোটা দেশের মানুষ যখন লকডাউনের কারণে ঘরবন্দি, সেই সময়েই গোপনে এই দুর্নীতির ছক কষা চলেছে। করোনার প্রথম ঢেউ আছড়ে পড়ার সময় মে-জুন মাস নাগাদ স্কুল সার্ভিস কমিশনের দফতরে ভুয়ো রেকমেন্ডেশন লেটার তৈরির কাজ চলেছে ক্রমাগত। এর ভিত্তিতেই পরবর্তীতে অনেকেই চাকরি পেয়েছেন। এই কাজের নেপথ্যে ছিলেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য, এসপি সিনহারা।
সিবিআই-এর চার্জশিটে সুবীরেশ ভট্টাচার্যকেই এই দুর্নীতির অন্যতম মূল মাথা হিসেবে দাবি করা হয়েছে। এই মুহূর্তে ইতিহাসের প্রশ্নে ভুল নিয়ে একটি মামলা চলছে হাইকোর্টে। সেই ঘটনাতেও সুবীরেশের যোগ রয়েছে। এমনটাই লেখা সিবিআই-এর চার্জশিটে। প্রসঙ্গত, ওএমআর শিট স্ক্যান করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল একটি বেসরকারি সংস্থাকে। স্ক্যান হয়ে যাওয়ার পর সমস্ত বিস্তারিত তথ্য সিডি-র আকারে সুবীরেশ ভট্টাচার্যের কাছে জমা হয় বলে জানা গিয়েছে।
কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী, সরাসরি সুবীরেশের হাতে এই তথ্য যাওয়ার কথাই নয়। সিবিআই এখনও ওই সিডি হাতে পায়নি। মনে করা হচ্ছে, তথ্যপ্রমাণ লোপাট করতে দেওয়া হয়েছে বা নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, লিখিত পরীক্ষাতেই শুধু নয়, বেআইনি পথে নম্বর দেওয়া হয়েছে পার্সোনালিটি টেস্টেও। করোনা পরিস্থিতিতে মানুষ যখন ঘরবন্দি, সেই সময় এসএসসি-র দফতরে বহাল তবিয়তে চলছিল এই বেআইনি নিয়োগের কারবার। সেই সময় পার্থ চট্টপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন।
তাই বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে, সিবিআই তাদের চার্জশিটে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম রাখল না কেন? যদিও সিবিআই সূত্রে খবর, প্রথম চার্জশিটে কীভাবে এই দুর্নীতি সংগঠিত করা হয়েছে সেই তথ্য রয়েছে। এরপর সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট আসার কথা। সেই চার্জশিটে পার্থর নাম থাকে কি না, সেদিকেই নজর সকলের।