বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এসএসসিতে (SSC Teacher Recruitment) নয়া নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আর কোনও বাধা নেই আপাতত। চাকরিহারাদের একাংশের করা মামলায় হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে ২০২৫-এ তৈরি করা এসএসসি-র রুলকেই মান্যতা দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মাথায় রেখে ৩০ মে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে স্কুল সার্ভিস কমিশন। কমিশন সূত্রে খবর, ৭ সেপ্টেম্বর ও ১৪ সেপ্টেম্বর পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে। তবে এখনও অনেক ক্ষেত্রে জট খোলেনি। তাই এই পরিস্থিতিতে ফের সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) দ্বারস্থ হতে পারেন চাকরিহারারা।
কেন ফের আদালতের দরজায় কড়া নাড়ার প্রসঙ্গ উঠছে? SSC Teacher Recruitment
চাকরিহারাদের দাবি, নতুন রুলে এমন অনেক বিষয় রয়েছে যার কারণে ‘যোগ্য’ চাকরিহারারাও পরীক্ষাতে অংশ নিতে পারবেন না। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে মামলা হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। মামলাকারীদের মূলত অভিযোগ ছিল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে কমিশন। ২০১৬ সালের বিধি মেনে নিয়োগ না করে ২০২৫ সালে নতুন বিধি তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছিল।
তাদের দাবি ছিল, সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের বিধি মেনে নতুন করে নিয়োগের নির্দেশ দিলেও রাজ্য এ বছরের মোট শূন্যপদ এক সঙ্গে করে নিয়োগ করতে চাইছে। পাশাপাশি নিয়োগের ক্ষেত্রে আগের নম্বরের বিন্যাস–বিভাজন বদলে আগে পড়ানোর অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ১০ নম্বর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে এ বারে। পাশাপাশি আগের বারে ৪৫ নম্বর পেলে পাশের নিয়ম বদল এনে রাজ্য এ বার ৫০ নম্বর করেছে বলে আদালতে জানানো হয়। তবে সেই সমস্ত কোনো বিষয়েই হস্তক্ষেপ করে নি হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের নির্দেশের পরও জট অব্যাহত!
চিহ্নিত অযোগ্য বাদে বাকিদের বয়সে ছাড় দেওয়া নিয়ে আপত্তি তুলেছিল চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকলে অতিরিক্ত ১০ নম্বর দেওয়ার যে কথা বলা হয়েছিল তা নিয়েও আপত্তি ওঠে। তবে রাজ্য তথা এসএসসি আদালতে জানায়, যে কোনও চাকরিতেই অভিজ্ঞতার দাম দেওয়া হয়। সেই কথা মাথায় রেখেই ১০ নম্বর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এসএসসির সেই রুলকেই মান্যতা দিয়েছে হাইকোর্ট। যা নিয়ে সন্তুষ্ট নন চাকরিহারাদের একাংশ।
দাগিরা বাদ গেলেও সুযোগ পাবেন তো ‘যোগ্যরা’?
SSC-র নয়া নিয়োগ (SSC Recruitment Case) প্রক্রিয়ায় কোনোভাবেই টেন্টেড বা দাগি বলে চিহ্নিতরা মূলত চিহ্নিত অযোগ্যরা অংশ নিতে পারবেন না বলে আগেই স্পষ্ট করেছে হাইকোর্ট। এদিকে যেহেতু হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, ২০২৫-এর রুল অনুযায়ীই নিয়োগপ্রক্রিয়া নেওয়া হবে সেক্ষেত্রে স্নাতকে শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যুনতম ৫০ শতাংশ। অর্থাৎ ৫০ শতাংশ না পেলে পরীক্ষাতে বসতেই পারবেন না কেউ। যদিও ২০১৬-র রুলে সেই ন্যুনতম যোগ্যতা ছিল ৪৫%। তা পেলেই প্রার্থীরা পরীক্ষায় বসতে পারবেন। এই কারণে ২০১৬-য় যাঁরা যোগ্য হিসেবে চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই এবার আর আবেদনের শর্ত পূরণ করতে পারবেন না।
এবারে ন্যুনতম যোগ্যতাতে আটকে যেতে পারেন ‘চাকরিহারা যোগ্যরা’। এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে তারা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন বলে শোনা যাচ্ছে। এদিকে ২০১৬ সালে যারা চাকরি পেয়েছিলেন তাদের অনেকেই রিহ্যাবিলেশন কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া থেকে স্পেশাল বিএড করেছিলেন। ২০২৫-এর রুলে অবশ্য উল্লেখ করা আছে, ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার্স এডুকেশন থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত কোনও প্রতিষ্ঠান থেকে বি এড কোর্স করতে হবে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে নারাজ! ধাওয়ান-রায়নাদের দাবি মেনে ম্যাচ বাতিল করে ক্ষমা চাইল WCL
এসএসসি-র নতুন বিজ্ঞপ্তিতে রিহ্যাবিলেশন কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া থেকে স্পেশাল বিএড ডিগ্রিধারীদের পরীক্ষায় বসার বিষয়ে উল্লেখ নেই। সে ক্ষেত্রে তারা আবেদন যোগ্য কী না সেই নিয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই। এই সমস্ত জট কাটাতে ফের একবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেন চাকরিহারাদের একাংশ। সবমিলিয়ে জট খুলেও খুলছে না ২৬০০০ ইস্যুতে।