বাংলা হান্ট ডেস্ক: করোনা মহামারীর জেরে গত দুই বছর ধরে লকডাউন চলাকালীন, অধিকাংশ মানুষেরই অর্থনৈতিক অবস্থা চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমতাবস্থায়, সবাই এমন ব্যবসায়িক পদ্ধতি বা চাষের উপায় চাইছেন যাতে কম বিনিয়োগ করেই ভালো রকম উপার্জন করা যায়।
বর্তমান প্রতিবেদনে আমরা ঠিক এমনই এক লাভজনক চাষের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যা খুব সহজেই শুরু করে মোটা অঙ্কের লাভ করতে পারবেন যে কেউই। অ্যালোভেরা এমনই একটি গাছ যার ঔষধি গুণাগুণ নিয়ে কোনো প্রশ্নই থাকেনা। কসমেটিক পণ্য থেকে শুরু করে আয়ুর্বেদিক ওষুধ সবক্ষেত্রেই এর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। যার ফলে গাছটির বাজারে চাহিদাও দিন দিন লাফিয়ে বেড়ে চলেছে। এমতাবস্থায়, এই গাছের চাষ করা অত্যন্ত লাভজনক।
আপনি যদি অ্যালোভেরা চাষ করেন তবে খুব সহজেই আপনি প্রচুর লাভ পাবেন। এই চাষের জন্য জমিতে অতিরিক্ত আর্দ্রতার কোনো প্রয়োজন নেই। এটি এমন জমিতে জন্মায় যেখানে জল স্থির থাকে না এবং বেলে মাটিতে এর চাষ সবচেয়ে ভাল হয়। তবে, কিছু সময় অন্তর অন্তর অ্যালোভেরা চাষের ক্ষেত্রটি পরিষ্কার করা প্রয়োজন। কারণ এই গাছে খুব তাড়াতাড়ি পোকা লেগে যায়। পাশাপাশি, অ্যালোভেরা গাছে কীটনাশক ব্যবহার করাও প্রয়োজন।
অ্যালোভেরা আজকাল জুস তৈরি থেকে শুরু করে আয়ুর্বেদিক ওষুধ এবং প্রসাধনী সামগ্রীতে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেজন্য অধিকাংশ কৃষকই শুধু এমন প্রজাতির গাছ রোপণ করছেন যা এসব কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। অ্যালোভেরা গাছের পাতাগুলি বেশ বড় হয়, যা থেকে জেল পাওয়া যায়। প্রধানত, নীল প্রজাতির অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারীকে খুব ভালো মনে করা হয়। পাশাপাশি, এটি বেশিরভাগ বাড়িতেও দেখা যায়।
সাধারণত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে অ্যালোভেরা গাছ লাগানো হয়। তবে কেউ ইচ্ছা করলে সারা বছরই এটির চাষ করতে পারেন। অ্যালোভেরার একটি গাছ থেকে অন্য একটি গাছের মধ্যে ২ ফুট দূরত্ব থাকা প্রয়োজন। এই চারা রোপণের পর বছরে দু’বার ফলন হয় এবং বিক্রি করে ভালো লাভ পাওয়া যায়। পাশাপাশি, অ্যালোভেরা চাষে কোনোভাবেই কোনো প্রাণীর ক্ষতি হয় না।
এই চাষে লাভের প্রসঙ্গে বলতে গেলে জানাতে হয় যে, এক বিঘা জমিতে অ্যালোভেরা গাছ লাগালে ১২ হাজার চারা রোপণ করা যায়। এদিকে, একটি অ্যালোভেরা গাছের দাম হয় তিন থেকে চার টাকা। এর মানে হল প্রায় ৪০,০০০ টাকা খরচ করে এক বিঘা এলাকায় অ্যালোভেরা গাছ লাগানো যাবে।
পাশাপাশি, একটি গাছ থেকে ৪ কেজি পর্যন্ত অ্যালোভেরার পাতা পাওয়া যায় এবং একটি অ্যালোভেরা পাতার দাম রাখা হয় ৭ থেকে ৮ টাকা। অতএব, এখান থেকে সহজেই অনুমেয় যে, কি বিশাল পরিমান লাভ হতে পারে এই চাষে। এছাড়াও, আপনি পাতা থেকে জেল বের করে নেওয়ার পরে সংস্থাগুলির সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে সেগুলিকে তা দিতে পারেন।
অ্যালোভেরা পাতা এবং জেল বিক্রি করেই লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করা যায়। তারপর যখন আপনার ব্যবসার পরিধি বাড়বে, তখন আপনি এই চাষ করে কোটি টাকাও আয় করতে পারবেন।