বাংলা হান্ট ডেস্ক: অধ্যবসা ও মনের জোর থাকলে কোন কিছু করা অসম্ভব নয়। ঠিক সেই রকমই সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় সাফল্য অর্জন করতে গেলে কঠিন পরিশ্রম করতে হয় (Succes Story)। আর কঠোর পরিশ্রম করে গুটি কয়েক ছাত্র-ছাত্রী এই পরীক্ষায় পাস করতে পারে। যারা এই পরীক্ষায় সফল হয় তারাই পরবর্তীকালে আইপিএস বা আইএএস অফিসার হন। যাদের গল্প আপনাকে অনুপ্রেরণা যোগায় । আর আজ রইলো ঠিক সেই রকমই এক সফল ইউপিএসসি (UPSC) পরীক্ষায় সফল ছাত্রের গল্প বাংলা হান্টে ।
ইউপিএসসির IIS হিসাবে উত্তীর্ণ মালদার অভিজিৎ চৌধুরী ((Succes Story)
সার্ভিস পরীক্ষা ভারতের অন্যতম কঠিন পরীক্ষার মধ্যে অন্যতম। প্রতিবছর এই পরীক্ষায় লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়। এই পরীক্ষায় পাস করতে পারে গুটি কয়েক ছাত্র ছাত্রী প্রথম বার পরীক্ষা দিয়ে এই পরীক্ষা পাস করতে পারে। আর ঠিক সেই রকম চেষ্টা, বুদ্ধিমত্তা ও মেধার শক্তিতে ভর করেই আজ সর্বভারতীয় স্তরে ইন্ডিয়ান ইনফরমেশন সার্ভিসে একমাত্র রাজ্যে প্রতিনিধি হিসেবে স্থান করে নিতে পেরেছেন মালদার অভিজিৎ চৌধুরী।
অবশেষে ১৩ বছর পর সেই স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে মালদার অভিজিতের। ইন্ডিয়ান ইনফরমেশন সার্ভিস (UPSC) পরীক্ষায় সফল হয়ে আইআইএস (IIS) মালদহে প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে অভিজিৎ চৌধুরী। অভিজিৎ চৌধুরী মালদহের ইংরেজবাজার ব্লকের সাতটারি গ্রামের ছেলে। সাতটারি উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনার পর গৌড় মহাবিদ্যালয়ে গণ জ্ঞাপন সাংবাদিকতা বিভাগে পড়াশোনা করেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় মেধাবী ছিলেন অভিজিৎ। পড়াশোনা চলাকালীন তার বাবার ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপর ২০১৩ সালে ২ জানুয়ারি বাবাকে হারান অভিজিৎ। মাথার ওপর থেকে সরে যায় ছাদ। পরিবারে তিন ভাই ও দুই দিদি ছিল। তবে দুই দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছিল তখন। বাড়ির সম্পূর্ণ আর্থিক চাপ এসে পড়ে তার ওপরে। অভিজিতের বাবা, গ্রাম পঞ্চায়েতে কার্যনির্বাহী সহায়ক হিসেবে কাজ করতেন। তার মা ছিলেন আইসিডিএস কর্মী। তবে বাবা চিকিৎসা চলাকালীন তিনি একটি স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের অনুষ্ঠানে সঞ্চালক ও স্ক্রিপ্ট রাইটার হিসাবে যোগদান করেন।
পড়াশোনার পাশাপাশি স্কুল জীবনে আবৃত্তি কুইজ কম্পিটিশনের প্রতি আগ্রহ ছিল অভিজিতের। এবিটিএ অনুষ্ঠিত একটি তাৎক্ষণিক বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় রাজ্যের দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছিলেন অভিজিৎ। এছাড়াও রাজ্য ছাত্র যুব উৎসবে ধারাবাহিকভাবে বিতর্ক, বক্তৃতা, সংবাদ পাঠ ইত্যাদিতে জেলা প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। জেলার প্রতিনিধির পাশাপাশি বাইরে প্রচুর অনুষ্ঠানের সঞ্চালনার কাজ করতেন।
আরও পড়ুন: ফের ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা দক্ষিণবঙ্গে! তাপমাত্রা নামবে? আবহাওয়ার খবর
প্রসঙ্গত, ছোটবেলা থেকে ভালো পড়াশোনা থাকায় তিনি প্রায় তিনটি জায়গায় সরকারি চাকরি করার সুযোগ পান। তবে সেটি স্বপ্ন ছিল না তার। বিগত দিনে পোস্টমাস্টার, আদালতে পেশাকার ও বর্তমানে পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের সিনিয়র পাবলিসিটি ইন্সপেক্টর অভিজিৎ চৌধুরী। প্রায় তিনটি জায়গায় কাজ করার পরও অবশেষে ১৩ বছর পর উচ্চ আধিকারিক হওয়ার স্বপ্ন সত্যি হতে চলেছে অভিজিৎ চৌধুরী। তার এই সাফল্যে খুশির হাওয়া গোটা জেলা জুড়ে।
সূত্রের খবর, ইউপিএসসি আইএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থী অভিজিৎ চৌধুরী জানান, গত ৩০ তারিখ ৪ তারিখ দিল্লীর ইউপিএসসি ভবনে ইন্টারভিউ হয়। এবং মঙ্গলবার সেই ফলাফল আসে। সেই পরীক্ষায় সফল হতে পেরে তিনি খুশি। পাশাপাশি তিনি জানান তার স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। এই স্বপ্ন পূরণ হওয়ার নেপথ্যে তার পরিবার ও সহকর্মীদের অবদানের কথা বলেছেন।