বাংলাহান্ট ডেস্ক : মিজানুরের লক্ষ্য ছিল নির্দিষ্ট। একাধিকবার বিভিন্ন পেশার দিকে ঝুঁকলেও, বেশি দিন সেখানে স্থায়ী হতে পারেননি। এক লহমায় আর্থিক প্রতিকূলতা উড়িয়ে দিয়েছেন। শুধুমাত্র বিশ্বাসের উপর ভর করে আজ তিনি পৌঁছেছেন সাফল্যের চূড়ায়। DSP (আন্ডার ট্রেনিং) মিজানুর রহমান সম্প্রতি সেই কথাই সবার সাথে ভাগ করেছেন।
WBCS সম্পর্কে সঠিক ধারণা ছিল না মিজানুরের। তবে তার ইচ্ছা ছিল সরকারি আধিকারিক হওয়ার। ছকে বাঁধা জীবনের থেকে বেরিয়ে কিছু অন্য করতে চেয়েছিলেন তিনি। মিজানুর জানান অন্যান্য পেশার দিকেও তার আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছিল। তবুও হারিয়ে ফেলেনি ডব্লিউবিসিএস অফিসার হওয়ার স্বপ্ন। কখনো তিনি ভেবেছেন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার কথা, আবার কখনো অন্য বিষয় নিয়ে উচ্চ শিক্ষার কথা।
আরোও পড়ুন : ‘চারিদিকে ধোঁয়াই ধোঁয়া’ বলে ট্রোলড! এবার ‘প্রমাণ’ সহ হাজির রচনা, ঝটপট বানালেন Reel
একটি সংবাদমাধ্যমকে মিজানুর জানিয়েছেন, “প্রথম থেকেই সরকারি অফিসার হওয়ার ঝোঁক ছিল। ২০১০ সালে মাধ্যমিক দিয়েছি। স্কুলে পড়ার সময়ই দেখতাম স্কুলে চাকরির জন্য SSC দিচ্ছে। কিন্তু আমার তা থেকে অন্যরকম কোনও চাকরি করার ইচ্ছে জাগে। তবে WBCS সম্পর্কে কিছু জানতাম না। একাদশ-দ্বাদশে যখন ছিলাম তখনও আগ্রহ আরও বাড়ল। শুধু BDO-দের দেখতাম। কিন্তু কী করে ওই পেশায় যাওয়া যায়, সে সম্পর্কে কোনও জ্ঞান ছিল না।’’
মিজানুরের কথায়, “একাদশে নদিয়ার চাপড়ার আল আমিন মিশনে ভর্তি হই বিজ্ঞান বিভাগে। ওখানে গিয়ে সাময়িকভাবে মনোভাব বদলায়। ওখানে পড়তে গিয়ে একটা বিষয় কাজ করে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে। আমি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দিকে খানিকটা হলেও ঝুঁকেছিলাম। পরে এক শিক্ষক পরামর্শ দেন ইঞ্জিনিয়ারিং করলে পরে করা যাবে। আবার স্নাতক স্তরে গিয়েও মনে হয়েছে অন্য পেশা বেছে নেওয়া যায়।”
আরোও পড়ুন : DA ক্ষোভের মাঝেই মমতার বিরুদ্ধে ‘বোনাস বিভাজনের’ অভিযোগ! বিরাট তথ্য ‘ফাঁস’ করলেন শুভেন্দু
তিনি আরো বলেন, “এক বন্ধু পরামর্শ দিয়েছিল, WBCS অফিসার হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া যেতে পারে। তার জন্য কী করতে হয় এমনকী বিশেষ কোনও বিষয়ে অনার্স নেওয়ার ব্যাপার আছে কিনা তাও জানতাম না। পরিচিত এক দোকানদারের থেকে BDO-র সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাঁকে ফোন করে জিজ্ঞেস করি কীভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। উনি আমাকে জানান রেজাল্টের পর যোগাযোগ করতে। ভেবেছিলাম ইংরেজিতে অনার্স নেব।”
মিজানুরের আরোও সংযোজন, “আমার এক শিক্ষক তা জানতে পেরে খুব বকাবকি করেন। আর্থিক অবস্থা ভাল ছিল না একেবারেই। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় জিয়াগঞ্জের একটি কলেজে পদার্থবিদ্যা অনার্স নিয়ে পড়তে শুরু করি। সেকেন্ড ইয়ার পর্যন্ত গতানুগতিক জীবনই ছিল। থার্ড ইয়ারে এক বন্ধুর পরামর্শে উচ্চশিক্ষায় ঝোঁক তৈরি হয়। IIT-র আওতায় জয়েন্ট অ্যাডমিশন টেস্ট ফর MSC দেওয়া শুরু করি।”
পেশায় হকার মিজানুরের বাবা। তাই পড়াশোনার ক্ষেত্রে বারবার অর্থচিন্তা ভাবিয়ে তুলেছে তাকে। তাই অনেক সময় অন্য পেশা আকর্ষণ করেছে। তবে বর্তমানে, স্বামী বিবেকানন্দ রাজ্য পুলিশ অ্যাকাডেমিতে (Swami Vivekananda State Police Academy) বর্তমানে ট্রেনিং চলছে মিজানুরের। মোট দেড় বছরের ট্রেনিং পিরিয়ড। সাত মাস অতিক্রম হয়ে গেছে তার ট্রেনিংয়ের। ট্রেনিং এর সমাপ্তি হলেই মিলবে পোস্টিং।