ক্রিকেট ছেড়ে শুরু করেন ব্যবসা! ৩ বছরেই তৈরি ১০০ কোটির ব্র্যান্ড, চমকে দেবে সন্দীপের সাফল্যের কাহিনি

Published on:

Published on:

Success Story of Sandeep Jangala.

বাংলা হান্ট ডেস্ক: একটা সময় সমগ্র অনুরাগ ছিল ক্রিকেটের প্রতি। এমনকি, তিনি অনূর্ধ্ব-১৯ দক্ষিণ জোনে ক্রিকেটও খেলতেন। ময়দানে সবসময় তাঁর মনোযোগ থাকতো বলের দিকে। যদিও, ক্রিকেটের মাঠে তাঁর বন্ধুর সংখ্যা খুব একটা বেশি ছিল না। একটা সময়ে ক্রিকেট ছেড়ে তিনি ধরেন ব্যবসার পথ। আর তারপরেই ঘটে যায় চমক। মাত্র ৩ বছরে তিনি ১০০ কোটি টাকার একটি ব্র্যান্ড তৈরি (Success Story) করে ফেলেন। হ্যাঁ, প্রথমে বিষয়টি পড়ে অবাক হলেও এটা কিন্তু একদমই সত্যি। আর যিনি এই অসাধ্য সাধন করেছেন তিনি হলেন সন্দীপ জাংলা। তিনি তৈরি করেছেন একটি হেলদি ফুড ব্র্যান্ড। যেটির নাম ইয়ামি বি।

চমকে দেবে সন্দীপের সাফল্যের কাহিনি (Success Story):

উল্লেখ্য যে, সন্দীপ সবসময়ই স্বাস্থ্য সচেতন। তিনি এই কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা, এমডি এবং সিইও। তাঁর বয়স মাত্র ৩৮ বছর। তিনি স্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে চান। সন্দীপ বলেন, ‘আমরা রিসার্চ করি এবং এমন প্রোডাক্ট তৈরি করি যা চিনি, পরিশোধিত ময়দা/গ্লুটেন এবং প্রিজারভেটিভ মুক্ত।”

Success Story of Sandeep Jangala.

ক্রিকেট থেকে দূরে সরে যান: ক্রিকেট ছিল সন্দীপের প্রথম ভালোবাসা। তিনি জানান, “আমি ১০ বছর বয়স থেকেই ক্রিকেট খেলছি। আমার স্বপ্ন ছিল ভারতের হয়ে খেলা। আমি সাউথ জোন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অংশ ছিলাম এবং অশ্বিনের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম। জাদেজা, রায়ডু এবং দীনেশ কার্তিকের মতো খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলার সুযোগ পেয়েছি।” ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শেষ বর্ষে চোটের কারণে তাঁর ক্রিকেটের স্বপ্ন ভেঙে যায়। এর পরে, তিনি বড় কিছু করার জন্য অন্যান্য উপায় খুঁজে পান। এর পরেই তিনি ব্যবসার পথ (Success Story) বেছে নেন।

ব্র্যান্ডটি কীভাবে কাজ করে: সন্দীপ জানিয়েছেন, “আমরা একটি ক্যাফে চেইনের মতো কাজ করি। এছাড়াও, আমরা কনজিউমার প্যাক্‌ড গুডস (CPG) তৈরি করি। আমরা হলদিরামের মতো। কিন্তু আমাদের পরিবেশ স্টারবাক্সের মতো।” সন্দীপের স্ত্রী সোনিয়া লাম্বা এই কোম্পানির কো-ফাউন্ডার। সোনিয়া বলেন, “আমাদের স্বপ্ন আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে দেশের সর্ববৃহৎ গিল্ট-ফ্রি ব্র্যান্ড হওয়া। আমরা এমন পণ্য তৈরি করতে চাই যা সবচেয়ে বিশুদ্ধ। আমরা চাই সবাই সুস্বাদু, স্বাস্থ্যকর এবং সাশ্রয়ী মূল্যের খাবার পান।”

আরও পড়ুন: ২৫ বছরের ক্রিকেট কেরিয়ার! IPL-এও দেখিয়েছেন দাপট, অবসর নিলেন ভারতের তারকা স্পিনার অমিত মিশ্র

২০২২ সালে শুরু হয় সফর: উল্লেখ্য যে, ইয়ামি বি ২০২২ সালের অগাস্ট মাসে VLOGS Food Pvt Ltd নামে শুরু হয়েছিল। এই কোম্পানিটি VLOGS নীতিতে চলে। VLOGS-এর অর্থ হল ভেগান, লো ক্যালোরি, জৈব, গ্লুটেন ফ্রি এবং সুগার ফ্রি। এই সংস্থার মিলেট থেকে তৈরি সুগার ফ্রি মিষ্টি ইতিমধ্যেই তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।

প্রাথমিক পর্যায়ে এই ব্যবসাটি ছোট পরিসরে শুরু হয়েছিল। কিন্তু খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। হায়দ্রাবাদে ইয়ামি বি-এর ১০ টি দোকান রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ৬ টি মিড-ফরম্যাট ক্যাফে এবং ৪ টি ক্লাউড কিচেন। যেগুলিতে প্রাতরাশ থেকে শুরু করে, লাঞ্চ এবং ডিনার পাওয়া যায়। মিষ্টান্নের প্রতি এক্ষেত্রে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হয়। এখন তাঁরা আরও জায়গায় তাদের দোকান খোলার পরিকল্পনা করছেন। এই কোম্পানির প্রোডাক্টগুলি দোকান এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও পাওয়া যাচ্ছে।

আরও পড়ুন: “আর্থিক দিক থেকে মহাশক্তিশালী ভারত”, চিনের মাটি থেকেই ট্রাম্প প্রশাসনকে কড়া বার্তা দিলেন পুতিন

১ কোটি টাকা দিয়ে শুরু হয়: সন্দীপ বলেন যে তিনি প্রথমে ক্লাউড কিচেন দিয়ে শুরু করেছিলেন। তিনি মূলত, দেখতে চেয়েছিলেন যে মানুষ এই আইডিয়া পছন্দ করে কিনা। সন্দীপ জানান, “যখন আমরা ভালো সাড়া পেলাম, তখন আমরা অনেক আউটলেট খুলেছিলাম।” সন্দীপ প্রথমে ক্লাউড কিচেন এবং অন্যান্য জিনিসের জন্য প্রায় ১ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। পরে, তিনি তাঁর বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের কাছ থেকে ৪৩ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করেছিলেন। তারপর, তিনি হায়দ্রাবাদে ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য ৭ কোটি টাকার ফান্ড সংগ্রহ করেছিলেন। পরে তিনি তার ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য আরও ফান্ড (Success Story) গ্রহণ করেন।

কোম্পানির রেভিনিউ: জানিয়ে রাখি যে, ইয়ামি বি প্রথম বছরে (২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ) ৪৪ লক্ষ টাকার রেভিনিউ অর্জন করে। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে এটি বেড়ে ৩.৯৫ কোটি টাকা এবং ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ৮.১৮ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। তাঁদের লক্ষ্য হল হায়দ্রাবাদ এবং বেঙ্গালুরুতে স্টোর খুলে তাঁদের প্যাকেজড ফুড (CPG) ব্যবসা সম্প্রসারণ করার মাধ্যমে বার্ষিক ৫০ কোটি টাকার (Success Story) রেভিনিউ অর্জন করা।