বাংলা হান্ট ডেস্ক: জীবনযুদ্ধের লড়াই সকলের জন্য সমান নয়। সফল হওয়ার এই কঠিন লড়াই লড়তে লড়তে অনেকেই মাঝপথে ক্লান্ত হয়ে তা ছেড়ে দেন। আবার কেউ, নিজের পরিশ্রম আর জেদের মাধ্যমে স্থির থাকেন লক্ষ্যে! কোনো প্রতিবন্ধকতাই তাঁদের টলাতে পারেনা।
তবে, এই লড়াইর পথও সকলের কাছে আবার সমান নয়। কাউকে কাউকে জীবনের টিকে থাকার লড়াই থেকেই শুরু করতে হয় জীবনে সফল হওয়ার লড়াইও। ঠিক এইরকমই এক অদম্য লড়াইর কথা আপনারা জানতে পারবেন এই প্রতিবেদনে। যেখানে, দু’বেলার অনিশ্চিত খাওয়ারের খোঁজ থেকে পুলিশ অফিসার হওয়ার স্বপ্নের দৌড়ে সামিল হয়ে সফলতার মুকুট পরেছেন লড়াকু এক নারী। তাঁর নাম তেজল আহের!
মহারাষ্ট্রের নাসিক জেলার বাসিন্দা তেজল সরকার কর্তৃক পরিচালিত পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়ে “পুলিশ এসিস্ট্যান্ট ইন্সপেক্টর”-এর পদ পেয়েছেন। তবে, তাঁর এই সাফল্যের প্রতিটি পদক্ষেপে হতে হয়েছে বাধার সম্মুখীন।
কোচিং তো দূর, তাঁদের আর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে, দু’বেলার খাওয়ার জোটাতেও রীতিমতো হিমশিম খেতে হত পরিবারের সদস্যদের। এই প্রসঙ্গে তেজল জানিয়েছেন যে, তিনি নাসিক থেকেই তাঁর এই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। বাড়তি কোনো কোচিং তিনি নিতে পারেননি আর্থিক দুর্বলতার কারণে। সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টাতেই তিনি সফল হয়েছেন এই পরীক্ষায়।
এই প্রসঙ্গে তেজলের বাবা জানিয়েছেন যে, “ছোটবেলায় তেজলের মা তাঁর মেয়েকে পুলিশ অফিসার বানানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁর মা শৈশবে প্রায়ই বলতেন যে, একদিন মেয়ে অবশ্যই পুলিশ অফিসার হবে। এখন সেই স্বপ্নটি পূরণ হয়েছে।” ট্রেনিং শেষ করে তেজল যখন পনেরো মাস পরে বাড়ি ফিরে আসেন, তখন তাঁর পুলিশের ইউনিফর্ম এবং কাঁধে তারকা দেখে পুরো পরিবার আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে।
স্বাভাবিকভাবেই তেজলের এই সাফল্যের কাহিনি সামনে আসতেই তাঁর লড়াইর প্রশংসা করেছেন সকলে। পাশাপাশি, সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে দূর করে তেজল যেভাবে তাঁর লক্ষ্যে পৌঁছেছেন তা সবার কাছেই একটি শিক্ষণীয় বিষয় হয়ে রয়েছে। বর্তমানে তেজল দরিদ্র শিক্ষার্থীদের কাছেও এক “আইকন” হয়ে উঠেছেন।