বাংলাহান্ট ডেস্ক: বেঙ্গালুরুর দুই বোন সুহাসিনি এবং অনিন্দিতা সম্পত দেখিয়ে দিলেন, ইচ্ছাশক্তি আর পরিশ্রম থাকলে সফলতা (Success Story) আসবেই। আজ তাঁদের তৈরি ব্র্যান্ড ‘যোগা বার’ শুধু ব্যবসার নাম নয়, বরং একটি স্বাস্থ্যবিপ্লবের প্রতীক হয়ে উঠেছে। ছোটবেলা থেকেই স্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আগ্রহ ছিল দুই বোনের। তাঁদের পরিবারে রেস্তরাঁর খাবারের চেয়ে ঘরের রান্নাই বেশি প্রিয় ছিল। তেলে-ভাজা খাবারে ছিল নিষেধাজ্ঞা, তবে মায়ের হাতের তৈরি স্বাস্থ্যকর খাবারেই মিলত সবরকম স্বাদ। এখান থেকেই জন্ম নেয় ‘যোগা বার’-এর আইডিয়া।
দুই বোনের অদম্য ইচ্ছাই লিখল সফলতার অনন্য কাহিনি (Success Story)
দুই বোন বিদেশে পড়াশোনা ও চাকরির জন্য আমেরিকা গিয়েছিলেন। নিউইয়র্কে যোগাভ্যাস করার সময় তাঁরা টের পান—ওয়ার্কআউটের পর উপযুক্ত হেলদি স্ন্যাক্স পাওয়া কতটা কঠিন, বিশেষ করে নিরামিষভোজী এবং গ্লুটেন ইনটলারেন্টদের জন্য। তখন বাজারে সহজলভ্য এনার্জি বার থাকলেও সেগুলোর উপাদান ও গুণমান নিয়ে সন্দেহ ছিল। সেই সময় অনিন্দিতা মজা করে বলেছিলেন, “যদি কোনো দিন ব্যবসা করি, তাহলে এমন এনার্জি বার বানাব, নাম রাখব ‘যোগা বার’।” এই কথাটি সুহাসিনির এতটাই ভালো লেগেছিল যে তিনি সঙ্গে সঙ্গে ‘যোগা বার’ নামটি ট্রেডমার্ক করিয়ে ফেলেন—ব্যবসা শুরু করার চার বছর আগেই (Success Story)।
আরও পড়ুন:মুম্বাইয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টার্মারের সঙ্গে বৈঠক মোদীর! কোন কোন বিষয়ে হল আলোচনা?
২০১২ সালে তাঁরা দেশে ফিরে আসেন এবং তিন বছর ধরে গবেষণা চালান। অবশেষে ২০১৫ সালে বাজারে আসে প্রথম পণ্য—‘মাল্টিগ্রেন এনার্জি বার’। এরপর ২০১৮ সালে তাঁরা লঞ্চ করেন প্রোটিন বার। শুরুটা হয়েছিল খুব ছোট পরিসরে—মায়ের রান্নাঘরে তৈরি করে দীপাবলিতে আত্মীয়-বন্ধুদের উপহার দেওয়া হতো। পরে বেঙ্গালুরুর বিভিন্ন যোগা সেন্টারে ছোট পপ-আপ স্টলে বিক্রি শুরু হয়। দোকানিরা প্রথমে মজা করে বলত, “বারে কে খাবে?” কিন্তু ক্রেতারা ধীরে ধীরে বুঝতে শুরু করেন এই পণ্যের উপকারিতা, আর সেখান থেকেই শুরু হয় সাফল্যের যাত্রা (Success Story)।
আজ ‘যোগা বার’-এর পণ্য ভারতীয় মান সংস্থার অনুমোদনের পাশাপাশি আমেরিকার FDA অনুমোদনও পেয়েছে। একসময় ভারতে এনার্জি বার একটি নতুন ধারণা ছিল, যেখানে মানুষ স্বাস্থ্যকর খাবারকে বিক্রিযোগ্য মনে করত না। কিন্তু সুহাসিনি ও অনিন্দিতা তাঁদের কাস্টমারদের স্বাদ, পুষ্টি ও আস্থার সমন্বয়ে বিশ্বাস করাতে সক্ষম হন (Success Story)।
আরও পড়ুন:আরও বাড়তে পারে যাত্রী সংখ্যা, যাতায়াত মসৃণ করতে এই ব্যস্ত স্টেশনে বড় উদ্যোগ মেট্রোর
২০২১-২২ অর্থবর্ষে কোম্পানির টার্নওভার পৌঁছায় ৬৮ কোটি টাকায়। ২০২৩ সালে FMCG জায়ান্ট ITC তাঁদের সংস্থার ৪০% শেয়ার ১৭৫ কোটিতে কিনে নেয়। এর আগে এলিভেশন ক্যাপিটাল ও ফায়ারসাইড ভেঞ্চারস থেকে তাঁরা সিরিজ-এ তহবিল হিসেবে পান ১১.৬ মিলিয়ন ডলার। বর্তমানে ‘যোগা বার’-এর বার্ষিক রেভিনিউ রান রেট ১০০ কোটিরও বেশি (Success Story)।
সুহাসিনি ও অনিন্দিতা প্রমাণ করেছেন, সাফল্য কেবল টাকার অঙ্কে মাপা যায় না—এটি মানুষের জীবন বদলে দেওয়ার ক্ষমতায় নিহিত। তাঁদের উদ্যোগ আজ ভারতজুড়ে ‘হেলদি লিভিং’ আন্দোলনের মুখ। যোগা বার শুধু একটি ব্র্যান্ড নয়, এটি ভারতকে স্বাস্থ্যবান ও সচেতন করার এক নিঃশব্দ বিপ্লব (Success Story)।