বাংলা হান্ট ডেস্ক: ছোটবেলা থেকে অভাবের সংসারে বড় হয়ে উঠেছে শ্রেয়া সরকার। পাশাপাশি ছোটবেলা থেকেই বড় কিছু করার স্বপ্ন ছিল চোখে (Success Story)। তাই কোন রকমের স্কুল জীবনটাকে শেষ করে জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়াশোনো করেন তিনি। তারপর শুধুমাত্র মেধার জোরে পেয়ে গেলেন গুগল সফটওয়্যারে ইঞ্জিনিয়ারের চাকরি। এই খবর জানাজানি হতেই পরিবার সহ তার পাড়া তথা জলপাইগুড়ি খুশি।
গুগলে ৫৪ লাখের চাকরি পেল জলপাইগুড়ির শ্রেয়া (Success Story)
ছোটোবেলার থেকে পড়াশোনায় ভালো শ্রেয়া। জলপাইগুড়ির পূর্ব অরবিন্দ নগরের মেয়ে তিনি। বাবা শহরেরে ফার্নিচারের দোকানের কর্মচারী। আর মা গৃহবধু। আর্থিক অনটন থাকার ফলে কষ্ট করে পড়াশোনা করেছে শ্রেয়া সরকার। পারিবারিক আর্থিক অবস্থার কথা ভেবে জলপাইগুড়ি গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ তার পড়াশোনার খরচ মুকুব করে দেয়। উল্লেখ্য এ বছর ওই কলেজ থেকে কম্পিউটার সাইন্সে গ্রাজুয়েট হয়েছেন শ্রেয়া। তারপরই ঘটল মিরাকেল। মেধার জোরে গুগলে বছরে ৫৪ লক্ষ টাকার চাকরি পেলেন শ্রেয়া। আগামী ১৪ জুলাই সে ব্যাঙ্গালোরের গুগল অফিসে যোগ করছেন।
সূত্রের খবর এই চাকরি পাওয়ার পর শ্রেয়া জানান, বহুদিন ধরেই গুগলে চাকরি করার শখ ছিল তার। এই চাকরি পাওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে তাকে। তিনি আরও জানান, কলেজে পড়তে পড়তে গুগলে ইন্টার্নশিপ করেন। পাশাপাশি বহুবার ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন তিনি। অবশেষে গুগল থেকে প্রি-প্লেসমেন্ট অফার লেটার আসতেই আনন্দে চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি সে । তার কথায়, গুগলের সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার পদে চাকরি পেয়েছি। বেতন মোটা টাকা। চাকরির জন্যই জলপাইগুড়ি থেকে বেঙ্গালুরুতে এসেছি।
জানা যায়, শ্রেয়া সরকারের সাফল্যে খুশি পরিবার। এই প্রসঙ্গে তার বাবা জানান, শহরের বেগুনটারিতে একটি আসবাবপত্রের দোকানে কাজ করেন। মাসে মাত্র ১০ হাজার টাকা রোজগার। মা গৃহবধু। এমনকি শ্রয়ার ছোট বোন আছে। এতদিন কষ্টকরে দুই মেয়ের পড়াশোনা করানো হতো। তার বাবা আরও জানান, বড় মেয়ের ছোট থেকেই সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন ছিল। অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে শ্রেয়া। শ্রেয়ার এই চাকরি তাদের পরিবারে এবার সচ্ছলতা নিয়ে আসবে।
আরও পড়ুন: তিলোত্তমার ঐতিহ্যকে মাথায় রেখেই ম্যাজিক মেট্রোরেলের! সুরঙ্গ কাটতে নামালো ‘দুর্গা’ ও ‘দিব্যা’
প্রসঙ্গত, শ্রেয়ার সাফল্যে উচ্ছ্বসিত জলপাইগুড়ি গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। ওই কলেজের কম্পিউটার সায়েন্সের বিভাগীয় প্রধান সুভাষ বর্মন বলেন, আমাদের কলেজের ছাত্রী হিসেবে ওর জন্য গর্ব তো হচ্ছে। তিনি জানান, জলপাইগুড়ি থেকে অতি সাধারণ পরিবারের একটি মেয়ে শুধুমাত্র মেধার জোরে গুগলের মতো সংস্থায় চাকরি পেল। শ্রেয়া কলেজের পাশাপাশি জলপাইগুড়িরও মুখ উজ্জ্বল করল। তিনি আরও জানান, ওর অধ্যাবসায় দেখে আমরা জানতাম, নিশ্চয়ই মেয়েটা কিছু একটা করে দেখাবে। ওর এই সাফল্যে আমরা খুবই খুশি।