‘আইসি-কে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সরাও!’ জগদ্ধাত্রী পুজোয় পুলিশি হেনস্থার অভিযোগে হুশিয়ারি সুকান্তর

Published on:

Published on:

Sukanta Majumdar Leads BJP Protest Over Krishnanagar Police Misconduct

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জন বাংলার ঐতিহ্য। সম্প্রতি সেই জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জন ঘিরে উত্তাল হল নদিয়া জেলা। কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জনের দিন একটি ভিডিও শেয়ার করা হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভিডিওটিতে দেখা যায় পুলিশ বিসর্জনের সময় হিন্দুদের উপর লাঠিচার্জ করছে। এই ভিডিও ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হতে শুরু করেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর তারপরে এই ভিডিওকে কেন্দ্র করে শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা।

বুধবার কৃষ্ণনগরে বিজেপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumdar) নেতৃত্বে থানা অভিযানে নেমে পড়েন শত শত বিজেপি কর্মী। অভিযোগ, বিসর্জনের সময় হিন্দুদের উপর পুলিশি হেনস্থা করা হয়েছে। সেই প্রতিবাদেই বিজেপি-র থানা অভিযান। কিন্তু ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে বচসা থেকে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। আর এতেই কার্যত আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।

“আইসি-কে সরাতে হবে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে”, হুঁশিয়ারি সুকান্তর (Sukanta Majumdar)

কৃষ্ণনগর থানার সামনে পুলিশের সঙ্গে প্রথমে তর্কে জড়ান বিজেপি কর্মীরা। এক মহিলা পুলিশকর্মী বলেন, “আমরা ২৪ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ডিউটি করি। সত্যিটা আমরা জানি। ভাসানের সময় ২৫ ঘণ্টা ধরে ডিউটি হয়।” তবে এই কথায় কর্ণপাত করেননি বিজেপি কর্মীরা। বিজেপি কর্মীদের একটাই দাবি দাবি, “আইসি-কে ক্ষমা চাইতে হবে।” বিজেপি কর্মীদের দাবির প্রেক্ষিতে ওই পুলিশকর্মী বলেন, “কেন ক্ষমা চাইবেন আইসি? কী অপরাধ করেছেন? আপনারা পুরো ঘটনা জানেন না।” এক বিজেপি কর্মী তখন চিৎকার করে বলেন, “আমার চোখে দেখেছি, উনি গালাগাল করেছেন!” উত্তরে মহিলা পুলিশকর্মী বলেন, “কাকে করেছেন? পুলিশের গায়ে হাত তোলা হয়েছে।”

এই কথার পর বিজেপি কর্মীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। কেউ কেউ বলেন, “সরকারি পোশাক পরে তৃণমূলের দালালি করছেন! লজ্জা করে না?” এরপরই পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি শুরু হয়। কয়েকজন পুলিশ অফিসার পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে এলেও উত্তেজনা আরও বাড়ে।

“অপদার্থ পুলিশমন্ত্রী, খিস্তিশ্রী পুরস্কার দেওয়া উচিত”, কটাক্ষ সুকান্তর

এরপর সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) বলেন, “পুলিশের অফিসার নিজেই স্বীকার করেছেন, পুলিশমন্ত্রী অপদার্থ। ম্যাডাম বলছেন, ২৪ জনে ২৪ হাজার লোক সামলায়! এমন অপদার্থ পুলিশমন্ত্রী থাকার চেয়ে না থাকা ভাল।”

সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) আরও বলেন যে, “কোতোয়ালি থানার আইসি যেভাবে আমাদের মা-বোনদের সঙ্গে অসভ্য আচরণ করেছেন, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে সরাতে হবে, না হলে আরও তীব্র আন্দোলন হবে।”
সুকান্ত অভিযোগ করে বলেন, “পিন্টু মাহাতো ঘুষের টাকায় কী করেছে, তার হিসেব রাখুন। ব্যবস্থা নেব।” তিনি আরও বলেন, “হিন্দুদের সামাজিক অনুষ্ঠানে পুলিশি অত্যাচার হচ্ছে। পুলিশ গালাগালি দিয়েছে, ওঁকে তো খিস্তিশ্রী পুরস্কার দেওয়া উচিত! ইতিহাস জানেন তো? চাঁদ কাজিও হরিনাম বন্ধ করতে পারেননি, এখন তো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আছেন। কেউ হরিনাম বন্ধ করতে পারবে না।”

কিভাবে হয় ঘটনা সূত্রপাত?

ঘটনার সূত্রপাত এক ভিডিও ঘিরে। কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জনের সময়কার সেই ভিডিও পোস্ট করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী লেখেন, “আইসি অমলেন্দু বিশ্বাসের মুখের ভাষা থেকেই বোঝা যায়, হিন্দুদের কী চোখে দেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ।” যদিও কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশের দাবি, “মহিলাদের উত্যক্ত করা ও হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল। তাই বাধ্য হয়েই লাঠিচার্জ করা হয়। এই ঘটনায় সাম্প্রদায়িক রং দেওয়া ঠিক নয়।”

Sukanta Majumdar Leads BJP Protest Over Krishnanagar Police Misconduct

আরও পড়ুনঃ তৃণমূলের মদতে রাতের আঁধারে ভোটার তালিকায় ঢোকানো হচ্ছে ‘বাংলাদেশি ভোটার’? জয়নগরের ভিডিও সামনে এনে বিস্ফোরক শুভেন্দু

যদিও বিজেপি-র দাবি, পুজোর সময় পুলিশ অযথা হিন্দুদের উপর অত্যাচার চালিয়েছে। সেই কারণেই সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumdar) নেতৃত্বে আজ বিজেপির কর্মীরা থানা ঘেরাও অভিযান করেছে। তবে, জেলা পুলিশের বক্তব্য, শান্তি রক্ষার স্বার্থেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে এখন পুলিশ মোতায়েন রয়েছে পুরো এলাকায়।