বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: ম্যাচের আগেই সুনীল ছেত্রী (Sunil Chhetri) জানিয়ে দিয়েছিলেন যে তিনি চলতি বছরের লিগ চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে মাঠে নামার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন। চলতি মরশুমে তিনি একেবারেই ভালো ছন্দে ছিলেন না। সম্প্রতি বড় বিতর্কে চড়িয়েছিলেন সেমিফাইনালে কেরালা ব্লাস্টার্সের (Kerala Blastars) বিরুদ্ধে ফ্রি-কিক থেকে বিতর্কিত ভাবে গোল করে। আজ ভারত এবং বেঙ্গালুরু এফসি-র (Bengaluru FC) অধিনায়কের কাছে ছিল জবাব দেওয়ার দিন। আজকের গুরুত্বপূর্ণ দিনে তার গোলেই শেষ পর্যন্ত। শক্তিশালী মুম্বাইকে (Mumbai City FC) হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছনোর দিকে অনেকটাই এগিয়ে গেল বেঙ্গালুরু।
চলতি মরশুমে দুর্দান্ত ছন্দে ছিল মুম্বাই সিটি এফসি। লিগের কুড়িটি ম্যাচে তারা ১৪ থেকে জয় পেয়েছিল এবং ৪ টি ম্যাচ ড্র করেছিল। হারের মুখ দেখতে হয়েছিল মাত্র ২টি ম্যাচে। গত তিন মরশুমে দুইবার লিগ শিল্ড জিতেছে তারা। তাদেরকে রুখে দিয়ে যে বেঙ্গালুরু সেমিফাইনালে মুম্বাইকে কোনও পর্বে হারাতে পারবে এমনটা অনেকেই প্রত্যাশা করেননি।
বেঙ্গালুরু চলতি আইএসএল মরশুমের শুরুর দিকে ছিল অত্যন্ত খারাপ ছন্দে। যদিও আই এস এল শুরুর আগে ডুরান্ড কাপের ফাইনালে তারা এই মুম্বাই সিটি এফসিতেই ২-১ ফলে হারিয়ে ট্রফি ঘরে তুলেছিল। কিন্তু লীগ শুরু হওয়ার পর তাদের অবস্থা একসময় এতটাই খারাপ ছিল যে ইস্টবেঙ্গল এর চেয়েও নিচে ছিল তারা পয়েন্টস টেবিলে। কিন্তু মরশুমের মাঝপথে তারা অসাধারণ ভাবে ঘুরে দাঁড়ায় এবং ২০২৩ সাল শুরু হওয়ার পর টানা আটটি ম্যাচে জিতে তারা পয়েন্ট টেবিলে চার নম্বরে উঠে আসে। মজার ব্যাপার হল গত বছরের শেষ দিকে অত্যন্ত বাজে ছন্দে থাকা সুনীল ছেত্রীরা চলতি বছরে একটিও ম্যাচে হারেননি।
সুনীল ছেত্রী যে আবার এমন নায়ক হয়ে উঠতে পারবেন সেটা অনেকেই ভাবেননি। চলতি মরশুমে তিনি এতটাই খারাপ ফর্মে ছিলেন যে নতুন বছর থেকে তাকে একজন পরিবর্তন ফুটবলার হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে বেঙ্গালুরুর কোচ সাইমন গ্রেসন। এমনকি আজকের ম্যাচেও তিনি মাঠে এসেছিলেন ৫৮ মিনিটের পর. আজকের গোলটি মিলিয়ে চলতি আইএসএল মরশুমে তিনি মাত্র ৪টি গোল করতে পেরেছেন। কিন্তু পরপর দুই ম্যাচে জ্বলে ওঠে তিনি বুঝিয়ে দিলেন বড় মঞ্চে কিভাবে পারফরম্যান্স করতে হয় সেটা তার ভালোই জানা আছে।
পরিসংখ্যানের দিক দিয়ে দেখতে গেলে দেখা যাবে আজ ম্যাচে বলের দখল বেশিরভাগ সময়েই ছিল মুম্বাই সিটি এফসির দখলে। কিন্তু বেঙ্গালুরুর জমাট ডিফেন্সকে ভেঙে তারা গোলরক্ষক গুরপ্রীতের বেশি পরীক্ষা নিতে পারেননি। অপরদিকে বলের দখল কম থাকলেও সুযোগ বেশি তৈরি করেছিল বেঙ্গালুরু। শেষপর্যন্ত ৭৮ মিনিটে নাওরেম রোশন সিং-এর কর্ণারে মাথা ঠেকিয়ে দলকে এগিয়ে দেন সুনীল। বাকি সময়ে চেষ্টা করেও আর গোল মুখ খুলতে পারেনি মুম্বাই। তবে সুনীলদের আসল পরীক্ষা হবে দ্বিতীয় পর্বের খেলায় যখন মুম্বাই নিজেদের সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাবে।