বাংলাহান্ট ডেস্ক: একটা সময় বলিউডে রীতিমতো জনপ্রিয় ছিলেন সুনীল শেট্টি (sunil shetty)। অ্যাকশন হিরোর ভূমিকায় প্রায়ই দেখা গিয়েছে তাঁকে। কিন্তু বাস্তব জীবনে তাঁকে হিরোর ভূমিকায় দেখেছেন কোনওদিন? আসলেই বাস্তব জীবনে হিরোর মতো কাজ করেছিলেন অভিনেতা। একটি নারী পাচার চক্রের শিকার ১২৮ জন মহিলাকে উদ্ধারের পর নিজেদের বাড়ি পাঠানোর বন্দোবস্ত করেছিলেন তিনি।
এই ঘটনা ১৯৯৬ সালের। এতদিন বিষয়টা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেই ছিলেন সুনীল শেট্টি। কিন্তু ওই ভয়াবহ ঘটনার শিকার চারিমায়া তামাং নামে এক মহিলা প্রসঙ্গটা নিয়ে মুখ খোলেন। আর তাতেই সুনীলের এই মহানুভবতার কথা প্রকাশ্যে আসে। এক সাক্ষাৎকারে চারিমায়া জানান, দেশের সরকারও যখন দ্বন্দ্বে পড়েছিল যে এই বিষয়টা নিয়ে কিভাবে এগোনো যায় তখন সুনীল শেট্টিই এগিয়ে আসেন তাঁদের উদ্ধারে।
জানা যায় ওই সালের ৫ ফেব্রুয়ারি কামাতাপুরা যৌনপল্লীতে অভিযান চালিয়ে ৪৫৬ জন মহিলাকে উদ্ধার করে মুম্বই পুলিস। ১৪ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যের এই সব মহিলাই নারী পাচার চক্রের শিকার হয়েছিলেন। এদের মধ্যে ১২৮ জন মহিলা ছিলেন নেপালের বাসিন্দা। কিন্তু তাঁদের নাগরিকত্বের কোনও প্রমাণ না থাকায় নেপাল সরকারও তাঁদের ফেরাতে দ্বিধাগ্রস্ত ছিল।
এমতাবস্থায় ঘটনা শুনে এগিয়ে আসেন সুনীল শেট্টি। বিমানের ব্যবস্থা করে ওই ১২৮ জন মহিলার বাড়ি ফেরার সব বন্দোবস্ত করে দেন তিনি। এই অপারেশনের যাবতীয় কৃতিত্ব মুম্বই পুলিস ও ‘সেভ দ্য চিলদ্রেন’ এনজিওর প্রতিষ্ঠাতা নিজের শাশুড়ি বিপুলা কাদরিকে দেন সুনীল।
এই প্রসঙ্গে সম্প্রতি অভিনেতা জানান, নিজেদের কোনও কৃতিত্ব দিতে চাননি তাঁরা। উপরন্তু ওই মহিলাদের গতিবিধি লুকিয়ে রাখারও দরকার ছিল। এই ঘটনা সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসতেই বহু তারকা সুনীল শেট্টির প্রশংসা করে টুইট করেন।
Met @SunielVShetty anna so many times but never he had mentioned about this…this is what i call it class love you anna huge respect for you https://t.co/KN22jM1IGL
— Official JayBhanushaali (@imjaybhanushali) May 11, 2020
এই ঘটনার শিকার চারিমায়া তামাং এখন শক্তি সমূহ নামে নেপালের একটি এনজিওর প্রতিষ্ঠাতা। নারী পাচার ও মহিলাদের উন্নতি নিয়ছ কাজ করে এই প্রতিষ্ঠান। দক্ষিণ এশীয় দেশগুলির মধ্যে নারী পাচারে নেপালের স্থান সবার ওপরে। সেখানে শক্তি সমূহের মতো প্রতিষ্ঠান প্রতিদিন একটু একটু করে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে। প্রথমে ১৫ জন মহিলাকে দিয়ে শুরু হয়েছিল এই প্রতিষ্ঠান। এখন ১০০ জন উদ্ধারকৃত মহিলা রয়েছেন এখানে। ২০১৩ সালে রমন ম্যাগসেসাই পুরস্কারও পেয়েছে এই প্রতিষ্ঠান।