বাংলা হান্ট ডেস্কঃ হাইকোর্টের একক বেঞ্চ, ডিভিশন বেঞ্চের পর এবার সুপ্রিম কোর্টেও ব্যাকফুটে রাজ্য। শিক্ষামিত্রদের মামলায় হাইকোর্টের রায়ে হস্তক্ষেপ করল না শীর্ষ আদালত। ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত কাজ করতে পারবে শিক্ষামিত্ররা (Shikshamitra)। এমনটাই রায় ছিল কলকাতা হাইকোর্টের। এর পাল্টা মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)। তবে শীর্ষ আদালতেও ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার।
হাইকোর্টের পর সুপ্রিম কোর্টেও একই রায় (Supreme Court)
উল্লেখ্য, এর আগে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চে এই সংক্রান্ত মামলা উঠলে বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তর একক বেঞ্চের নির্দেশই বহাল রেখেছিল ডিভিশন বেঞ্চ। এবার সেই নির্দেশ বহাল সুপ্রিম কোর্টেও। এদিন বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং সতীশচন্দ্র শর্মার বেঞ্চেরও স্পষ্ট নির্দেশ, শিক্ষামিত্ররা ৬০ বছর পর্যন্ত চাকরি করতে পারবেন।
আদালতের তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ, দেশে শিক্ষকদের যথাযোগ্য সম্মান দেওয়া হয় না, বরং তারা অবহেলার শিকার। আদালতের প্রশ্ন, কেউ যদি টানা ২১ বছর কাজ করেন, সেক্ষেত্রেও কেন তাঁকে স্থায়ী করা হবে না? শেষে শিক্ষামিত্রদের পক্ষেই রায় দেয় আদালত।
২০০৪ সালে সর্বশিক্ষা অভিযানের আওতায় পিছিয়ে পড়া, স্কুলছুট ছাত্রছাত্রীদের পড়ানোর দায়িত্ব দিতে শিক্ষামিত্র নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেই সময় তাদের মাসিক বেতন ছিল ২৪০০ টাকা। এরপর নয়া সরকার আসতে ২০১৩ সাল থেকে শিক্ষামিত্রদের পদ পরিবর্তন করে রাজ্য। শিক্ষামিত্র থেকে সরকার তাদের স্বেচ্ছাসেবক করে দেন। পরের বছর অর্থাৎ ২০১৪-র এপ্রিল মাস থেকে শিক্ষামিত্রদের ভাতাও বন্ধ করে দেয় রাজ্য (Government of West Bengal)।
এখানেই শেষ নয়, নির্দেশিকা জারি করে রাজ্য সরকার তাদের ৬০ বছরের আগেই চাকরি থেকে অবসরের সিদ্ধান্তের কথা জানায়। এই নিয়ে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। রাজ্যের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়। সেই সংক্রান্ত মামলাতেই ২০২৩ সালের কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সামন্তের একক বেঞ্চ রায় দেয়, বকেয়া বেতন মিটিয়ে সবাইকে কাজে ফেরাতে হবে।
আরও পড়ুন: কাছেই রাখুন ছাতা! কিছুক্ষণেই ভারী বৃষ্টি শুরু দক্ষিণবঙ্গের ৫ জেলায়, কলকাতার কি হবে?
এদিকে সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে দায়ের হয় মামলা। সেই মামলাতেও শিক্ষামিত্রদের পক্ষেই রায় যায়। কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছিল ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত কাজ করতে পারবেন শিক্ষামিত্ররা। তবে মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। এবার সুপ্রিম কোর্টও জানাল তাদের সেই অধিকার আছে। অর্থাৎ আদালতের নির্দেশের পর শিক্ষামিত্রদের ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত কাজ করার ক্ষেত্রে কোনও বাধা থাকল না। মিডিয়া রিপোর্ট বলছে, রাজ্যে মোট ৩ হাজার ৩৩৭ জন শিক্ষাবন্ধু রয়েছেন।