বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ভারতের বিচারব্যবস্থায় এক নজিরবিহীন রায় ঘোষণা করল দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে এক নাবালিকা ধর্ষণ মামলার দোষী ব্যক্তির সাজা সম্পূর্ণ বাতিল করল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও অগাস্টিন জর্জ মাসিহের বেঞ্চ জানায়, এই মামলার ‘অদ্ভুত বাস্তব পরিস্থিতি’ বিচার করে মানবিক ও সহানুভূতির ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আদালতের জানিয়েছে, “এই অপরাধ লালসা নয়, ভালবাসার ফল।”
ঠিক কী ঘটেছিল?
ঘটনা সূত্রে খবর, কয়েক বছর আগের অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পকসো আইনের ধারা ৬ অনুযায়ী ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৬ ধারায় ৫ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ ছিল, তিনি এক নাবালিকাকে অপহরণ করে যৌন নির্যাতন করেছিলেন। কিন্তু আপিলের শুনানির সময় চিত্র সম্পূর্ণ পাল্টে যায়।
কেন সাজা বাতিল করল আদালত (Supreme Court)?
আদালতে (Supreme Court) জমা নথি অনুযায়ী, অভিযুক্ত ও ওই তরুণী, দু’জনেই বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্ক। ২০২১ সালের মে মাসে তাঁরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এখন তাঁদের এক বছর বয়সি সন্তান রয়েছে এবং তাঁরা একসঙ্গে শান্তিপূর্ণ পারিবারিক জীবনযাপন করছেন। তরুণী নিজের হলফনামায় জানান, স্বামীর সঙ্গে শান্তিপূর্ণ ও স্বাভাবিক জীবন কাটাতে চান, এবং তাঁর বিরুদ্ধে আর কোনও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হোক, তা তিনি চান না। এর ভিত্তিতেই সাজা বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট।
সাজা বাতিল করে আদালত (Supreme Court) জানায়, অভিযুক্তকে জেলে পাঠানো হলে শুধু সংসার নয়, স্ত্রী, সন্তান ও সমাজের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাই সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করে বিশেষ ক্ষমতায় সাজা সম্পূর্ণভাবে বাতিল করা হয়। তবে সঙ্গে সতর্ক বার্তাও দিয়েছে বেঞ্চ। আদালত কঠোরভাবে জানিয়েছে, অভিযুক্ত কোনও অবস্থাতেই স্ত্রী ও সন্তানকে পরিত্যাগ করতে পারবেন না। তাঁদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা সারা জীবনের জন্য নিশ্চিত করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ SIR-এর বিরোধিতায় পথে মমতা-অভিষেক! ৪ নভেম্বর ধর্মতলা থেকে জোড়াসাঁকো পর্যন্ত মহামিছিলের ডাক
সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) এই রায় নিয়ে আইনি মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে আদালত নিজেই স্পষ্ট করে দিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত কোনও ‘নজির’ বা ‘দৃষ্টান্ত’ নয়। আদালতের জানিয়েছে, “এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে নির্দিষ্ট ও অনন্য পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে নেওয়া হয়েছে।”













