বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০২২ সালের ২২ জুলাই রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee) গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। তারপর থেকেই প্রাক্তন মন্ত্রীর ঠিকানা প্রেসিডেন্সি জেল। একই মামলায় পরে পার্থকে গ্রেফতার করে সিবিআই-ও। ইডি মামলায় জামিন মিললেও সিবিআই এর মামলায় এখনও জামিন অধরা পার্থর।
পিছিয়ে গেল পার্থের জামিন মামলার শুনানি | Partha Chatterjee
সিবিআই এর মামলায় জামিন চেয়ে এর আগে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। তবে উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন মঞ্জুর না হওয়ায় সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) দ্বারস্থ হন পার্থ। বৃহস্পতিবার পার্থর জামিন মামলা শুনানির জন্য ওঠে বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে। যদিও বিচারপতি বাগচী জানিয়ে দেন, এই মামলাটি তিনি শুনবেন না।
এদিন বিচারপতি কান্ত জানান, পার্থর জামিন মামলার শুনানি অন্য কোনও বেঞ্চে হবে। বিচারপতি বাগচী ওই মামলাটি শুনতে রাজি না-হওয়ায় বেঞ্চ বদল হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, একই বেঞ্চের অন্তর্ভুক্ত কোনও এক জন বিচারপতি কোনো নির্দিষ্ট মামলা শুনতে রাজি না থাকলে সেই মামলা নতুন বেঞ্চে যায়। পার্থর জামিন মামলার ক্ষেত্রেও তাই হবে।
কেন হঠাৎ মামলা ছাড়লেন বিচারপতি?
এই মামলার সঙ্গে যুক্ত আইনজীবীদের ধারণা, পূর্বে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি থাকাকালীন পার্থ চট্টোপাধ্যায়দের জামিনের মামলা শুনেছিলেন জাস্টিস বাগচী। তাই এবারে তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠতে পারে এমনটা ভেবেই তিনি মামলা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন।
প্রসঙ্গত, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০২২ সালে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee) গ্রেফতার করে ইডি। সেবছরই জুলাই মাসে পার্থর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের টালিগঞ্জ ও বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে নগদ প্রায় ৫০ কোটি টাকা সহ কেজি কেজি সোনার গয়না উদ্ধার করে তদন্তকারী সংস্থা। কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার পাহাড় উদ্ধারের পর গ্রেফতার করা হয় অর্পিতাকেও।
জানিয়ে রাখি, নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ইডির মামলা থেকে ইতিমধ্যে জামিন পেয়েছেন পার্থ। তবে সিবিআইয়ের মামলায় এখনও জামিন অধরা। ওই মামলায় জামিন চেয়ে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই অর্পিতা মুখোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্য সহ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একে একে সকলেই জামিন পেয়েছেন। তবে পার্থর বিপদ বাড়িয়ে নিয়োগ মামলায় রাজসাক্ষী হয়েছেন তারই জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য। রেকর্ড করা হয়েছে তার বয়ান।
এদিকে এমন একটি সময় পার্থর জামিনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে যখন নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে উত্তাল গোটা রাজ্য। সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে এসএসসির ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যার জেরে প্রায় ২৬ হাজার চাকরিহারা। হকের চাকরি ফেরানোর দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে যোগ্যরা। এই পরিস্থিতিতে পার্থ জামিন পান কিনা, সেটাই দেখার।